শেষ হলো মন্ট্রিয়লের আন্তর্জাতিক জ্যাজ ফেস্টের ৩৮তম আসর

    0
    305

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১০জুলাই,সদেরা সুজন,সিবিএনএ কানাডা থেকেঃ গতকাল শনিবার মধ্যরাতে সমাপ্তি ঘটেছে মন্ট্রিয়লের সবচেয়ে বৃহৎ উৎসব, পর্দা নামলো  আন্তর্জাতিক জ্যাজ ফেস্টিভ্যালের। দশদিন ব্যাপী ৩৮তম জ্যাজের দশম দিন শনিবার, উইক এন্ডে  আবাহাওয়া খুবই সুন্দর থাকায় জ্যাজ ফেস্টিভ্যালে মন্ট্রিয়লের প্লাস দ্যা আটসের মঞ্চগুলো ছিলো সঙ্গীত পিপাষু লাখো মানুষের আনন্দ উচ্ছ্বাস।

    গত ২৮ জুন থেকে শুরু হয়েছিলো এই বিশাল ফেস্টিভ্যালটি চলছে গতকাল  মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রায় ছয় শতাধীক কনসার্ট  অনুষ্ঠিত হয়েছে উৎসব স্থলের বিশটি  বিশাল বিশাল মঞ্চ থেকে। নামি-দামি খ্যাতিনামা শিল্পীদের শোগুলো বাইরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি ইনডোরের বিশাল হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গীতানুষ্ঠান।

    দশদিন ব্যাপী এই ফেস্টিভ্যালে দু/তিনদিন আবহাওয়া অনকুলে না থাকায় এবং বৃষ্টি হওয়াতে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। তার পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪৬১  নামকরা ব্যান্ড দলের শিল্পীরা উপস্থিত হয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন ঠিক তেমনি বিভিন্ন দেশ ও শহর থেকে হাজার হাজার সঙ্গীত পিপাষুরা উপস্থিত হয়ে সঙ্গীতের তালে তালে নেচেছেন, সঙ্গীত আর যন্ত্রের যাদুকরী স্পর্শে মুগ্ধ হয়েছেন শ্রোতাদর্শকরা।

    এববছর প্রতিদিনই মানুষের ঢল নেমেছে উৎসবে, বিশেষ করে ১ জুলাই কানাডার ১৫০তম শুভ জন্মদিন উপলক্ষে উৎসব এলাকা রঙিন সাজে সাজানো হয়েছিলো। কানাডার আদিবাসীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিশেষ আদিবাসী নৃত্য ও কর্নসাটের আয়োজন করা হয়। পুরো সপ্তাহেই রাত সাড়ে ন’টায় মূল মঞ্চ থেকে Discotheque,  Betty Bonifassi, Valaire, Bixiga 70, Walk off the Earth, Pokey Lafarge, The Brooks, Pat Thmas & Kwashibu Area Band, Anderson Paak  কনসার্টগুলোতে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিলো।

    এই শো চলাকালে পাশের সব ক’টি মঞ্চতে বড় বড় স্ক্রীনে তা পরিবেশন করা হয়। লাখ লাখ সঙ্গীত পিপাষুদের মিলনমেলায় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত শত সদস্যরা হিমশিম খেতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিদিন বিকাল থেকে বিভিন্ন মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশের বেন্ড শিল্পীরা গান পরিবেশন করে।

     সবাই অপেক্ষায় থাকবে আগামী বছরের জন্য। এবছর ফেস্টিভ্যালে বিশ লাখেরও বেশী মানুষের সমাগম হয়েছে বলে কতৃপক্ষ বলেছেন। গতকাল ৩৮ তম জ্যাজ ফেস্টিভ্যালে ৮টি অ্যাওয়ার্ড  দেওয়া হয়েছে। ২০০৬ সালে ২৭ তম জ্যাজ ফেস্টিভ্যাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ড  দেওয়া শুরু হয়। বিশ্বের নামিদামি খ্যাতিনামা শিল্পদেরকে এই  অ্যাওয়ার্ড  দেওয়া হয়।

    এবছরের জ্যাজ ফেস্টিভ্যালে ইনডোর-আউটডোরে একুশটি ছোট-বড় মঞ্চে ছয় শতাধীক  ইভেন্ট হয়েছে।  ত্রিশটি দেশ থেকে খ্যাতিনামা সঙ্গীত শিল্পীরা উপস্থিত হয়েছিলেন মন্ট্রিয়লের আন্তর্জাতিক জ্যাজ ফেস্টিভ্যালে। ৩০০০ জন শিল্পী-সহ শিল্পী এবং পাঁচ শতাধীক জন যন্ত্রশিল্পী অংশগ্রহণ করেছিলো। ছয়টি প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে ফেস্ট চলাকালীন সময়ে। ৩১টি কর্নসাটের টিকিট নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বিক্রি হয়ে যায়!  ৩৭০ জন অনুমোদিত সাংবাদিক এবং ১৬ টি দেশের ১০০ জন বিদেশী সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন এ ফেস্টিভ্যালে।

    উত্তর আমেরিকা,যুক্তরাজ্য ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ  media coverage  করেছে। সেই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে  Brazil, Germany, Indonesia, Belgium, India, Turkey, Switzerland, Pakistan, Italy, Peru, Romania, Serbia, Lebanon, Poland, Argentina, New Zealand, Haiti, Africa, the Netherlands, China, Japan, Bangladesh, Israel, Spain, Russia and Nicaragua. বিভিন্ন দেশের মিডিয়াগুলোতে আড়াই হাজার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংগীত উতসব হিসেবে গীনিজ বুক অফ রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে।

    এবছর ফেস্টিভ্যালে ৫৫ হাজার লিটার বিয়ার,  বিশহাজারের বেশী জ্যাজ আইটেম  বিক্রি হয়েছে। ৯৬৩ জন অস্থায়ী কর্মচারীরা কাজ করেছেন।

    গতকাল  মন্ট্রিয়লের এই বিশাল গানের আসর শেষ হলেও মন খারাপের কিছু নেই। আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে জাস্ট ফর লাফস উৎসব। এই হাসির উৎসবটি দেখার মতো। তিন সপ্তাহব্যাপী চলবে এই ফেস্টটি। মন্ট্রিয়লের ডাউন টাউনের প্লেস দ্যা আটসের উৎসবস্থলে। রকমারি আয়োজনে দমফাঁটা হাসির রাজ্যে একবার ঘুরে আসার জন্য মন্ট্রিয়ল প্রবাসীদেরকে অনুরোধ করছি। ভালো লাগবে। দেখা হবে ফের উৎসবস্থলে। ​