শেখ হাসিনাকে আত্মঘাতী নারী দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র!

    1
    230
    “তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা। তরুণীর নেতৃত্বে সুইসাইড স্কোয়াড, তিন মাসে বিভিন্ন পর্যায়ে মান্নার কথোপকথন”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩মার্চঃ শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ন্যায় আত্মঘাতি নারী দিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশেষ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাঁচের অধিক শীর্ষ কর্মকর্তা এক বৈঠকে এ হত্যার পরিকল্পনা করেন। বৈঠকে পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে। পরিকল্পনকারীদের সনাক্ত করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে। বৈঠকস্থল গুলশান দুই নম্বর এলাকার একটি আবাসিক হোটেল ও ইস্কাটন এলাকার একটি বাসা সনাক্ত করেছে গোয়েন্দারা। বৈঠকের মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক জামায়াত নেতার ভাগ্নে। এ ভাগ্নে বিশেষ বাহিনীর শীর্ষ পদ থেকে অবসরে যান। তিনি এই বৈঠকে রাজীব গান্ধীর ন্যায় শেখ হাসিনাকে হত্যা পরিকল্পনার মূল ভূমিকায় ছিলেন।

    এদিকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায় আরো বেশ কিছু লোকের সরকার উত্খাতের বিষয়ে টেলিফোনে কথোপকথন। আলাপকারীদের মধ্যে রয়েছেন সুশীল সমাজের কয়েক ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা, একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ, একটি পত্রিকার সম্পাদক ও বিদেশী একজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন। তাদের সঙ্গে মান্নার আলাপে সরকার উত্খাতের আন্দোলন নিয়ে নানা ধরনের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ পায়। সেইসব টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড এখন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে।
    গোপন বৈঠকে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতার ভাগ্নের দায়িত্ব ছিল মহিলা সুইসাইডেল স্কোয়াড গঠন করা। কথা ছিল, এই সুইসাইডেল স্কোয়াডে আওয়ামী লীগের মহিলা কর্মীদেরকেও সম্পৃক্ত করা। এ কাজে নারীদের অংশগ্রহণ করাতে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখানো, বাড়ি-গাড়ি করে দেয়া ও তাদের পরিবারকে দীর্ঘ সময় ধরে আর্থিক সহযোগিতা করা, এক সঙ্গে প্রথম ধাপে কয়েক কোটি টাকা হাতে তুলে দেয়া এবং প্রতি মাসে হাত খরচ হিসেবে টাকা প্রদান করার পরিকল্পনা করা হয়। এই ধরনের প্রলোভন দিয়ে সুইসাইডেল স্কোয়াডে মেয়েদেরকে সম্পৃক্ত করার জন্য বৈঠকে আলোচনা হয়। প্রথমে একটি বিশেষ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে তারা সুইসাইডেল স্কোয়াডে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়। ওই মেধাবি ছাত্রী তাদের প্রলোভনে পড়ে লেখাপড়া ছেড়ে দেন। অবসরপ্রাপ্ত ওই শীর্ষ কর্মকর্তারা এই ছাত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায়ও গেছেন। তাকে এমনভাবে প্রস্তুত করা হয় যে, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে সুইসাইডেল স্কোয়াডের পুরা নেতৃত্বে থাকবে সে। তার আধুনিক বেশভূসা পোশাক-পরিচ্ছদসহ প্রতিদিন নামিদামি গাড়িতে যাতায়াত এবং সঙ্গে টাকার ব্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়। হঠাত্ করে তার এই পরিবর্তন দেখে এক অভিভাবকের সন্দেহ হয়।পরে বিষয়টি স্বজনদের নজরে আসায় ওই ছাত্রীকে তারা লুকিয়ে রাখে। ফলে বিশেষ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে ওই ছাত্রীর যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে শীর্ষ কর্মকর্তারা উক্ত পরিকল্পনা বাদ দিয়ে নাশকতার দিকে নজর দেন বেশি। হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আর্থিক সহযোগিতাকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাজধানীর দুই শিল্পপতি, একজন রহস্যময় ভিওআইপি ব্যবসায়ী, একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক ও চট্টগ্রামের পাঁচজন মসল্লা ব্যবসায়ী। তারাও শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। এক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, শেখ হাসিনাকে হত্যার বৈঠক সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে বলে জানান তিনি।
    মান্না গ্রেফতার হওয়ার পর গত তিন মাসে তার সঙ্গে যে সকল ব্যক্তির টেলিফোনে আলাপ হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সমাজ পরিবর্তন নিয়ে আলোচনায় মুখে ফেনা ওঠানো এক ব্যক্তি, দুইটি ছোট রাজনৈতিক দলের প্রধান (যারা ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক) ও বিএনপির একজন সাবেক মহিলা এমপি। ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা ৩৮ মিনিটে মান্নার সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হয় এক সংবিধান বিশেষজ্ঞের। ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১টা ৪৭ মিনিটে টেলিফোনে মান্নার সাথে আলাপ হয় বিএনপির সাবেক মহিলা এমপির। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ হয় মান্নার। ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে মান্নার সাথে ছোট একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের আলাপ হয় । ২২ ফেব্রুয়ারি টেলিফোনে মান্না অজ্ঞাত ব্যক্তির সাথে আলাপ করেছেন। এই সব টেলিফোন আলাপে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা প্রণয়নের কথা হয়েছে। সরকারকে আমরা উত্খাত করবো এবং খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সেই কথা ভুলে যাবেন- এমনও আলাপ হয়েছে। তবে সেই কাজটি যেন খালেদা জিয়া করতে না পারেন,  সে নীলনকশাও ফোনালাপে তৈরি করা হয়।ইত্তেফাক