রাষ্ট্রপতি আজ ৮ জানুয়ারি বুধবার সিলেট সফরে আসছেন

    0
    240

    তিনি প্রথমে হজরত শাহ জালাল রাহমাতুল্লাহে আলাইহির মাজার জিয়ারত করবেন পরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন বলে সুত্রে আশা করা হচ্ছে।

     

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাষ্ট্রপতি আলহাজ্জ মোঃ আবদুল হামিদ আজ (৮জানুয়ারি২০২০) বুধবার সিলেট সফরে আসছেন। সিলেট সফরকালীন সময়ে রাষ্ট্রপতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন আগামীকাল বুধবার।এতে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ব বিদ্যালয়ের আচার্য আলহাজ্জ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা থাকবেন কথা সাহিত্যিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এর আগে তিনি হযরত শাহজালাল রাহমাতুল্লাহে আলাইহি ও হযরত শাহপরাণ রাহমাতুল্লাহে আলাইহি’র মাজার জিয়ারত ও পরিদর্শন করবেন বলে একটি সুত্রে জানা গেছে।

    অপরদিকে ১৯৯১ সালে শাবি’র একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দু’টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল প্রথম সমাবর্তন এবং এর ৯ বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে সাবেক উপাচার্যবৃন্দ অনেকবার চেষ্টা করলেও আয়োজন করতে পারেননি তৃতীয় সমাবর্তন। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট ১১তম উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়ে সমাবর্তন দ্রুত আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন সেই সমাবর্তন সফল হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
    বিশ্ব বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব বিদ্যালয়ের ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করবেন। তৃতীয় সমাবর্তনে মোট ৬ হাজার ৭৫০ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে স্নাতকের ৪ হাজার ৬১৭ জন এবং স্নাতকোত্তরের ১ হাজার ১২৭ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া পিএইচডি ২ জন, এমবিবিএস ৮৭৮ জন, এমএস ও এমডি ৬ জন এবং নার্সিংয়ের ১২০জন শিক্ষার্থী। এদিকে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য ২০ জন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক দেয়া হবে। এর মধ্যে ১০ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও ৫ জনকে স্নাতকোত্তর ফলাফলের জন্য এবং দ্বিতীয় সমাবর্তনে বাদ থাকা ৫ জনকেও স্বর্ণপদক দেয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষদে প্রথম হওয়া ৮৯ শিক্ষার্থীকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হবে।
    দীর্ঘ এক যুগ পর সমাবর্তন হওয়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে। সমাবর্তনকে সফল করতে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
    এদিকে, সম্প্রতি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ঘোষণা দিয়েছেন চলতি বছরের ডিসেম্বরে চতুর্থ সমাবর্তনের আয়োজন করা হবে।
    সমাবর্তনকে সামনে রেখে বিশ্ব বিদ্যালয়কে সাজানো হয়েছে নতুন মোড়কে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সমাবর্তনস্থল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে রং-বেরংয়ের পতাকা এবং মরিচবাতি লাগানো হয়েছে, গোলচত্বরকে নতুনভাবে মেরামত করা হয়েছে এবং ফুল গাছ লাগানো হয়েছে, বিভিন্ন ভবনের সামনে এবং উপরে টানানো হয়েছে সমাবর্তনের ব্যানার-ফেস্টুন। ভবনগুলোতে নতুন করে রং করা হয়েছে। মূল প্যান্ডেল ও স্টেইজের কাজ  সম্পন্ন হয়েছে।

    বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির সিলেট আগমন উপলক্ষে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিদেশগামী দেশী বিদেশী যাত্রীদের বিমানবন্দরে চলাচলের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে যাওয়া-আসা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সিলেট সফরকালীন সময়ে সমাবর্তনে উপস্থিত ও বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য প্রয়োজনানুযায়ী সিলেট শহরস্থ বিভিন্ন প্রবেশমুখে রাস্তাঘাট ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হবে।
    এছাড়া জনসাধারণকে সন্দেহজনক ব্যাগ, থলে, পোটলা, সুটকেস, টিফিন ক্যারিয়ার বা এ জাতীয় কোন বস্তু পরিবহন না করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। কোন সন্দেহজনক ব্যক্তির আবাসিক এলাকা, মার্কেট বা আবাসিক হোটেলে অবস্থান বা চলাচল পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা জনগণ সাথে সাথে সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশকে অবগত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সন্ধান পেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসএমপি’র নিম্নবর্ণিত মোবাইল নাম্বারসমূহে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সাথে রাষ্ট্রপতির সিলেট সফর সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্নের নিমিত্তে এসএমপি নগরবাসী ও অন্যান্য স্থান থেকে আগত জনসাধারণের সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করা হয়েছে।

    জরুরী প্রয়োজনে :
    পুলিশ কন্ট্রোল রুম (২৪ ঘন্টা খোলা) ০১৭১৩৩৭৪৩৭৫, ০১৯৯৫১০০১০০, ০৮২১-৭১৬৯৬৮
    ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম- ০৮২১-৭১৮০২৮
    ডিবি কন্ট্রোল রুম- ০৮২১-৭২০০৬৬
    পুলিশ কমিশনার-০১৭১৩-৩৭৪৫০৬
    ওসি, কোতয়ালি-০১৭১৩৩৭৪৫১৭
    ওসি, জালালাবাদ-০১৭১৩৩৭৪৫২২
    ওসি,এয়ারপোর্ট-০১৭১৩৩৭৪৫২১
    ওসি, দক্ষিণ সুরমা-০১৭১৩৩৭৪৫১৮
    ওসি, শাহপরাণ(রঃ)-০১৭১৩৩৭৪৩১০
    ওসি,মোগলাবাজার-০১৭১৩৩৭৪৫১৯
    অতিঃ পুলিশ কমিশনার-০১৭১৩-৩৭৪৫০৭
    ডিসি (সদর ও প্রশাসন) ০১৭১৩-৩৭৪৫০৮
    ডিসি (উত্তর) ০১৭১৩-৩৭৪৫০
    ডিসি (দক্ষিণ) ০১৭১৩-৩৭৪৫১০
    ডিসি (ট্রাফিক) ০১৭১৩-৩৭৪৫১১

    সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি একদম শেষ পর্যায়ে। সবকিছু সুন্দরভাবেই আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি কখন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আসবেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট দিতে পারবো।’
    তিনি আরও বলেন, ‘চতুর্থ সমাবর্তন চলতি বছরের শেষের দিকে বিশেষ করে ডিসেম্বরে করার পরিকল্পনা রয়েছে।’ এরপর প্রতিবছরই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

    উল্লেখ্য,সমাবর্তনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার ও ক্যাফেটেরিয়া খোলা থাকবে। অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদেরকে আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে বিকেল আড়াইটার মধ্যে অবশ্যই সমাবর্তনস্থলে আসন গ্রহণ করতে হবে। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে শোভাযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মূল অনুষ্ঠান হবে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। সমাবর্তনে অবশ্যই নির্ধারিত আমন্ত্রণপত্র সঙ্গে আনতে হবে। মোবাইল ফোন, হাত ব্যাগ, ব্রিফকেস, ছাতা ও পানির বোতল, ক্যামেরা বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করা যাবে না। গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের দিন অতিথি নিয়ে আসতে পারবেন। তবে, অতিথিদেরকে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে একাডেমিক ভবন ‘ই’ ও ‘আইআইসিটি’ ভবনে অবস্থান করতে হবে। সমাবর্তনের দিন সন্ধ্যায় এবং পরদিন বৃহস্পতিবার মূল সনদপত্র বিতরণ করা হবে।