সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ভিলেজারের নেতৃত্বে গাছ চুরির অভিযোগ

    0
    350

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৪ফেব্রুয়ারী,বিশেষ সংবাদ দাতাঃ হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় সাতছড়িতে অবস্থিত জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমের প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মুখে। বন রক্ষার কাজে নিয়োজিত ভিলেজারের নেতৃত্বে সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে গাছ চোরেরা। প্রতিদিন অবাধে চুরি হচ্ছে মূল্যবান সেগুন, আগরসহ বিভিন প্রজাতির গাছ।

    গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাত আনুমানিক ৫টার দিকে চুরির উদ্দেশ্যে ৭টি সেগুন গাছ কেটে ফেলে চোরেরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাছ কাটার খবর পেয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিএমসি) এর সদস্য হাবিলদার আশরাফ আলী, রমজান আলী, লুৎফুর আলমের নেতৃত্বে ৭/৮ জন ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ চোরদের আটক করেন। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছ চুরির পাহারায় থাকা ভিলেজার মালেক ও মন্নর আলী পালিয়ে গেলেও নারায়ন, রাজেনসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। তাৎক্ষনিক জিজ্ঞাসাবাদে রামগঙ্গা ডিভিশনের নারায়ন ও রাজেন জানায়, ভিলেজার মালেক ও মন্নর আলী গাছ কাটানোর জন্য শ্রমিক হিসাবে আমাদের নিয়োজিত করে, এরা এ ব্যাপারে আগে কিছু জানত না।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতছড়ির ভিলেজার মালেক ও মন্নর আলী দীর্ঘদিন ধরে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ চুরির সাথে জড়িত। মূল্যবান গাছ পাচারের অর্থে ইতোমধ্যে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন উক্ত ভিলেজাররা। তারা আশেপাশের বাগানগুলো থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে প্রতিদিন ভোর রাতে নির্বিঘেœ কাঁটছে মূল্যবান গাছগুলো। খবর পেয়ে বন বিট কর্মকর্তা এস.এম মাসুদুর রহমান ও অন্যান্য বনপ্রহরীরা তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। নিরীহ প্রকৃতির সাধারন শ্রমজীবি হওয়ায় এক পর্যায়ে বিট কর্মকর্তা এস.এম মাসুদুর রহমানের সুপারিশে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয়।

    সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল কাঁটা ৭টি গাছের গোড়াসহ পূর্বে কাটা শতশত গাছের গোড়াও রয়েছে। গতকাল কাঁটা গাছের ৪০টি টুকরা ও গাছ কাটার করাত এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে বন প্রহরীরা। ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হাবিলদার আশরাফ আলী বলেন, এভাবে প্রতিদিন চুরি হচ্ছে শতশত মূল্যবান গাছ। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। রঘুনন্দন পাহাড়ী অঞ্চলের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গাছ কাটা ও চুরির ফলে বন্যপ্রাণী হারাচ্ছে তাদের অভয়াশ্রম।

    এ ব্যাপারে সিএমসি’র সদস্য লুৎফুর আলম ও রমজান আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, যে পর্যায়ে গাছ চুরি হচ্ছে এবং তা চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাতছড়ি গাছশূন্য হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা।