শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ বঙ্গলীগের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ

    0
    209

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৬আগস্ট,জহিরুল ইসলামঃ দারিদ্র বিমোচনের নামে শ্রীমঙ্গলে চলছে অবাদে চাঁদাবাজি ও সদস্য সংগ্রহ বঙ্গলীগ নামে একটি নতুন রাজনৈতীক দল ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সারা দেশে  সদস্য সংগ্রহ শুরু করছে। আর এ ক্ষেত্রে তারা বেছে নিয়েছে বিভিন্ন উপজেলার ঘনবসতীপূর্ন প্রত্যন্ত অঞ্জল। আর তাদের এই প্রলোভনে প্রতিদিনই শতশত দরিদ্র পুরুষ ও মহিলাদেরকে সদস্য করা হচ্ছে। এবিষয়ে পার্টির মহাসচিব  মোজাম্মেল হক জানান, দ্রারিদ্র বিমোচনের অংগীকার নিয়ে তারা এই নতুন রাজনৈতীক দল গঠন করেছেন। প্রথমে দেশের একুশটি জেলায়  তাদের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম  চলছে। বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের সদস্যদের মধ্যে থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক দুই টাকা থেকে পাচঁ টাকা পর্যন্ত অনুদানের মাধ্যমে দলের কর্মীরা সেচ্ছায় দলের ফান্ড সংগ্রহ করছে। এই ফান্ড থেকে দরিদ্র সদস্যদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হবে বলে।

    কিন্তু মাঠ পর্যায়ে রয়েছে ভিন্ন চিত্র। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাহীবাগ, মুসলীমবাগ, কলেজ রোড, বিরাইমপুর, আউটসিগন্যাল ও কোর্ট রোড এলাকায়  প্রায় ১৫০০ জন দরিদ্র পুরুষ মহিলাকে করে। গত দুই মাস যাবৎ নতুন এই রাজনৈতীক দলের সদস্য ফরম পুরন করে তাদের নিকট থেকে ৪০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে প্রায় ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে দুই হাজার সদস্য হয়ে গেলে প্রতি সদস্যকে ৫ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়া হবে। ঋণ দেয়ার পর তাদের নিকট থেকে সাপ্তাহে ৫ টাকা করে নেয়া হবে। সদস্য সংগ্রহকারীরা প্রত্যেক নতুন সদস্যদেও নিকট থেকে দুই কপি ছবি ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যাচ্ছে।

    তবে তাদেরকে বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের একটি  ঘোষণাপত্র ছাড়া আর কোন কাগজপত্র বা রশিদ দেয়া হচ্ছে না। গত সোমবার বিকেলে মুসলিমবাগ এলাকায় সদস্য সংগ্রহ করতে গেলে মোছাম্মদ রুনা বেগম ও আয়শা বেগম নামে দলের দুই মাঠ কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করছে এলাকাবাসী।

    মোছাম্মৎ রুনা বেগম ও আয়শা বেগম পুলিশের নিকট জানান, ওই রাজনৈতীক দলের হয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন ৫জন মহিলা ও ১জন পুরুষ। মাঠকর্মীরা হলেন বিরাইমপুর এলাকার  মায়া বেগম, রেনু বেগম, শহরের কোর্ট রোড এলাকার মমতাজ বেগম, ও ঝাড়– মিয়া। তিনি জানান, সিলেটের ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যাক্তি মাসিক ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে তাদেরকে এই কাজে লাগানো হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ শত সদস্য করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। আর সংগৃহীত সব টাকা তারা ইকবাল হোসেনের নিকট দিয়ে দিয়েছেন। তাদের বলা হয়েছে পাচঁ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়ার কথা বলে সদস্যদের নিকট খেতে ৪০ টাকা করে চাঁদা আদায় করার জন্য। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তারা কাজ করছেন।

    তবে এসব কথা অস্বীকার করে বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের সিলেট মহানগর সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন (মোবাইল নং-০১৭১১-৩৪৩১১৮) বলেন, ঋণ দেয়ার কথা বলে সদস্য সংগ্রহ করা, দলের গঠনতন্ত্রে নেই। সেচ্ছায় যারা আসবে তাদেকে সদস্য করার কথা বলা হয়েছে।  সংগৃহিত চাঁদার টাকাও তিনি নেননি  বলে জানান।

    মুসলিমবাগ এলাকার রুপচান খাতুন, আসছা বেগম, নাজমা বেগম আজিজুন, ও শাহীন মিয়া বলেন, চল্লিশ টাকা করে নিয়ে তাদেকে নতুন রাজনৈতীক দলের সদস্য করা হচ্ছে। ওই দলের সদস্য হলে না কি পাচঁ হাজার টাকা করে ঋণ পাওয়া যাবে। তাই আমরা সদস্য হয়েছি।

    শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (অপারেশন) মাহবুবুর রহমান বলেন আটক দুই জনকে আদলতে প্রেরন করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে এটা সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষ হলে সত্য মিথ্যা বলা যাবে।

    ]দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে মহাসচিব পরিচয় দিয়ে  মোজাম্মেল হক এই প্রতিবেদককে জানান (ফোন নং- ০২৯৮৫০৬৪২) বলেন, মো. শত্তকত হাসান মিঞা বাইরে আছেন। তিনি বলেন, তারা এখনো নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পায় নাই। ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সমবায় অধিদপ্তর থেকে কোন নিবন্ধন নেয়া হয়নি বলেও তিনি জানান।

    এদিকে ঘোষণাপত্রে লেখা রয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গলীগের প্রতিষ্টাতা আহবায়ক হচ্ছেন  মো. শত্তকত হাসান মিঞা। কেন্দ্রীয় কার্যালয় জামালপুর টুইন টাওয়ার, গ ৩৭/১, প্রগতী সরণী, বারিধারা, ব্লক-জে, গুলশান, ঢাকা।