র‌্যাবের এএসপি আনোয়ার কর্তৃক ইমাম-পুরোহিতদের খাদ্য সামগ্রী

    0
    236

    “মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও মন্দিরের পুরোহিতদের খাদ্য সামগ্রীসহ জীবানুনাশক স্প্রে কিনতে অর্থ সহায়তা প্রদান করলেন   শ্রীমঙ্গল র‌্যাব-৯’র আলোচিত এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম”

    জহিরুল ইসলাম.নিজস্ব প্রতিবেদক:  করোনাভাইরাস সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার মসজিদ-মন্দিরের ইমাম,মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন র‍্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
    রোববার (১০মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের হাতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেন র‍্যাব-৯ এর এই আলোচিত কর্মকর্তা।এ সময় মসজিদ ও মন্দিরগুলো নিয়মিত স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেন তিনি।
    গত মার্চের ২৬ তারিখ থেকে তিনি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, ,জুড়ি, বড়লেখা ও মৌলভবিাজার সদর উপজেলার,শ্রমজীবী,ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী,খাসিয়া,চা শ্রমিক, হিজড়া,মুচি, রিক্সা চালক এসব মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন দিনে ও মধ্যে রাত্রে শুধু তাই নয় মধ্যবিত্ত পরিবারের খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন।
    এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,সরকারের তরফ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও জেলার মসজিদ-মন্দিরসমূহে মুসলিম­পূণ্যার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।এপ্রেক্ষিতে গতকাল সারাদিন জেলার বিভিন্ন এলাকার মসজিদ ও মন্দিরের নেতৃবর্গকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালান র‍্যাব কর্মকর্তা এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম।

    স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তিনি ইমাম মোয়াজ্জিনদেরকে বলেন,মসজিদ আল্লাহর ঘর। আর এখানে যারা নামাজ আদায় করতে আসবেন, তারা আল্লাহর মেহমান।তাই নামাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনাদের উপর অর্পিত পবিত্র আমানত।আপনাদের অবহেলার কারনে একজন মুসলিম­ও যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে এর জন্য আপনাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।উপস্থিত ইমাম মোয়াজ্জিনদেরকে ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর পুরো মসজিদে জীবানুনাশক স্প্রে করা এবং মসজিদে ঢোকার পূর্বে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানান মানবিক করোনা যোদ্ধা এ র‍্যাব কর্মকর্তা।

    আমার সিলেটের এ প্রতিবেদক কে এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম জানান,”করোনা পরিস্থিতি স্বার্থকভাবে মোকাবিলা করার জন্য ধর্মীয় নেতৃবর্গের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কারন মসজিদ-মন্দিরগুলোতে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে না চলা হলে তা করোনা বিস্তারে বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।তাই প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে ও পরে পুরো মসজিদে স্প্রে করা,মন্দির গুলোতেও পূজা অর্চনার আগে ও পরে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।তাই আমি আমার নিজস্ব উদ্যোগে ইমাম -মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদেরকে সহায়তামূলক খাদ্যসামগ্রী প্রদান ও জীবানুনাশক স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থবিধি মেনে চলতে ওনাদেরকে সচেতন করার এই পদক্ষেপটি গ্রহণ করেছি। এ এসময় সারা দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকেও অনুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।”

    সহায়তাপ্রাপ্ত ইমাম,মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতেরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।তারা র‍্যাবের এএসপি মহোদয়কে সর্বাত্মক পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে মসজিদ-মন্দির পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেন।একাধিক ইমাম ও মোয়াজ্জিন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,দীর্ঘ চাকুরিকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অফিসার কর্তৃক এধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের নজির তারা কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। অনেকেই এসে বিভিন্ন পরামর্শ ও আদেশ-নির্দেশের কথা শুনিয়ে যান।কিন্তু ধর্মীয় নেতৃ বর্গের মধ্যে ত্রাণের বস্তা বিতরণ এবং স্প্রে করার সরঞ্জাম কেনার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ঘটনা আগে কেহ এমনটি করেনি।

    উল্লেখ্য,সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মানবিক ও পেশাদার কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন র‍্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।