শ্রীমঙ্গলে ৫ দিনের অর্ধ ঝুলন্ত মৃতদেহের সন্ধান

    0
    261

    হত্যা নাকি আত্নহত্যা এ নিয়ে জনমনে সন্দেহ !

    সাদিক আহমেদ,স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইসবপুর গ্রামের সার্বজনীন দুর্গাবাড়ীর দক্ষিণপাশে নিজ বাড়ি সংলগ্ন ঝোপঝাড়ে বাঁশের সাথে নাইলন (প্লাস্টিক) রশি পেঁচানো মনিন্দ্র দেবনাথ (৬০) নামে এক ব্যক্তির অর্ধ ঝুলন্ত গলিত লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে।
    জানা গেছে তার দুই ছেলে নান্টু দেবনাথ,কন্টু দেবনাথসহ তিন মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে।তিনি শহরে সাটারিং ব্যবসা করতেন।
    সরজমিনে দেখা যায়,নিহত মনিন্দ্র দেবনাথের বসতঘর থেকে প্রায় ৫০-৬০ ফুট দূরে ঝোপঝাড়ের মধ্যে দুইটি বাঁশের সাথে তার গলায় বাঁধা অবস্থায় ঝুলে থাকতে।
    অর্ধ ঝুলন্ত লাশটির রশি টানানো দেহের নানা অংশে পচন ধরেছে এবং পোকার মাকড়ের আস্তর পরে গেছে ও।বিদঘুটে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারিদিকে।দেখে মনে হচ্ছে কয়েকদিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে এবং মৃতদেহের পাশে প্রায় ৩ ফুট উঁচু একটি টুল পড়ে রয়েছে।
    নিহতের ছোট ছেলে কন্টু দেবনাথ আমার সিলেটকে জানান,তিনি (মনিন্দ্র) গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।বিভিন্ন জায়গায় খোজ করে তাকে পাওয়া যায়নি।সে (কন্টু) আক্ষেপ করে বলে,সামান্য কিছু ঋণের জন্য বাবা আত্নহত্যা করবে ভাবিনি।উনাকে আমি বলেছিলাম আমায় রোববার পর্যন্ত সময় দিতে কিন্তু উনি সময় দেননি।
    কিভাবে লাশের সন্ধান পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে শোকাহত কন্ঠে কন্টু বলেন,গতকাল থেকে দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।আমরা কাজকর্মে থাকায় সেদিকে আর যাওয়া হয়নি।আজ পাশের বাড়ির একজন লাকড়ি খুঁজতে এসে আামাদের জানান। তবে লাশের সন্ধান দাতার নাম পরিচয় জানা যায়নি।
    এঘটনায় শ্রীমঙ্গল পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা বিশেষ করে এসপি সার্কেল আশরাফুজ্জান আশিকসহ শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেক দুলাল,স্থানীয় চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়,ওয়ার্ড সদস্য শাজাহান মিয়া সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
    অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসীর অভিযোগ ,বড় ছেলে নান্টু দেবনাথ তার বাবা মনিন্দ্র দেবনাথের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন না।
    কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন,বসতঘর থেকে সরাসরি দক্ষিণে ৫০-৬০ ফুট দূরে একটি লাশ ৫ দিন ধরে ঝুলছে তা পরিবারের কেউ দেখেনি এমনকি ঘরের সংস্কার কাজ চলছে অথচ সংস্কার কাজে ব্যবহৃত টুলটি ঘরের সামনে নেই এমন প্রশ্নও পরিবারের কারো মধ্য তৈরি হলো না এটা সন্দেহজনক। এ ছাড়া টুলটি থেকে দাঁড়িয়ে বাঁশের যে স্থানে রশিটি বাঁধা তা সম্ভব কি না তা ও পুলিশের দেখার উচিত বলে দাবি তাদের।
    মূলকথা এলাকাবাসী ঘটনাটিকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না।এজন্য প্রশাসনের প্রতি ঘটনার প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করার দাবী জানিয়েছে অনেকেই।
    এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছালেক দুলাল বলেন,”আমরা এসপি সার্কেল স্যারসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছি।দেখে মনে হয়েছে এটি একটি আত্নহত্যা।আমরা পরিবারসহ আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেছি।কেহ সন্দেহমূলক কিছু বলেনি।পরিবারের লোকজন জানিয়েছে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্থ ছিলেন, গত শুক্রবারে মনিন্দ্রের চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা বলে এর মধ্যে আমরা আজ লাশ পেয়েছি। নিহতের পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ সৎকারের আবেদন জানিয়েছে।”
    উল্লেখ্য,একটি সুত্রে জানা গেছে নিহত মনিন্দ্রের মূল বাড়ি ছিলো মৌলভীবাজার জেলার শমসেরগঞ্জ বাজার এলাকার বিন্নি গ্রামে।তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছেন।আজ প্রায় বছরখানিক ধরে তিনি ইসবপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।