মৌলভীবাজার হাওর গুলো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত

    0
    259

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৭ডিসেম্বর,হৃদয় দেবনাথঃ শীত যতই বাড়েছে মৌলভীবাজারের হাওর গুলোতে অতিথি পাখির সংখ্যাও ততই বাড়ছে। হাওর গুলোর মধ্যে রয়েছে জেলার কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওর, রাজনগর উপজেলায় হাওর কাউওয়া দীঘী ,শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বাইক্ষা বিল।

    দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিসহ, কাউ্ওয়া দীঘী  ও বাইক্ষা বিলে  এবার অতিথি পাখির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয় হাওর তীরবর্তী এলাকা।বিশেষ করে ছোট বড় ২৩৮ বিলের সমন্বয়ে দেশের সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওরের প্রায় ১২% এলাকা জেলার কুলাউড়া উপজেলায় অবস্থিত এখানে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে অতিথি পাখি আসতে শুর করে।

    দেশের যে সবস্থানে অতিথি পাখির সমাগম হয় তার মধ্যে হাকালুকি হাওরে সবচেয়ে বেশি পাখির সমাগম ঘটে। এবার দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও শীতের আগমন বিলম্বিত হওয়ায় অতিথি পাখিও আসছে দেরীতে।তবে যতই শীত বাড়ে পাখির সংখ্যাও ততই বাড়ে।

    হাকালুকি হাওরে অতিথি পাখিদের অবাদ বিচরণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন কোষ্টাল ওয়েটল্যান্ড এন্ড বায়োডাইভারসিটি ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট হাওরে ১৪টি পাখির অভয়াশ্রম করে। কিন্তু এই প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অরক্ষিত হয়ে পড়ে অতিথি পাখিরা। সিডব্লিউবিএম প্রজেক্ট প্রতিবছর হাওরে পাখি শুমারি করে আসছে। সেই সাথে অতিথি পাখির অবাদ বিচরণ নিশ্চিত করায় প্রতি বছর হাকালুকি হাওরে অতিথি পাখির সমাগম বৃদ্ধি পায়।

    হাওরে পাহারাদার বসিয়েও রক্ষা হয়নি। কিছু অসাধু শিকারি বিষটোপে পাখি নিধন করতো। ফলে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাখি বিশেষজ্ঞসহ স্থানীয় সচেতন মহল।

    সিডব্লিউবিএমপি’র পাখি শুমারির তথ্য অনুসারে ২০০৬-০৭ সালের ৪২ প্রজাতির ৫২ হাজার, ২০০৭-০৮ সালে ৪০ প্রজাতির ১লাখ ২৬ হাজারের বেশি, ২০০৮-০৯ সালে অনুষ্ঠিত পাখি শুমারিতে হাকালুকি হাওরে মোট ৫৩ প্রজাতির মোট ৮৫ হাজারের বেশি  পাখি পাওয়া যায়।

    এরমধ্যে দেশীয় ২০ প্রজাতি এবং পরিজায়ী ৩৩ প্রজাতি। আইপ্যাক কুলাউড়ার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন তাদের প্রকল্প ও বার্ড ক্লবের সদস্যরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে পূর্বে হাকালুকি হাওরের নাগুয়া-ধলিয়া, গৌড়কুড়ি,উজান তুরল, নামা তুরল, চাতলা, হাল্লা, জল্লা, ফুয়ালা, বালুজুড়ি, ফুটবিল, কালাপানি, রঙ্গি, পর্তি, গুজুয়া, তেকোনা,বোয়ালজুড় বিলে শুমারীতে অংশ নেন।

    দু’টি দলে নেতৃত্ব দেন বার্ড ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক ও আইপ্যাকের সামাজিক ও অথনৈতিক পরামর্শক পল থম্পসন।

    নামাতুরুল বিলে একটি ধলাকপাল ছোট রাজহাঁস, পর্তিতে ১১টি উত্তরে টিকি ও র্জলায় ৬টি লাল নুড়ি বাটান এবং ফুটবিলে ১৩টি ধূসর পা রাজহাঁস পাখির দেখা মিলেছে । ৪টি বিরল প্রজাতির। বেশী দেখা গেছে টিকি হাঁস এর সংখ্যা ছিল ১০হাজার ৫৬৫টি। ২য় অবস্থানে লেঞ্জা, ৩য় অবস্থানে গিরি হাঁস। এদের সংখ্যা যথাক্রমে-৯৭১ ও ৪৫১৮টি।

    পরিবেশ অফিস সুত্রে জানা যায়, হাকালুকি হাওরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সংযুক্ত পাখি এখনও হাকালুকি হাওরে ফেরেনি। স্যাটেলাইট ট্রেকিং করে  ৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনেকগুলি পাখি ভারতে অবস্থান করছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। হাকালুকি হাওরে পূর্বে  অনুষ্ঠিত শুমারীতে হাকালুকিতে ৫৬জাতের প্রায় ৪৫হাজার পাখি দেখা যায়।