শ্রীমঙ্গলে সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

    0
    220

    “বিচ্ছিন্ন ঘটনার টার্গেট সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্তী,জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবনী ভিত্তিক বই নিয়ে অপপ্রচার এবং বিকৃতির কল্পিত অভিযোগ”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১নভেম্বর,শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনীভিত্তিক সংকলন “আপন আলোয় বিশ্বভূবন” নিয়ে শ্রীমঙ্গলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দৈনিক ভোরের কাগজের স্টাফ রির্পোটার ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও একুশে টেলিভিশনের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি বিকুল চক্রবর্তী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন তথ্য শিক্ষাবাতায়নে প্রদেয় সকলের জন্য উন্মুক্ত একটি শিক্ষনীয় কনটেন্ট থেকে নিয়ে এটি স¤পাদনা করে দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থীদের নিকট সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিতরণ করেন। বইটিতে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বির্তকিত তথ্য এসেছে বলে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল শিরোনাম করেছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কারিগরী সমস্যার কারনে ফন্ট রুপান্তর প্রক্রিয়াকালে কয়েকটি বানান এলোমেলো হয়ে যায়। এটুকু বিভ্রাট ব্যাতীত পুরো বইটিই সঠিক তথ্য সমৃদ্ধ বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞ জনেরা। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও বইটিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে নিয়েও তথ্য রয়েছে।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের একটি অসত্য এবং পরিকল্পিত রিপোর্টের জন্য প্রতিবাদের ঝড় বইছে এবং ধীরে ধীরে ফুসে উঠছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এমন আভাস মিলছে। বিশেষ করে গতকাল একটি স্থানীয় সাপ্তাহিক এ স¤পর্কিত খবর বেশ কয়েকটি ছবি সহকারে প্রকাশিত হবার পর শ্রীমঙ্গলসহ পুরো জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এর প্রতিবাদে লিখছেন। কেউ কেউ বলছেন, এত বড় খবর! বিগত একসপ্তাহ ধরে প্রধানত একটি অনলাইনে এবং আরো কয়েকটি অনলাইন ব্যাতীত আর কোন প্রথম শ্রেণীর জাতীয় পত্রিকায় না আসা অবশ্যই প্রশ্নের উদ্রেক করে।

    এ তথ্যের বাস্তবতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় এটি সরকারের শিক্ষা বাতায়ন (teachers.gov.bd/content/একনজরে বঙ্গবন্ধুর জীবনী)  সহ স্নাতক (সম্মান ও পাস) এর জন্য মুনতাসীর মামুন ও মাহবুবুর রহমান এর লেখা স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বইয়েও সঠিকতার বিষয়টি প্রমাণিত। শুধু তাই নয়, জয়নুল আবেদীন রচিত বইয়ে খুব সুন্দরভাবে ঘোষণাকারী এবং পুন:পাঠকারীর তথ্য রয়েছে। এ কে এম শওকত আলী খান, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ, ড. এ এস এম রফিকুর রহমান, ড.মোহাম্মদ আব্দুল মালেক সরকার ও এ বিএম গোলাম ফারুক রচিত ডিগ্রী পাস এর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বইয়েও তা লিখা রয়েছে।

    এ ব্যাপারে সংকলনটির সম্পাদক বিকুল চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করে প্রদর্শণী করে নতুন প্রজন্মকে তা দেখার সুযোগ করেন, একই সাথে তিনি নিজ অর্থায়নে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিতরণ কার্যক্রম করেন।  তিনি শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ স¤পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন শুরু করেন এবং শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙ্গানোর ব্যবস্থা করেন। একই সাথে নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীর উপযোগী করে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে একনজরে কিছু তথ্য তুলে দিতে এবং নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতে  মাত্র ১৬ পৃষ্টায় “আপন আলোয় বিশ্বভুবন” সংকলণ প্রকাশ করে বিতরণ করেন। বিতরণের আগে স্থানীয় একজন সিনিয়র এবং গুনী আওয়ামীলীগ নেতাদেরকে দেখিয়ে তা প্রকাশ করেন।

    কিন্তু তার একার পক্ষে এই সংকলনটি প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন এই সংকলনটি স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করার জন্য। তার এ আবেদনে সারা দিয়ে শ্রীমঙ্গলের সেন্ট মার্থাস উচ্চ বিদ্যালয় এবং মহাজিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় বই গ্রহণ করে তা ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করেন। তবে তিনি কয়েকটি বানান ভূল থাকার বিষয়টি তার অনিচ্ছাকৃত (প্রিন্টিং মিস) ভূল হয়েছে ও তথ্য সুত্র নেই বলে তিনি দু:খ প্রকাশ করে তা পরবর্তী সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

    তিনি আরো জানান, বেশ কিছুদিন ধরে শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের মধ্যে একটি আদর্শিক বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে একটি জনপ্রিয় অনলাইনের এক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যমুলক কর্মকান্ড। যেকোন মুল্যে বিকুলসহ তার পুরো পরিবারের চরিত্র হরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ১ম সংস্করণ হল এ হীন ষড়যন্ত্র। তাদের ষড়যন্ত্রের সাথে হাত মিলিয়ে কিছু প্রতিক্রিয়াশীল লোক নিজেদের ফেসবুকে স¤পুর্ণ মিথ্যা তথ্যসংবলিত সংবাদ প্রচার করছে।

    এ ছাড়া  ওই সংবাদটি পড়লেই বুঝা যায় এটি ওই ব্যাক্তিগত আক্রোশ। বিশেষ করে এর পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছেন একটি বিশেষ মহল।

    তাছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনাধারী সিনিয়র সাংবাদিক, গনমাধ্যমকর্মী, শিক্ষানবিশ সাংবাদিকদের নিয়ে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব কারো কারো মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    এছাড়া, ওই সাংবাদিক ‘আপন আলোয় বিশ্বভূবন ’বির্তকিত বলে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের অপাসঙ্গিক প্রশ্নবানে জর্জরিত করছেন তাদের হেয় করার লক্ষ্যে এমন অভিযোগ ও পাওয়া গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, যেহেতু বিষয়টি সেনসিটিভ, তাই এ ব্যাপারে বিশদ বক্তব্য দিচ্ছি না, তবে যাই ঘটুক না কেন আমি মর্মাহত, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি শুধুমাত্র।

    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব জানান, সংকলণটির চতুর্থ সংস্করণে তিনি কোন বাণী দেননি। তবে ১৫ আগষ্ট উপলক্ষে প্রকাশিত ৩য় সংস্করণে তিনি বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন,সংকলণটি তিনি পড়েছেন সেখানে কয়েকটা বানানের ভূল ছাড়া তথ্যগত কোন ভুল তাঁর চোখে পড়েনি।

    জানা যায়, বিকুল চক্রবর্তীকে পরিকল্পিত টার্গেটের অংশ হিসেবে তার চরিত্র হননের জন্য তাদের সংবাদের সাথে জড়িত নয় এমন বিষয়বস্তুকে টেনে আনা হয়েছে। শ্রীমঙ্গলের সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভার একটি গ্রুপ ছবি প্রকাশ করা হয়, সেটাকে হাইলাইট করার জন্য অন্যান্য গুনীজনদেরকে জড়িত করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। শুধু তাই নয, বৃটিশ নাগরিক এক ব্যবসায়ীকে অত্যন্ত তীর্যক ভাষায় অর্থ যোগানদাতা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তবে, প্রশ্ন থেকেই যায়, বঙ্গবন্ধুর বই বিকৃতির অভিযোগ কি তবে ব্যক্তি বিকুলকে চুড়ান্তভাবে অপদস্ত করার চেষ্টা?

    জানা যায়, বিকুল মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সদস্য এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথেও সম্পৃক্ত রয়েছেন।

    এদিকে,কিছু সাংবাদিক পেশাগত নৈতিকতা থেকে দুরে সরে তাকে ব্যক্তিগত ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম অশালীন কথাবার্তা বলে চলেছেন। বিকুল চক্রবর্তী স¤পর্কে আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিকুল চক্রবর্তী শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে একনিষ্ঠ ভাবে জড়িত রয়েছেন।সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের কাজ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করে প্রদর্শণীর মাধ্যমে শ্রীমঙ্গলবাসীকে এ উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স¤পর্কে জানান দেন।এর পর তিনি কমলগঞ্জ ও রাজনগরের তথ্য সংগ্রহ করে প্রদর্শনী করেন। বর্তমানে কুলাউড়া উপজেলার তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন।বিকুল চক্রবর্তী সাংবাদিকতা, পরিবহন ব্যবসা, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ ছাড়াও তিনি বৃক্ষ সংরক্ষণ জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করেন। এ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি ২০১৪ সালে বৃক্ষ সংরক্ষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারে ভুষিত হন।

    বিকুল চক্রবর্তী সে সময় প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের সমুদয় অর্থ পরিবেশের কাজে ব্যবহার করার জন্য মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তৎকালিন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের হাতে তুলে দেন।

    এদিকে বিকুল চক্রবর্তীকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ফেসবুকে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রকাশ করায় এর নিন্দা জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং গনমাধ্যমকর্মীরা। তারা এ উদ্দেশ্যমুলক সংবাদ প্রকাশের দায়ে জড়িত সকল চক্রান্তকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার দাবী জানান। এছাড়া,শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক এবং জয়বার্তা পত্রিকার স¤পাদক এডভোকেট এ.এস.এম. আজাদুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি গনমাধ্যমে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী শ্রীমঙ্গলের সিনিয়র সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য বাপন কর্তৃক প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদ তাদের গোচরীভূত হয়েছে। তার এ সংবাদ জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। তিনি এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান।,

    এদিকে, মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জের সহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন প্রগতিশীল সাংবাদিকরা এরুপ অপেশাদারসুলভ সংবাদ প্রকাশের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।আপডেট