সিলেটে অপবাদ দিয়ে ১৩বছরের কিশোরকে হত্যা ! কি পরিকল্পিত?

    0
    212
    নির্যাতন করে হত্যাকারীদের একজন  মুহিত
    নির্যাতন করে হত্যাকারীদের একজন মুহিত

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৩জুলাইঃ সিলেটের কুমারগাঁও এলাকায় চোরের অপবাদ দিয়ে  কিশোর শেখ সামিউল আলম রাজনকে (১৩) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক মুহিত আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। সিলেটের মহানগর হাকিম আদালত-২ এর বিচারক ফারহানা ইয়াসমিন আজ সোমবার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন  রবিবার মুহিতকে ৭ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছিলেন।

    বুধবার সকালে চোরের অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের কিশোর  রাজনকে। শুধু তাই নয়, নির্যাতনকারীরাই শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ করে  ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
    কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজে ওই হত্যাকাণ্ডের পর একটি মাইক্রোবাসে তুলে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলমকে (২২) ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।
    পরে জালালাবাদ থানা পুলিশ একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যাতে মুহিত, তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়।
    এখন পর্যন্ত মুহিত ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ একটি দল কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ।

    অপরদিকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শরীরের ৬৪ স্থানের আঘাত থেকে সৃষ্ট রক্তক্ষরণে সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের (১৩) মৃত্যু হয়েছে বলে সোমবার প্রকাশিত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

    মামলার সদ্য নিযুক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিলেট থানার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে শিশু রাজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পান তিনি। সেখানে রাজনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৬৪টি আঘাতের কথা উল্লেখ আছে। সেই আঘাতের ফলে সৃষ্ট রক্ষক্ষরণ থেকে রাজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
    নিহত কিশোরের পরিবারের অভিযোগ ,পুলিশের সহায়তায় ২ নং আসামি কামরুল  ইসলাম সৌদিতে পালিয়ে গেছে। এদিকে রাজনের খুনীদের ধরতে পুলিশকে ১২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে এলাকাবাসী।তবে এলাকাবাসির কেহ কেহ প্রশ্ন তুলেছেন,চোর অপবাদ দিয়ে ১৩ বছরের ওই কিশোরকে হত্যা কি পরিকল্পিত নয় ?

    উল্লেখ্য,নিহত  শেখ সামিউল আলম রাজনের বাড়ি সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান প্রাইভেটকারচালক। তার দুই ছেলের মধ্যে সামিউল বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা সামিউল সবজি বিক্রি করে বাবার সংসারে সহযোগিতা করতেন।