শফী পুত্র আনাসকে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে স্থায়ী বহিষ্কার

    0
    717

    আন্দোলনের মুখে হেফাজতে ইসলামের আমির ও আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম বা হাটহাজারি মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর পুত্র কেন্দ্রীয় হেফাজতের প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

    গতকাল (বুধবার) রাত ১০ টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসার শুরা সদস্য ও মেখল মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী এ ঘোষণা পাঠ করে শোনান।

    মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। মাওলানা নোমান ফয়জী বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতিসহ মোট তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুরা কমিটি। পাশাপাশি ছাত্রদের আর কোনো হয়রানি করবে না বলেও শূরা কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছে। আগামী শনিবার মজলিসে শুরার সব সদস্য মিলে বাকী সমস্যাগুলো সমাধান করবেন।

    আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম

    শূরায় উপস্থিত ছিলেন, ফটিকছড়ি নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক শূরার সদস্য মাওলানা সালাউদ্দিন, হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শূরার সদস্য মাওলানা নোমান ফয়েজী ও মাওলানা ওমর ফারুক।

    বুধবার দুপুরে জোহরের নামাজের পর থেকে আনাস মাদানির অপসারণসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে মাদ্রাসার সব গেইট বন্ধ করে ভেতরে আন্দোলন শুরু করে ছাত্ররা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ, র‍্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও মাদ্রাসার সব গেইট বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্কবস্থায় বাইরে অবস্থান করে। তবে প্রশাসন যাতে মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে সেজন্য মাদরাসার ছাত্ররা মসজিদের মাইকে বারবার মাইকিং করছিল।

    ছাত্রবিক্ষোভ ও ভাংচুর

    ছাত্ররা যেসব দাবি জানান সেগুলো হচ্ছে, আনাস মাদানিকে অনতিবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা বাস্তবায়ন সহকারে সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আল্লামা আহমদ শফী শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ায় পরিচালক পদ থেকে তাঁকে সম্মানজনক অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে। উস্তাদদের পুর্ণ অধিকার ও বিয়োগ নিয়োগকে সুরার নিকট পুর্ণ ন্যস্ত করতে হবে এবং বিগত শূরার হক্কানি আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদেরকে পদচ্যুত করতে হবে।

    দাবি আদায় না হলে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলেও মাইকে ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারী ছাত্ররা। তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি হলে দেশের সমস্ত কওমি মাদ্রাসায় আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে। আন্দোলন চলাকালে মাদ্রাসার ভেতরে আনাস মাদানিসহ তিন জন শিক্ষকের কক্ষ ভাংচুর করা হয়। শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে হেফাজত নেতা মঈনুদ্দিন রুহিকেও।

    শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তীব্রতা দেখে মাদ্রাসার আশপাশের দোকানদাররা তাদের দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়।ইরনা