সুদ ও ঋণের কারণে মানুষ আজ জর্জরিতঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    229

    আমারসিলেট 24ডটকম,০৯অক্টোবর :প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্রামের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ও তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে দেশে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি বলেন, পল্লীর জনগণ যাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে সে লক্ষে আমরা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করবো। তবে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশনের সম্মতি প্রয়োজন হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন পথের দিশা দিয়েছে। একইভাবে পল্লীর জনগণের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হবে, যাতে করে ব্যাংকের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেতে না পারে। আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লীর জনগণের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং উদ্বোধন এবং জাতীয় পর্যায়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভাষণকালে একথা বলেন।
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অধিক সুদের কারণে পল্লীর গরীব জনগণ এর আগে বিভিন্ন ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে গরীব জনগণ কোন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারছে না। তাদেরকে আবারও অন্য সংস্থা থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। এর ফলে তারা ঋণ ও এর সুদে জর্জরিত হয়ে পড়ছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে চায় এবং এজন্য ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের কথা বলা হচ্ছে যেন পল্লীর মানুষ তাদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারে।
    দারিদ্র্য আরও হ্রাস করাই হচ্ছে তার সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ কর্তৃপক্ষকে রাতারাতি বড় লোক হওয়ার প্রতিযোগিতার পরিবর্তে এই প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আপনাদেরকে আরও যত্নের সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, গ্রামীন এলাকার ৯ লাখেরও বেশি পরিবার ইতমধ্যে ‘অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম’-এর আওতায় এসেছে। আর অনলাইনের মাধ্যমে ৭০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আশা করি, আগামি ডিসেম্বর নাগাদ দেশের ৬৪ টি জেলার ৪৮৫ টি উপজেলায় আমরা অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করতে পারব।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনজিও-গুলোর কাছ থেকে ঋন হিসেবে নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক মানুষ কপর্দকহীন হচ্ছে। আমরা গ্রামের মানুষকে এ শোষন থেকে মুক্ত করতে চাই। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাগ্রহণের পর দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ গ্রহণ করে। কিন্তু বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের অন্যান্য জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের ন্যায় এ প্রকল্পটিও বন্ধ করে দেয়। তিনি কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন সেক্টরে তাঁর সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন।
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গৃহীত ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ১২টি ক্যাটাগরিতে ১৯ জনকে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেন। এসব পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ১০ হাজার টাকা, একটি ক্রেস্ট ও সনদ। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন উপকারভোগী, ম্যানেজার, মাঠ অর্গানাইজার, উপজেলা সমন্বয়কারী, উপজেলা গ্রাম উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা সমন্বয়কারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসকগণ।
    এর আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং উদ্বোধন করেন। অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম বিষয়েও তাকে অবহিত করা হয়। তিনি বিআইসিসি প্রাঙ্গনে আয়োজিত একটি উঠান বৈঠকেও অংশ নেন। তিনি উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।