সাঈদীর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ:সুযোগ হলো রাষ্ট্রপক্ষের

    0
    238

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩১ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

    এর মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য আবেদন করার সুযোগ তৈরি হলো রাষ্ট্রপক্ষের সামনে।

    এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, “পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়টি পর্যালোচনা করে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রিভিউ করা হবে।”

    অন্যদিকে সাঈদীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পেতে আমাদের আবেদন করা আছে। কপি হাতে পেলে তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

    সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ গতবছর ১৭ সেপ্টেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় ঘোষণা করে।

    এর মধ্যে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দেন। আর বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী আসামির মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে রায় দেন।

    তবে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর মতামতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় আসে।

    বিচারকদের স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তার অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।

    আপিলের রায়ে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে হত্যা, নিপীড়ন, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরে বাধ্য করায় সাঈদীকে ‘যাবজ্জীবন’ কারাদণ্ড দেয়া হয়। যাবজ্জীবন বলতে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত’ কারাবাস বোঝাবে বলে ব্যাখ্যা দেয় আদালত।

    এছাড়া ৮ নম্বর অভিযোগের একাংশের জন্য সাঈদীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।

    এই মামলায় সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষের দুটি আপিল ছিল। আদালত উভয়টির আংশিক মঞ্জুর করেছে।

    এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর ফাঁসির রায় দিয়েছিল।

    একাত্তরে ভূমিকার কারণে ‘দেইল্যা রাজাকার’ নামে খ্যাত এই জামায়াত নেতার সাজা কমানোর আদেশ আসায় আপিলের রায়ের পর আদালতের বাইরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা  বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

    রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই জামায়াত নেতার ছেলে মাসুদ সাঈদী ও আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, তারা খালাস আশা করেছিলেন। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পেলে পুনর্বিবেচনার আবেদন করবেন।

    অন্যদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বলেন, তারা প্রত্যাশিত রায় পাননি। তবে এই রায়েও ‘ধর্মীয় নেতা’ হিসাবে সাঈদীর মুখোশ খুলে গেছে।

    সর্বাশেষ গত ২৩ অগাস্ট নিজের কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ চেয়ে রিভিউ পিটিশন করা হবে।” বিডিনিউজ