শ্রীমঙ্গলে বালি উত্তোলনে পুকুরচুরি,উপজেলা কর্মকর্তার অভিযান

    0
    280

    “আটক ও জব্দকৃত এস্কেবেটর, শ্যালো মিশিন, নম্বার বিহীন ট্রাক ও বিপুল পরিমাণ বালি নিলাম হবে, মামলা ও হবে জানালেন উপজেলা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম” 

    নিজস্ব প্রতিনিধি:  শ্রীমঙ্গলে বালু উত্তোলনের নামে পুকুরচুরির মত ঘটনার সন্ধান পাওয়া গেছে উপজেলার কালাপুর এলাকায়। এ সমস্ত ঘটনায় কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের, ভারসাম্য হারাচ্ছে পাহাড়, ছড়া নদী। বালু উত্তোলন নিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। কোথাও পাহাড়ি ছড়া থেকে, কোথাও কোথাও সমতলভূমি কেটে কোটি কোটি টাকার বালি বিক্রি হচ্ছে অবৈধভাবে আর এতে ।

    উপজেলা কর্মকর্তার ভাষ্য মতে ইতিমধ্যে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময়ে অবৈধ বালি ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে সরকার প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব আদায় করলেও কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে এই সেক্টর থেকে অভিযোগ সচেতন মহলের।

    জব্দকৃত এস্কেবেটর।

    অভিযোগ রয়েছে বেলা নামে একটি সংগঠনের অজুহাতে বিজ্ঞ আদালতে রিটের অজুহাতে বালি খেকোরা সিন্ডিকেট তৈরি করে সরকারের এই বিশাল একটি খাতের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে ।

    আজ সোমবার ৬ জুলাই দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের উদ্যোগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্রীমঙ্গল র‍্যাব ৯ ক্যাম্প এর মেজর নোমান আহমদ জাকি’র সহযোগিতায় উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প এর নিকটবর্তী মাজদিহি বাগানে অভিযান পরিচালনা করেন।

    উক্ত অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত শ্যালো মেশিন, বালি বোঝাই একটি নাম্বার বিহীন ট্রাক ও বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি এসকেবেটর, কুদাল,পাইপসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়।

    সরেজমিনে দেখা যায় প্রায় দেড় একর জমি থেকে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যবান জাতের সিলিকা বালি উত্তোলন করে অবৈধভাবে বিক্রি করে যাচ্ছে একটি চতুর সিন্ডিকেট। এতে করে ওই জমিতে শ্যালো মিশিনে সাহায্যে প্রায় ২০/৩০ ফিট পর্যন্ত গভীর গর্ত করা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে শুধুমাত্র এই স্পট থেকেই ১০ লক্ষ বর্গ ফুটের মত বালি ও মাটি উত্তোলন করা হয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরেই উত্তোলন করে যাচ্ছে।

    জব্দকৃত নম্বার বিহীন বালি বোজাই ট্রাক । 

    অভিযোগ রয়েছে এর আগেও কয়েকবার প্রশাসন হানা দিয়েছে তার পরেও বন্ধ হয়নি এই অবৈধ বালি ব্যবসা। এ ব্যাপারে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের নাম উঠে এসেছে। তবে বিশেষ কারণে ওদের নাম পরিচয় এখনি প্রচার করা যাচ্ছেনা।

    এই অভিযানের ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক আমি ব্যথিত ও মর্মাহত । মহামারী দুর্যোগে মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত এসময়ে এই কালপিট চক্রটি সরকারি সম্পত্তি চুরি করে যাচ্ছে। এদের সামান্যতম ভয় নেই আমরা এতদিন অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে তারা ইচ্ছেমতো সমস্ত অবৈধ কাজ কারবার চালিয়ে গেছে আজ থেকে আর তা হবে না। এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চলবে সেটা কালাপুরে হোক অথবা মির্জাপুরে, আশিদ্রোন অথবা ভূনবীর বা সিন্দুরখান। আমি সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। অবৈধ বালি ব্যবসায়ীদের এখন থেকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা এখন নিয়মিত মাঠে থাকবো। কালফিটরা পালিয়েছে।

    জব্দ কৃত শ্যালো মেশিন গভীর খাদে বসিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে।

    সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আমরা যাদের নাম পেয়েছি তা এখন প্রকাশ করছি না পরে অবশ্যই জানিয়ে দেবো আর এই কাজে ব্যবহৃত জব্দকৃত সকল মালামাল নিলামে দেওয়া হবে এর ম্যাজারম্যানট করে দেখবো কত সেফটি বালি এখান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে এবং আটককৃত বালিও নিলামে দেওয়া হবে যার কাছে অধিক মুল্য পাওয়া যায় তার কাছে তা নিলামে বিক্রি করা হবে। আপাতত এ বালি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মুজিবুর রহমান মজুলের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এসময় ৫ নং কালাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজুল অবস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী সংবাদ দেখুন।