সিলেটে পাহাড়িদের আরেকটি অর্থকরী চাষের নাম “পানচাষ”

    0
    327

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১জানুয়ারী,জহিরুল ইসলাম সোহেলঃ সিলেটে অর্থকরী ফসলের মধ্যে চা’য়ের পরেই রয়েছে খাসিয়া পান। অতিথি আপ্যায়নে পান সুপারি অতি আবশ্যক উপকরণ পান-সুপারি খাওয়া  বাঙ্গালী অবাঙ্গালীদের দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি। প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে লালন করে চলছে সিলেট অঞ্চলের  মানুষ। শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের যে কোন কারো বাড়ীতে অতিথি আপ্যায়নে পান সুপারি অতি আবশ্যক উপকরণ। কিন্তু এই পানের মাত্রাতিরিক্ত দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ। পানের বাজারে দাম নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা । বর্তমানে পানের দাম এমন আকাশ চুম্বী যে, কিছুদিন আগে যে পানের বিড়া ছিল ৯০ টাকা বর্তমানে সেই বিড়ার দাম ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

    বাজারজাতের উপযুক্ত পান
    বাজারজাতের উপযুক্ত পান

    পান খেয়ে অভ্যস্ত, কিন্ত সম্প্রতি অতিরিক্ত দাম হওয়ায় অনেকেই কিনছেন বাংলা পান ও খাসিয়া রাঙ্গা পান (লাল পান)।

    জেলার পুটি ছড়া পান পুঞ্জির বনি পাস, জনি আংলা, রুবেল আইগান জানান পান কম উত্তোলন হওয়ায় পানের দাম বেড়ে গেছে। আগে ২ টাকায় এক গুছি পান পাওয়া যেত এখন এক গুছি পানের দাম ৩০ টাকা। অতিরিক্ত দাম থাকায় অনেকেই খাচ্ছেন না মজাদার প্রিয় খাসিয়া পান।

    পান চাষিরা পান তুলে বাজারজাতের জন্যে বিরা বাঁধছে
    পান চাষিরা পান তুলে বাজারজাতের জন্যে বিরা বাঁধছে

    প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা একটি গাছ থেকে মাসে হাজার টাকার উপরে পান বিক্রি করার কথা থাকলেও অনাবৃষ্টির ফলে এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে পানের দাম হয়ে উঠেছে আকাশ ছোঁয়া। খরায় পানের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে তেমন একটা পান উঠছে না। পান চাষীরাও বাজারে আগের চেয়ে অর্ধেক পান সরবরাহ দিচ্ছেন। তাও আবার চড়া দামে। বাজারে যেগুলো উঠছে সেগুলোর কদরও আগের চেয়ে অনেক বেশী। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে উপর্যুপুরি দীর্ঘ খরা মৌসুমে কারণে পাণ পরিবহণে সৃষ্ট সংকটও এই দাম বাড়ার পেছনে আরো একটি কারণ বলে পান ব্যবসায়ীরা জানান।

    বৃহত্তর সিলেটের ৯৫টি খাসিয়া পুঞ্জির মধ্যে মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ৩৯টি পুঞ্জি রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখানকার পুঞ্জিগুলোতে পানের চাষ করা হয়। সিলেট বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন অ লে খাসিয়া পানের চাহিদা ব্যাপক রয়েছে । লন্ডন, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য সহ অন্যান্য দেশেও পান রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি বৃষ্টির অভাবে পান চাষে ব্যাঘাত ঘটছে। গত কয়েক মাসের প্রচন্ড খরায় পান উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পান গাছ থেকে পান ঝরে যাচ্ছে। দেখতে গুল্ম জাতীয় পান গাছগুলোর অধিকাংশ লালচে হয়ে গেছে। পান গাছ মরে গিয়ে দেখা দিচ্ছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব। পান চাষ পাহাড়ি জনগোষ্টির একমাত্র আয়ের উৎস।। গত বুধবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারে বৃষ্টি হওয়াতে মন খোলে একটু হাসি দিল পান চাষিরা আগামী জুন থেকে জুলাই মাস খাসিয়া পানের চারা রোপণ করার উপযুক্ত সময়। কিন্তু দীর্ঘ খরায় চারা পান গাছ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।তাই সরকারী সাহায্য কামনা করেন পান চাষিরা ।

    জানা গেছে আগে বিভিন্ন সাইজের পান বিড়া (৮০ টি পানে এক বিড়া) ২০ টাকা, ৪০ টাকা, ৮০ টাকা ও ৯০ টাকা হারে বিক্রি হতো। এখন ২০ টাকার পানের বিড়া ৮০ টাকা, ৪০ টাকার পানের বিড়া ১২০ টাকা, ৮০ টাকার পানের বিড়া ১৫০ টাকা ও ৯০ টাকার পানের বিড়া ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ক্রেতাদের পাশাপাশি পান বিক্রেতারাও তাদের ব্যবসা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। কিন্ত সম্প্রতি অতিরিক্ত পানের দাম হওয়ায় অনেকেই কিনছেন বাংলা পান ও খাসিয়া রাঙ্গা পান (লাল পান)। পুটি ছড়া পান পুঞ্জির বনি পাস, জনি আংলা, রুবেল আইগান জানান পান কম উত্তোলন হওয়ায় পানের দাম বেড়ে গেছে। আগে ২ টাকায় এক গুছি পান পাওয়া যেত এখন এক গুছি পানের দাম ৩০ টাকা। অতিরিক্ত দাম থাকায় অনেকেই খাচ্ছেন না সিলেটের মজাদার এই প্রিয় খাসিয়া পান।

    তবে পাহাড়ে বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় পান চাষে সম্পূর্ণ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। শ্রীমঙ্গলে লাইয়াচড়ার খাসিয়া পুঞ্জির পান চাষি সাজু জানান সরকারী ভাবে সাহায্য সহযোগীতা পেলে বৃহত্তর সিলেটে পান চাষিরা পান চাষের আরো উৎসাহিত হবে মনে করেন । সিলেট অ লে খাসিয়া পুঞ্জির পান সারা দেশে বেশ সুনাম রয়েছে ব্যাপক। তবে ভবিষ্যতে সরকার থেকে কোন সাহায্য পায় তাহলে পান চাষিরা, পান রপ্তানি করে আরো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হবে বলে মনে করেন ।