সিলেট বিভাগের গর্ব “আঁচল” ফিমেইল ব্যান্ড

    0
    393

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৬আগস্ট,মোঃ জহিরুল ইসলাম: পৃথিবীর দৃষ্টান্তে যারাই মহান বা ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন, তাদের ডাইরীতে চোখ বুলালে দেখা যায় সবারই উঠে আসার গল্পটা অনেক কষ্টের । যা অল্প কয়েকদিনে অর্জন হয়নি । সব কিছুই আস্তে আস্তে পর্যায়ক্রমে সম্ভব হয়েছে । তবে ইতিহাস বলে প্রায় অধিকাংশ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান উঠে এসেছে দরিদ্র পরিবার, গ্রাম-পল্লি, অজো-পাড়া গা কিংবা মফস্বল শহর থেকে । তবে এসব উঠে আসার পিছনে কারও না কারও হাত থাকে । যার সংস্পর্শে প্রতিভাটা সঠিক জায়গায় বিকশিত হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।

    প্রকৃতপক্ষে প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে না পারলে প্রতিভার বিকাশ সম্ভব না । তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে অনেক প্রতিভায় মফস্বলের অগোচরেই থেকে যায় । তেমনি একটি দৃষ্টান্ত মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাঁচ তরুনীর সমন্বয়ে গঠিত আঁচল ব্যান্ড । সমাজের সকল বাধাকে ডিঙ্গিয়ে এই পাঁচ তরুনী দাড় করিয়েছে এই আঁচলকে । যেখানে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী নির্যাতন ক্রমশ বেড়েই চলেছে, অবুঝ শিশু হচ্ছে পুরুষ শাষিত সমাজের ধর্ষনের স্বীকার । সেখানে পাঁচ তরুনীর সৃষ্ট এই “আঁচল” ব্যান্ড আসলেই সাহসীকতা ও দৃষ্চান্ত স্বরুপ।
    কিন্তু সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করলেও সুযোগের অভাবে নিজেদের একটি প্লাটফর্মে তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে এই তরুনীরা । এর প্রধান কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায় এদের সকলেই মফস্বল শহওে বেড়ে উঠছে।

    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুব কম সংখ্যক প্রতিভাবান মফস্বল থেকে তাদেও প্রতিভা বিকাশে সফল হয়েছেন । মফস্বল শহর থেকে প্রতিভা বিকাশে তেমন একটা সুযোগ পাওয়া যায়না । তাছাড়া মফস্বল শহর থেকে কাউকে তেমন মূল্যায়নও করা হয়না । সেই সুবাদে প্রতিভা থাকা স্বত্তেও পর্যাপ্ত সুযোগের অভাবে তুলে ধরতে পারছেনা পাঁচ তরুনীর সৃষ্টি এই আঁচল ব্যান্ড ।

    বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়টি ব্যান্ড আছে তাদেও মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ব্যান্ড আছে যাদের ব্যান্ডে শুধু ভোকাল হিসেবে আছে মেয়ে আর ব্যান্ডের বাকি সব সদস্যরা ছেলে । অথচ মফস্বল শহর পর্যটন নগরী চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গলের পাঁচ তরুনীর তৈরী এই ব্যান্ড এর শুধু যে ভোকাল মেয়ে তা কিন্তু নয় । এদের বাকি সব ব্যান্ড মেম্বাররাও মেয়ে । এর আগে ২০০৮ সালে এই শহরের সাহসী পাঁচ তরুনী মিলে ‘টুইঙ্কেল’ নামে একই ধারার একটি ব্যান্ড তৈরী করেছিল ।কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় অবহেলা আর পর্যাপ্ত সুযোগের অপেক্ষায় ইরিনা, অদিতি, পিংকি, সুস্মিতার তৈরি সেই টুইঙ্কেল ব্যান্ডটিও সফলতার দার প্রান্তে না পৌছে সবার অজান্তেই ঝরে পড়ে।
    অবাক হওয়ার বিষয় টুইঙ্কেলের মত বর্তমানের এই ‘আঁচল’ ব্যান্ডের সকল বাদ্যযন্ত্র মেয়েরাই বাজিয়ে এই শহরের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ।প্রমান করে দিয়েছে, মেয়েরা আজ পিছিয়ে নেই । তারাও ছেলেদের সমতুল্য । কোন অংশে আজ তারা ছেলের থেকে পিছিয়ে নেই । যদিও তারা ছেলেদের থেকে কোন অংশে কম নয় , কিন্তু পুরুষ শাষিত সমাজ আজ মফস্বল শহরের বন্দি জীবন তাদেরকে সঠিক জায়গায় পৌছাতে বাধাগ্রস্থ্য করছে । যার কারনে বাংলাদেশের ইতিহাসে এইসব তরুনীর “আঁচল” আজও আলোর মুখ দেখতে পারছেনা।

    আলোর দিশারী মৌমিতা, নন্দিতা, পালকি,সিমু ও পূরবী এই পাঁচ তরুনীর “আঁচল” আজও চার দেয়ালের অন্ধকারে বন্দি । এদের চাওয়া একটাই, কারও হাতের ছোঁয়ায় যেন বাংলাদেশে মিউজিক জগতে এই পাঁচ তরুনীর ঠাঁই হয় । এই জগতের পথ প্রদর্শকরা যেন এই পাঁচ তরুনীর অন্ধকার জগতে আলোর মশাল জ্বালিয়ে দিয়ে এদেও প্রতিভা বিকাশের সুযোহ কওে দেন । “আঁচল”কে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশের সংগীত জগতের পথ প্রদর্শকরা যেন এই পাঁচ তরুনীর “আঁচল” ্্এর পথ চলার সঙ্গী হয়ে এদের প্রতিভা বিকাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ।