শ্রীমঙ্গলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকার লটারী বিক্রির অভিযোগ

    0
    267

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১ জানুয়ারী,স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সকল মানুষের ব্যবহারের জন্য প্রতিস্থাপিত শেখ রাসেল শিশু উদ্যানের মুল মালিক সরকার হলেও প্রতি বছর বিজয় মেলার নামে এক শ্রেণীর অবৈধ লটারী ব্যবসায়ী স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মহলকে হাত করে মাস ব্যাপী অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীর কাছে মাঠ ভাড়া দিয়েছে লিটন নামে জনৈক লটারী ব্যবসায়ী।

    ৩১ ডিসেম্ভর তাদের মেয়াদ শেষ হলেও লটারীর টিকেট বিক্রি অব্যাহত রয়েছে । মেলা ঘুরে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, এসব ভাড়া দোকানে দৈনিক দেড় হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

    এতে গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা দোকান থেকেই পায় মেলার মালিক লিটন। এ হিসেবে মাস ব্যাপী তার দোকান থেকেই আয় হবে ৫০ লক্ষাধিক টাকা। অন্য দিকে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার টিকিট বিক্রি করে দায়সারা কয়েকটি পুরস্কার দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনায় রপ্ত রয়েছে এ চক্র এমন অভিযোগ ও উঠেছে।

    এ দিকে এই লটারী ক্রয় করে নিস্ব হয়ে পড়ছে শ্রীমঙ্গলের শ্রমজীবি মানুষেরা। অপর দিকে এ লটারী বিক্রির জন্য অর্ধশত গাড়ির মাইকিংএ অতিষ্ট শহরের জনজীবন। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বানিজ্য করতে পারছেন না তাদের মাইকিংএর শব্দে। বিশেষ করে শহরের ভিতরে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা বেশি ভুগান্তির শিকার হচ্ছেন।

    তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক সংসদের নামে মেলার অনুমোদন নেন ফোরকান উদ্দিন নামক একজন মুক্তিযোদ্ধা। যার প্রাথমিক অনুমোদন ছিল ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরবর্তীতে তা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত হয়।

    এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা ফোরকান উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মেলার অনুমোদন তার নামে হলেও এই মেলা পরিচালনা করছেন আওয়ামীলীগ নেতা জিল্লুর আনাম চেমন। বর্তমানে তার সাথে মেলার কোন সর্ম্পক নেই।

    এদিকে মেলা ও লটারীর মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত  ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও মেলার মাঠের উন্নতি হয়নি এক ইঞ্চিও। উল্টো মেলার স্টলের কারনে ক্ষতি সাধিত হয়েছে মাঠের ভিতরে রোপিত গাছের চারা।

    উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন দেয়া কাগজে মাইক ব্যবহার না করা, লটারী বিক্রি না করা ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অনুষ্ঠান পরিচালনাসহ বিভিন্ন শর্ত জোড়ে দিলেও কোন শর্তই তারা পুরণ করেনি।

    এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কুমুদ রঞ্জন দেব জানান, মেলার প্রথম দিনই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে বাজারে লটারীর টিকিট বিক্রি করে। তিনি এতে বাঁধা দিলে পরের দিন থেকে দৈনিক বিজয় আনন্দ র‌্যাফেল ড্র নামে লটারী বিক্রি করে আসছে।

    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল হক জানান, ৩১ ডিসেম্বরই মেলার মেয়াদ শেষ। আর লটারী বিক্রি করে থাকলে তা সম্পূর্ন অবৈধ। প্রমান পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

    এ ব্যাপারে মেলার আয়োজক লিটনের সাথে যোগাযোগ করতে তার মোবাইল ফোনে কল করলে প্রথমে রিং বাজলেও পরে সে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। একই সাথে আওয়ামীলীগ নেতা জিল্লুর আনাম চেমনের মোবাইল ফোনে রিং দিলে তিনি রং নাম্বার বলে মোবাইল রেখে দেন।

    এদিকে অপর একটি সুত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের আতাত করে কোটি কোটি টাকা আয়ের এই অবৈধ লটারী মেলা আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর পায়তারা করছে এই চক্রটি।

    এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুজিত বৈদ্য জানান, বিজয় মেলার স্টলের কারনে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।