শার্শা-বেনাপোলের সকল প্রান্ত মাদকের আখড়াঃচেয়ারম্যান

    0
    223

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭ফেব্রুয়ারী, এম ওসমান  শার্শা উপজেলা অডিটরিয়ামে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মাসিক আইন শৃঙ্খলা, চেরাচালান নিরোধ ও উন্নয়ন কমিটির পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ-উজ-জামানের সভাপতিত্বে এ সভায় প্রধাণ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, এ সকল কমিটির উপদেষ্টা ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু।

    প্রধাণ অতিথির বক্তেব্যে সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, আজকের যুব সমাজ মাদকের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হচ্ছে। এদেরকে বাঁচাতে বাবা-মায়ের পাশাপাশি পুলিশ-বিজিবিসহ সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একটু লক্ষ্য করলেই তা রোধ করা সম্ভব। এজন্য চাই পুলিশের বিশেষ ছাড়। সেটি হলো অন্তত পক্ষে- আপনারা কোন মাদক বিক্রেতার কাছ থেকে সাপ্তাহিক বা মাসিক উৎকোচ না নিলেই এক সময় এসব বিক্রেতারা মাদক ফেলে পালাবে বলে আমার বিশ্বাষ। আর মাদক পাওয়া না গেলে আজকের তরুণ ও যুবকেরা এপথ থেকে সরে আসতে বাধ্য হবে। এ সময় তিনি বলেন, একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় শার্শা-বেনাপোলের সকল প্রান্তে মাদকের আখড়ার পরিনত হয়েছে। রাস্তার আসে-পাশে, অলিতে-গলিতে মাদকের আখড়া তৈরি করে বিক্রি হচ্ছে ফেন্সিডিল-ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। এখনি তা রোধ করতে না পারলে একদিন আমরা অন্ধকারে নিমজ্জিত হবো। এজন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনকে মাদকের বিষয়ে ছাড় না দেওয়ার আহবান জানান।

    এ সময় বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমান বলেন, বেনাপোলের অলিতে-গলিতে ফেন্সিডিল ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের উম্মুক্ত আখড়া তৈরি হয়েছে। দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এ আখরাগুলোতে মাদক। সেখানে গিয়ে সমাজের তরুণ ও যুবকেরা মাদক সেবন করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এখনই এর প্রতিকার না করলে আমাদের যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। জাতি হারাবে উজ্জল ভবিষৎ।

    বিজিবি’র বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আয়ুব আলী সরদার বলেন, মাদক ও চোরাচালান দেশের জন্য এক ভয়ানক ক্যান্সার। তাই, মাদক ও চোরাচালানকে না বলতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা। বিজিবি’র পাশাপাশি পুলিশসহ সকল প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বরগণ মাদক ও চোরাচালানের দিকে একটু নজর রাখলে এই ক্যান্সার দূর করা সম্ভব বলে জানালেন এ বিজিবি কর্মকর্তা।

    নাভারণ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, গত দিনে আমার সামনেই নাভারণ বাজারের উপর হাইওয়ে সড়কে এক মধু বিক্রেতা ট্রাকের চাপায় পিষ্ঠ হয়ে মারা গেলো। মুহুর্তে তার মাথার মগজ ও কলিজা ১০/১২ হাত দূরে বেরিয়ে চলে গেলো যা আর আমাদের কাম্য নয়। এ মৃত্যুটি আমাকে খুব মর্মাহত হরেছে। তাই, এ যাবত সড়ক দূর্ঘটনায় চলে গেছে তাদের আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে, এর প্রতিকার প্রয়োজন। এজন্য তিনি রাস্তার পাশে ফুটপথের দোকান ব্যবসাকে বেশী দায়ী করেন। বলেন, প্রতিটি হাট-বাজারের উপর রাস্তার পাশের সকল ফুটপথের দোকান সরিয়ে ফেললে শতকরা ৫০ ভাগ সড়ক দূর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

    এ সময় শার্শা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিলের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, রাস্তার পাশে ফুটপথ জুড়ে দোকানগুলো সরিয়ে ফেলা একান্ত কাম্য। সেসাথে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারে যেখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা বিদ্যমান সেসকল স্থানে স্প্রীড ব্রেকার আবশ্যক। এ সাথে রাস্তার পাশে বড়ো করে পরিবহনের সংকেত স্বরুপ ঘন্টায় স্প্রীড কতো তা লিখে দিলে আরো ৪০ ভাগ সড়ক দূর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। এজন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জেলা আইন শৃঙ্খলা, চেরাচালান নিরোধ ও উন্নয়ন কমিটির আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসাথে তিনি বলেন, সম্মানীত সকল পরিবহন চালকেরা এখনো পর্যন্ত হাট-বাজার এলাকাসহ স্কুল কলেজ মোড়গুলো একটু সাবধানতার সহিত পরিবহনের কন্ট্রোল ক্ষমতা রেখে চালালে কোন সড়ক দূর্ঘটনা ঘটবেনা বলে আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত। যা উন্নত দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা অনুধাবন করতে পারি।

    এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আলেয়া আফরোজ, শার্শা ইউপি চেয়ারম্যান সোয়ারাব হোসেন, কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস, পুটখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার সরদার, গোগা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানূর রহমান, নিজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলীম রেজা বাপ্পি, শার্শা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ, কৃষি কর্মকর্তা হিরক কুমার সরকার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র মন্ডল, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব, প্রোকৌশলী কামরুজ্জামান, নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ তাজিয়া, শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আঃ রহিম, পুটখালী বিজিবি ক্যাম্প কর্মকর্তা সামছুর রহমান, ধান্যখোলা বিজিবি ক্যাম্প কর্মকর্তা শিশির প্রমুখ।