সাঁওতালপল্লীতে আগুনঃদুই পুলিশ সরাসরি জড়িতঃপ্রতিবেদন

    0
    119

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৯মার্চ,ডেস্ক নিউজঃ  গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালপল্লীতে আগুন দেয়ার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য সরাসরি জড়িত বলে হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।
    প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অগ্নিসংযোগে সরাসরি জড়িত ছিলেন গাইবান্ধা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান ও জেলা পুলিশ লাইনসের কনস্টেবল সাজ্জাদ হোসেন।

    আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

    এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের বলেন, ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি নথিভুক্ত করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

    আগুন দেয়ার ঘটনায় পুলিশের কিছু সদস্য সরাসরি জড়িত উল্লেখ করে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ আরেকটি আদেশ দিয়েছিলেন।

    ওই আদেশে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম ও গোবিন্দগঞ্জের চামগাড়িতে ওই দিন দায়িত্বরত ওই থানার সব পুলিশকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়।

    গত ৩১ জানুয়ারি গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহীদুল্লাহ ৬৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপন করেন।

    এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদনে কতিপয় পুলিশ সদস্য এ আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাদের নাম সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি।

    সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দূর থেকে ভিডিও ক্লিপ দেখে পুলিশদের শনাক্ত করা গেলেও তাদের নাম জানা যায়নি। ওই পুলিশদের শনাক্তের বিষয়ে ৭ তারিখ আদালত কী আদেশ দেন, সেটাই দেখার বিষয়।

    ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে প্রতিবেদনের কিছু অংশ জানা গেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, টেলিভিশনে প্রদর্শিত ভিডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে কিছু পুলিশ সদস্য এবং দুজন সিভিল পোশাকধারী ব্যক্তি সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন লাগানোয় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।

    আরো কিছু পুলিশ সদস্য কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যারা আগুন লাগানোয় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেননি। তবে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেননি।

    এর আগে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালপল্লীতে অগ্নিসংযোগে পুলিশ জড়িত কি না, সে বিষয়ে তদন্তের জন্য গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

    ওই নির্দেশ অনুযায়ী গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম ঘটনার তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

    গত বছরের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে তিন সাঁওতাল নিহত ও অনেকেই আহত হন। মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে।

    পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিও বের হলে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে আগুন দিচ্ছেন।