আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৯এপ্রিল,আলী হোসেন রাজনঃ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রিয়াদ নামের দেড় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার দিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে। রিয়াদ কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামের জসিম মিয়ার ছেলে।বর্তমানে তারা মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট এলাকায় বসবাস করছেন। শিশুর পিতা জসিম মিয়া (৩৫) জানান,তার ৪৫ দিনের শিশু পুত্র রিয়াদ মিয়া গত ১৭ তারিখে জ্বরে ভোগলে তিনি তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতলে নিয়ে আসেন । সেখানকার ডাক্তারের দেওয়া ব্যাবস্থাপত্র অনুযায়ী তার শিশু পুত্রকে ঔষধ খাওয়ান । রাতে ঔষধ খাওয়ানোর পর থেকে তার শিশুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাদেয়। পরদিন সকালে শিশুটির পেট ফুলে প্রসাব পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে তারা শিশুটিকে নিয়ে আবার হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে প্রায় ২ ঘন্টা অপেক্ষার পর চেষ্টা করেও কোন ডাক্তার দেখাতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েন তারা । পরে শিশুটির স্বজনদের অনুনয় বিনয় আর আহাজারীতে জরুরী বিভাগের একজন ডাক্তার কোন ধরনের পরীক্ষা নিরিক্ষা কিংবা ভর্তি ছাড়াই তাকে হাসপাতালের ৩ তলায় শিশু বিভাগে প্রেরন করেন । সেখানে তাকে অক্রিজেন দেওয়ার পর আর কোন ডাক্তার কিংবা নার্স তার পরিচর্যা বা খোঁজ খবর নেননি । বিকেল ৩ টার দিকে কর্তব্য স্টাফরা তাদেরকে জানান শিশুটি মারা গেছে । তখন জরুরী বিভাগে এসে শিশুটির স্বজনরা শুনতে পান সেখানকার দ্বায়িত্বরত ব্যাক্তিরা তাদের মধ্যেই কানাঘোষা করছেন ৩ তলায় পাটানোর আগেই নাকি শিশুটির মৃত্যু হয়েছে । তাদের এমন কথার রেশ ধরেই শিশুটির স্বজনরা তাদের কাছে জানতে চান তখন শিশুটি মৃত হলে কেন তাদেরকে ৩ তলায় পাটানো হল । এখবর কেন তারা আগে না জানিয়ে এমন প্রতারনা করলেন । এসময় শিশুটির স্বজনদের সাথে জরুরী বিভাগ ও শিশু ওর্য়াডের ডাক্তার ও নার্সদের সাথে বাক বিতন্ডাও হয় । লোক মুখে এমন ঘটনা ছড়াতে থাকলে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে শিশুটির স্বজন ও অনান্য লোকজন জড়হতে থাকে । ঘটনা বেগতিক দেখে হাসপাল কতৃপক্ষ তড়িগড়ি করে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে এবং পুলিশ ডেকে ঘটনাটি আড়াল করে । শিশুটির মা লাভলী বেগম (২৫)জানান , দুপুর পর্যন্ত তার শিশুপুত্রটি পেট ফুলে যাওয়া ছাড়া আর অন্য কোন লক্ষণ ছিলনা । তিনি আহাজারি করে বারবার মূর্চা যাচ্ছিলেন আর আবদার করছিলেন তার শিশু পুত্রটিকে ফিরীয়ে দেওয়ার । এসময় হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে হ্রদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয় । শিশুটির মামা মাসুদ আহমদ অভিযোগ করে বলেন আমরা ভাগনা জন্মের পর থেকে সুস্থ ছিল কিন্তু সামান্য জ্বর হলে যেই এই হাসপাতালের ডাক্তারের স্বরনাপর্ন হলাম তখনই তাদের গাফলতির শিকার হয়ে আমার ভাগনা কে মৃত্যুবরন করতে হল। মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ কামাল হোসেন জানান,খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: সুব্রত কুমার রায়ের সেলফোনটি বন্ধ পাওয়ায় হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ পালাশ রায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ডাক্তারের অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন এব্যাপারে চিকিৎসার কোনো অবহেলা ছিল না এবং যে ঔষধ গুলো দেওয়া হয়েছে তা সঠিক ছিল। উল্লেখ্য ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন অফিসের নৈশ প্রহরী রফিক আলী তার সন্তান সম্বাবনা স্ত্রী রেখা আক্তারকে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করলে বিনা চিকিৎসায় সে মারা যায়। পরে নৈশ প্রহরী প্রতিবাদ করলে পুলিশ এনে মামলার ভয় দেখিয়ে স্ত্রীর লাশ পুলিশ পাহারায় গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছর ১০ নভেম্বর আইরিন বেগম নামের এক মহিলার বগলের নীচে অপারেশন করতে গিয়ে ডাঃ সুব্রত কুমার রায় ভুল করে পত্তথলি অপরেশন করে কেটে ফেলেন। এ ব্যাপারে তার স্বামী বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করলে পুলিশ এনে হাসপতাল থেকে তারিয়ে দেয়া হয়।