ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর খানা শুমারি অনলাইনেঃজেলা প্রশাসক তোফায়েল

    0
    236

    সোলেমান আহমেদ মানিক,শ্রীমঙ্গল থেকেঃ শ্রীমঙ্গলে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী খানা শুমারি শুরু হয়রানী ছাড়াই অনলাইনে পাওয়া যাবে সনদ মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় শ্রীমঙ্গলে শুরু হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী শুমারি ২০১৯। ‘নৃ গোষ্ঠিী খানার তথ্য জানান- সনদ সেবা সহজে পান’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়ে ৭ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় শুমারি চলবে।
    বুধবার সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা মিলনায়তনে শুমারির গণনাকারী প্রশিক্ষন কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম।
    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উপ-সচিব আশরাফুর রহমান।

    এতে প্রশিক্ষনার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাঁওতাল নৃ গোষ্ঠীর মহেশ সাঁওতাল, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের পক্ষে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটি ও প্রমুখ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

    প্রশিক্ষনে উপজেলার খাসিয়া, মণিপুরী, ত্রিপুরা, মুন্ডা, সাঁওতাল, গারো ও উড়াং নৃ গোষ্ঠীর গোত্র প্রধান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মীসহ প্রশিক্ষনার্থীরা অংশ নেন। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহিদুল আলম ও উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা রাহুল ঘোষ পলাশ উপস্থিত ছিলেন।

    শুমারি চলাকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় উপজেলার কেবল ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এলাকায় গিয়ে ২০ জন মাঠকর্মী ও ৪ জন সুপারভাইজার তাদের নির্দিষ্ট ফরমে ১১ টি তথ্য সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করবেন।

    জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম উনার বক্তব্যে বলেন, আগে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর সনদপত্র পেতে নানা প্রতিবন্ধকতা ও হয়রানীর মুখে পড়তে হতো। প্রকৃত ক্ষুদ্র নৃ জাতীগোষ্ঠীর লোক হিসেবে যাচাই করাটাও একটা রিস্কি কাজ ছিল। যে কেউ ফোরজারী (প্রতারণা) করে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সার্টিফিকেট যোগার করে চাকুরী নিয়ে নিতে পারে। এক্ষেত্রে শুধু চাকরি ২য় ৩য় ৪র্থ শ্রেণীতে নয় বিসিএস ক্যাডারের কোটাতেও চলে আসতে পারে। আগে সনদ নেয়ার যে প্রসিজিউরটা ছিল এটা কিন্তু হেরাজমেনট ছিল, লেনন্থি ছিল। তাকে আগে দরখাস্ত করতে
    হতো ইউনিয়ন পরিষদ বরাবরে। তারপরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পাঠাতেন গোত্র প্রধান কিম্বা স্থানীয় মেম্বারের কাছে। সেখান থেকে আসার পর চেয়ারম্যান আবার প্রত্যায়ণ করে পাঠাতেন উপজেলায়। উপজেলা থেকে যেত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। এভাবে ইউনিয়ন থেকে গোত্র প্রধান, উপজেলা এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে প্রায় ১ দেড় মাস সময় লাগতো। কারণ এই সনদ জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরে সরাসরি দেয়া হয়।
    তিনি বলেন, এখন এই শুমারির পর থেকে কাউকে আর সনদ নিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান, গোত্র প্রধান, উপজেলা ও জেলা প্রশাসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। পুরো মৌলভীবাজার জেলার নৃ জনগোষ্ঠীর লোকজন কোনো প্রকারের হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রিতা ছাড়াই অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই সনদপত্র পেতে পারবেন।

    জেলা প্রশাসক তোফায়েল শুমারি চলাকালে উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ জনগোষ্ঠীর তাদের পরিবার সমূহে হাতের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্র ও জন্ম সনদপত্র রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যাতে শুমারি চলাকালে গণনাকারীরা সহজে খানা তথ্য লিপিবদ্ধ করতে পারেন। এই কার্যক্রমটির মাধ্যমে সকল ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর খানার আর্থ সামাজিক ও জন তাত্ত্বিক তথ্য সম্বলিত একটি সমৃদ্ধ তথ্য ভান্ডার গড়ে উঠবে।

    যা ব্যবহার করে উপজেলার সকল ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী নাগরিকের সামাজিক নিরাপত্তা, সনদ সুবিধাসহ বহুবিধ সামাজিক সেবা প্রদান করা সহজতর হবে। এছাড়া এই শুমারির মাধ্যমে ক্ষুৃদ্র নৃ গোষ্ঠীর খানার মূল সংখ্যা ও তাদের আর্থ সামাজিক প্রকৃত অবস্থার চিত্র উঠে আসবে বলে তিনি মনে করেন।