সরেজমিন (১) শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দূর্নীতি,সেচ্ছাচারিতা

    0
    242

    “চিকিৎসা থেকে  বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন রোগীরা”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩আগস্ট ,এম ওসমান:শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র (বুরুজ বাগান) চলছে আলার ওয়াস্তে। যেন দেখার কেউ নেই। দূর্নীতি আর সেচ্ছাচারিতায় ডুবে রয়েছে কর্মকর্তা থেকে কর্মচারী পর্যন্ত। রোগী কষ্ট পেলেও ডাক্তারদের কিছু যায় আসে না। তাদের প্রাক্টিস ও কমিশনের ব্যবসা চলছে রমরমা।

    একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শনিবার সকাল ৯টা গিয়ে দেখা যায়, ততক্ষনে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হেড ক্লার্ক, ২জন পিয়ন, একজন সুইপার ছাড়া আর কেই আসেনি। জরুরী বিভাগে একজন মাত্র সহকারী চিকিৎসক রয়েছে। সকাল ১০টা ১৫মিনিটে আসেন ডাঃ মনিরুজ্জামান, ১০টা ১৭মিনিটে ডাঃ শাহনেওয়াজ, ১০টা ২২মিনিটে ডাঃ মুকুল, ১০টা ৩২মিনিটে ডাঃ এনাম উদ্দিন, ১০টা ৩৫মিনিটে ডাঃ ময়নুদ্দিন, ১০টা ৩৫মিনিটে ডাঃ শুভ্রা রানী, ১০টা ৪২মিনিটে ডাঃ মারুফ হোসেন স্বাস্থ কেন্দ্রে আসেন।

    এ ছাড়া বহির্বিভাগে ফার্মাাশিষ্ট হিসাবে কর্তব্যরত রয়েছে কবিরাজ, কামরুল হোসেন ও এলএমএসএস আরমান। অভিযোগ রয়েছে তারা প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টার পর অফিসে আসে। সরজমিনে গিয়ে তাই দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার সময় বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের ভিড় থাকলেও তাদের দেখা যায়নি ।

    ফার্মাাশিষ্ট হিসাবে কর্তব্যরত রয়েছে “কবিরাজ”। কামরুল হোসেনের কাছে অফিস টাইমে না আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, ডাক্তাররাই আসে সাড়ে ১০টার পর আমরা এসে কি করবো।

    এ সময় সেখানে অপর ফার্মাশিস্টের দায়িত্বে থাকা এলএমএসএস আরমানকে প্রতিটি টিকিটের বিনিময়ে ৫টাকা করে নিতে দেখা যায়। এলাকার দূরদুরান্ত থেকে আসা সাধারন রোগীরা তার চাহিদামত টাকা দিয়ে টিকিট দিতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হয়।

    এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, মসজিদের নির্মান কাজ চলছে তাই এ টাকা কর্মকর্তার হুকুমেই বাধ্যতা মুলক আদায় করা হচ্ছে।

    বহির্বিভাগে আগত রোগী আরজিনা বেগম জানান, তিনি নিজামপুর থেকে এসেছে। আসা-যাওয়ার ২০টাকা নিয়ে এসেছি। এখানে ৫টাকা দিলে ৯কিলোমিটার হেটে বাড়িতে বাড়িতে যেতে হবে। তাই টিকিট না কেটে ডাক্তার না দেখিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি। এ ধরনের অভিযোগ আরো অনেক রোগী করেছেন।

    একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, শত শত রোগী সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলেও ডাক্তারের কোন হদিস মেলে না। অধিকাংশ ডাক্তারকে ১০টা ১৫মিনিটের পর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে দেখা গেছে। আর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মকর্তা ডাক্তার নাসির উদ্দিনকে সকাল সাড়ে ১০টায় আসতে দেখা গেছে।

    রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এখানকার বড় ডাক্তার সময় মত আসেন না। সকাল ১০টার পরে আসলেও ডাক্তারদের নিয়ে ঘন্টা খানেক মিনিং করে তারপর রোগী দেখেন। দিনে ১ঘন্টার বেশি রোগী দেখেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

    সকাল ৯টার সময় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, হেড ক্লার্কের অফিস ও জরুরী বিভাগ ব্যাতিত সকল রুম তালাবদ্ধ। সুইপার তখনও পরিচ্ছন্নের কাজে ব্যস্ত রয়েছে।

    ডাক্তার নাসির উদ্দিনকে সকাল ১০টা ১০মিনিটে আসতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি নাম না প্রকাশের শর্তে আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, বড় বাবু নিজেই প্রতিদিন সকালে দুটি ক্লিনিকে প্রাক্টিস সেরে হাসপাতালে আসেন। এ জন্য অন্যান্যরাও দেরি করে আসলেও তিনি কিছুই বলতে পারেন না। অনেক ডাক্তার ১২টার পরেই অফিস ছেড়ে চলে যান। ডাক্তার বেশি থাকলে কি হবে রোগীরা তো আগের মতই সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।

    তিনি আরো জানান, অধিকাংশ ডাক্তার হাসপাতালের সামনে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অফিস সময়ে প্রাক্টিস করেন।

    এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাসির উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি খোড়া অজুহাত দাড় করিয়ে বলেন, রোগীরা তো ১০টার আগে আসে না তাই দেরি করে আসা হয়।

    অন্যান্য ডাক্তারদের দেরি করে আসার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে তো মাত্র ৪/৫ জন ডাক্তার ছিল এখন তো অনেক ডাক্তার। দেরি করে আসলে অসুবিধা কোথায়।

    অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মাচারীদের দেরিতে আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুলনাম, খুব শীগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।