আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭আগস্টঃ শ্রীমঙ্গল শহরের প্রান কেন্দ্র ক্যাথলিক মিশন রোডের দুটি বাসায় চেতনা নাশক ঔষধ স্প্রের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে অভিনব কায়দায় চুরি্র ঘটনা ঘটেছে।ঘটনার কয়েক মিনিটের মাথায় পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে বলে শ্রীমঙ্গল থানা সূত্রে প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে, ওই ঘটনায় অজ্ঞানবস্থায় শিক্ষক শুকুমার চক্রবর্তী (৪৭)ও তাঁর মেয়ে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী অদিত্য চক্রবর্তীকে শ্রীমঙ্গল সদর হাসপাতালে চিকিতসার জন্যে ভর্তি করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো-শহরের ক্যাথলিক মিশন রোডের মৃত বিনয় দাশের ছেলে বিধান দাশ (৪২),কুমিল্লার বুড়িচং থানার হায়দারাবাদ গ্রামের হাজী ময়নুল হোসেনের ছেলে বাবুল হোসেন (৩৭),মৌলভীবাজার সদর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের শংকর রায়ের ছেলে সুমন রায় (৩০)ও কুলাউড়া উপজেলার রবিরবাজার এলাকার দৌলতপুর গ্রামের সমেরন্দ্র দাশের ছেলে ঝন্টু কুমার দাশ।
পাড়ার লোকজনের সূত্রে বলা হয়েছে,বুধবার দিবাগত গভীররাতে ক্যাথলিক মিশন সড়কের উত্তর পার্শ্বে এহসান করিম সড়কের নোমান চৌধুরীর বাসায় ও দি-বাডস রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক সুকুমার চক্রবর্তীর ভাড়াটে বাসায় চেতনা নাশক ঔষধ স্প্রের মাধ্যমে চোরেরা পরিবারের সদস্যদের অবচেতন করে এ দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সুকুমার চক্রবর্তীর স্ত্রী তপু চক্রবর্তীর সূত্রে জানানো হয়,বুধবার দিবাগত রাত তিনটারদিকে দুই জন লোক তাদের বাসার পিছন দিকে ভেতরের জানালার গ্রীল কেটে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে।
পরে ঘরে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে তার স্বামী সুকুমার চক্রবর্তী ও মেয়ে সূচনা চক্রবর্তী অদিতিকে অজ্ঞান করে ফেলে। তখন চোরেরা বাসা থেকে নগদ ১৮হাজার টাকা,৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকারসহ মূলব্যান কাপড়চোপড় নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, চোর দেখে আমি আমার স্বামীকে ডাকতে গেলে চোরেরা আমাকে সিলেটী ভাষায় বলে ‘তর স্বামী আর উঠতো নায়। ডাকিয়া লাভ নাই’। তখন দেখি আমার মেয়ে আর স্বামী অবচেতন অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন।
এদিকে সুকুমার চক্রবর্তীর বাসার চুরির ঘটনার পরপরই পাশের বাসার ব্যবসায়ি নোমান চৌধুরীর বাসার পেছন দিয়ে একই কায়দায় গ্রীল কেটে চার চোর প্রবেশ করে প্রথমে তার বড়মেয়ে ঊর্মিকে বলে চুপ চাপ থাকো নতুবা অবস্থা খারাপ হবে এ কথা শুনে সে চুপ থাকে। পড়ে সে তার বাবার রুমে গিয়ে দেখতে পায়, তার বাবা নোমান চৌধুরী সহ সবাই অজ্ঞান অবস্থায় বিছনায় পড়ে আছেন। তারা কিছু বলতে পারছেন না। ঊর্মির সূত্রে জানানো হয়, চোরের দল তাদের বাসা থেকে ১৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে,এবং পাশের বাসার চুরি হওয়া দুটি মোবাইল সেট রেখে দিয়ে চোরেরা বলে আমরা মোবাইল নেই না। তাদের বাসা থেকে আর কি চুরি হয়েছে জানতে চাইলে সে এর বেশী কিছু বলতে পারছে না। তবে সে জানায় তার বাবা মা সুস্থ হলে বিস্তারিত বলতে পারবেন ।
শ্রীমঙ্গল থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মাসুদ এর সূত্রে বলা হয়,বিধান দাশের বাসা থেকে চুরির ঘটনার পর পরই মোটর সাইকেলযোগে ৩ চোর পালিয়ে যাবার চেষ্ঠা চালায় তখন শ্রীমঙ্গল থানার ওসি স্যার মো.মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে টহল পুলিশের একটি দল পাড়ার লোকজনদের সযোগীতায় চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন এবং চোরাইকৃত কিছু কাপড় চোপড় উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জব্বারের সূত্রে জানানো হয়, চুরির ঘটনার পরপরই চোর বাবুল,ঝন্টু ও সুমন মোটর সাইকেলযোগে পাড়ার বিধান দাশের বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করলে আমরা পাড়ার লোকজন নিয়ে ধাওয়া করে তাদের মটর সাইকেলের গতি রোধ করি। তখন তারা আমাদেরকে পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়। তাতে আরও সন্দেহ হলে চোরদের আটক করে ওসি মাহবুব
স্যারের কাছে সোর্পদ করি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ওসি মাহবুব সাহেবকে বলেছি,বিধান দাশের বাসায় বহিরাগত অপরিচিত লোকদের আনাগোনা সব সময় দেখা যায়। সে এই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। পরে বিধানের বাসার বাথরুম থেকে আরও এক জনকে ওসি মাহবুব সাহেব আটক করে থানায় নিয়ে যান।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মাহবুবুর রহমানের সূত্রে প্রকাশ করা হয়,তিনি জানান, আটককৃত চোরদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রয়োজনে রিমান্ডে এনে চুরি হওয়া অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হবে। সুত্র-শ্রীমঙ্গল থানা পেইজ।