সাংবাদিকের উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন

    0
    220

    আমারসিলেট24ডটকম,০২মেদৈনিক মানবকণ্ঠ ও মাইটিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়ার ওপর এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তাহিরপুরে মানববন্ধন করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সাংবাদিকরাসহ এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় উপজেলা সদরের চাল বাজারে প্রায় ঘন্টাব্যপী মানববন্ধন শেষে উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুজাহিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-অধ্যাপক আলী মর্তুজা,দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ’র জেলা প্রতিনিধি আল-হেলাল,মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি খেলু মিয়া,শীর্ষ নিউজ ও অর্থনীতি প্রতিদিন’র জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ রমজান,দৈনিক আমাদের অর্থনীতির জেলা প্রতিনিধি মৌসুমী বেগম,দৈনিক দেশেরপত্রের তাহিরপুর প্রতিনিধি সাময়ুন আহমেদ,ডাঃ সুলতান মাহমুদ,তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া, বিশ্বজিত দাস,রফিক মিয়া,শাহজাদা,সুমন মালাকার প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন-সীমান্ত সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত চাঁদাবাজ হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া কর্তৃক সাংবাদিক মোজাম্মেলের ওপর সাজানো মিথ্যা এসিড মামলা অবিলম্বে প্রত্যহার না করলে কঠোর আন্দোলনের নামা হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন-দৈনিক সমকালের তাহিরপুর প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, দৈনিক সিলেটের ডাকের প্রতিনিধি রমেন্দ্র নারায়ন বৈশাখ,দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধি আলম সাব্বির,দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিনিধি বাবরুল হাসান বাবলু,দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি কামাল হোসেন,দৈনিক ভোরের ডাক প্রতিনিধি রাজন,তাহিরপুর বাজার কমিটির সভাপতি রতন দাসসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শেষে দুপুর ২টায় সীমান্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হাবিব সারোয়ার আজাদ ও সাজ্জাদ হোসেন শাহসহ তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ওসির মাধ্যমে পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

    উল্লেখ্য,গত ২৯মার্চ রাতে তাহিরপুর উপজেলার কামড়াবন্দ গ্রামে আজাদ মিয়ার ১০বছরের শিশুপুত্র শিহাব সারোয়ার শিপু খেলনা পিস্তলের গ্যাস ম্যাচের আগুনে নিজে দগ্ধ হয়। কিন্তু এঘটনাটিকে এসিড নিক্ষেপ বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে,মামলা-মোকদ্দমার জেরে প্রতিপক্ষ সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াকে আসামী করে তাহিরপুর থানায় এসিড মামলা দায়ের করে চিহ্নিত মিথ্যা মামলার বাদী আজাদ মিয়া। কিন্তু তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা শুরু থেকেই এই ঘটনাটিকে স্বাভাবিক অগ্নিদগ্ধ বলে অবিহিত করেছেন। এবং শিশু শিহাবের সহপাটিরাসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রশাসনের লোকজনের কাছে আগুনে দগ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অথচ প্রশাসন এব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ না নিয়ে আজাদের পক্ষ নিয়ে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে।

    প্রসঙ্গত,উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের বদ মিয়ার ছেলে হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়া ও তার সহোদর সাজ্জাদ হোসেন শাহ’র কর্তৃক সীমান্তে ওপেন চাঁদাবাজি,ইভটিজিং,চোরাচালানী,মদ-গাঁজা,হেরোইন ও হুন্ডি বাণিজ্য নিয়ে সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া সংবাদ প্রকাশ করেন। একারণে গত ২০১৩সালের ৫ই মে সাংবাদিক মোজাম্মেলের কাছে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে দুই সহোদর। এঘটনার পরদিন সাংবাদিক মোজাম্মেল সংবাদ সংগ্রহের কাজে গেলে বড়ছড়া কয়লা সমিতির সামনে গেলে আজাদ ও সাজ্জাদ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা,স্বর্ণের চেইন ও নগদ টাকাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এনিয়ে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাদী হয়ে সুনামগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া আজাদ ও সাজ্জাদের সন্ত্রাসী,চোরাচালানী ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দালালির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক রাজু আহমেদ রমজানকে তারা মারধর করে। এঘটনায় সাংবাদিক রাজু তাহিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করলে,পরদিন রাজুকে উল্টো চাদাঁবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ দিয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে আজাদ মিয়া। দায়েরকৃত মামলাটি সরেজমিন তদন্তক্রমে তাহিরপুর থানার এসআই লুৎফুর রহমান গত ২০১১সালের ৩০সেপ্টেস্বর ২৯নং চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে, ২০১২সালের ২৬জানুয়ারি আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ৮নং আদেশ বলে বাদী আজাদের জিআর ৫৪/১১নং মিথ্যা মামলাটি নিস্পত্তিসহ নথিজাত করেন। একইভাবে সাংবাদিক মোজাম্মেলের ওপর দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা এসিড মামলার বাদী আজাদের ছোট ভাই সাজ্জাদ হোসেন শাহ গত ২০১০সালের ১৩নভেম্বর সাপ্তাহিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতা হাসান আল মামুনসহ ৩জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি আইনের ৪৪৮/৩৮৫/৫০৬/৩৪ধারায় তাহিরপুর থানায় মামলা নং-৬ (জিআর) ১২৪/২০১০দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামাল উদ্দিন ২৫/১২/২০১০ইং তারিখে ২৪নং চুড়ান্ত রির্পোট দাখিল করলে রির্পোট পর্যালোচনায় উক্ত মিথ্যা মামলার দায় হতে সকলকে অব্যাহতি দিয়ে গত ৯/২/২০১১ইং মামলাটি নিস্পত্তি করেন বিজ্ঞ বিচারক সৈয়দ তফাজ্জল হাসান হিরু।