রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের সমঅধিকারে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

    0
    434
     প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    আমারসিলেট 24ডটকম , সেপ্টেম্বর  :  পুরুষের প্রতি নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের উপর গুরুত্বারোপ করে নারীদের উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের অধিকতর অংশগ্রহণই কেবল জাতির প্রকৃত উন্নয়ন ও অগ্রগতি অর্জনে সহায়ক হতে পারে। আজ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ও আইসিএপিপির বিশেষ উপদেষ্টা দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ইন্টারন্যাশানাল কনফারেন্সের এশিয়ান পলিটিকাল পার্টিজ (আইসিএপিপি)’র বিশেষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন। দুই বিশ্ব নেতা জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই এ অধিবেশনের জন্য রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তা প্রেরণ করেন। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পূর্ব এশিয়া) শেখ মুহাম্মাদ বেলাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
    নারীদের সমান অধিকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের সকল ক্ষেত্রে পুরুষের মত নারীদেরও সমান অধিকার থাকতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ ধরনের সমাজ গঠনের ভিশন ছিল। তার এ লক্ষ্য আমাদেরকে জেন্ডার নির্বিশেষে সবার জন্য সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে অনুপ্রাণিত করছে।
    বাংলাদেশের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পল্লীর নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের খাদ্য, সেবা ও সম্পদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও দারিদ্র্য হ্রাসে কাজ করছি। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে তার সরকার তাদের স্বল্পপুঁজির ব্যবসার জন্য ক্ষুদ্রঋণ দিচ্ছে এবং তাদেরকে স্থানীয় উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করেছে এবং উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত মেয়েদের বৃত্তি দিচ্ছে।
    শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমশক্তিতে বাংলাদেশের নারীদের অংশগ্রহণ ২০১০ সালের ২৪ শতাংশ থেকে বর্তমানে ৩৬ শতাংশে উন্নতি হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের সাফল্যে মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস পেয়েছে এবং এর মাধ্যমে জাতিসংঘের এমডিজি স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে।
    বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের আমলে তৃণমূল পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিধান করা হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে ১৪ হাজার নির্বাচিত ও জাতীয় সংসদে ৬৯ জন নারী প্রতিনিধি রয়েছে। পাঁচজন কেবিনেট মন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদে একজন হুইপ হচ্ছেন মহিলা। তিনি বলেন, সম্ভবত বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা ও সংসদ উপনেতা হচ্ছেন মহিলা।
    শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের বিচারবিভাগ, প্রশাসন, কূটনৈতিক এবং সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের উচ্চপদে আসীন হতে তাদের জন্য সরকারী চাকরির ৩০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও কাজ করছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন আনতে নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নে আমরা সফল দেশ ও সমাজের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবো। একজন নারী রাজনীতিক হিসেবে তিনি এশিয়ায় নারী নেতৃত্ব গড়ে তোলা ও তাদের ক্ষমতায়নে এ সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আশ্বাস দেন।
    শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, নারীনেতৃত্ব শীর্ষক এ বিশেষ সম্মেলনে বিশেষকরে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ তা আলোচনায় আসবে। এ সময় দেশে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির কারণে তিনি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণে অপারগতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী সম্মেলনগুলোতে তিনি যোগ দেবেন।