হিজড়াদের উন্নয়নে সাংবাদিকদের করনীয় শীর্ষক সভা

    0
    474

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৮সেপ্টেম্বর,আলী হোসেন রাজন: মৌলভীবাজারে হিজড়া বা ট্রানজেন্ডার জনগোষ্ঠির উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকা ও করনীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে  ৭ সেপ্টেম্বর সকালে। বন্ধু সোশাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কার্যালয়ে স্থানীয় সাপ্তাহিক পাতাকুড়ি দেশ সম্পাদক এড. নুরুল ইসলাম শেফুলের সভাপতিত্বে ও বন্ধু সোশাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মৌলভীবাজার সদর ডিআইসি ম্যানেজার শরিফ মামুনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সাপ্তাহিক মৌমাছি কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ও বৈশাখী টেলিভিশনের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, বাংলানিউজ২৪ ডটকমের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান রাহেল, আমার সিলেট ২৪.কম এর প্রতিনিধি ও আমাদের মৌলভীবাজারের বিশেষ প্রতিনিধি আলী হোসেন রাজন, দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকা ও ৭১ নিউজ .টিভির মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি এ এস কাকঁন, দৈনিক সিলেট বাণীর  প্রতিনিধি মশাহিদ আহমদ, দৈনিক সিলেট সুরমার প্রতিনিধি  দুরুদ আহমেদ, এমদাদুল হক প্রমুখ।

    সভায় হিজড়াদের সমস্যা ও তাদের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে বদ্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদর ডিআইসি ম্যানেজার শরিফ মামুন ও কাউন্সেলর আব্দুলহুা আল-মামুন জানান- হিজরাদের উন্নয়ন ও পূনর্বাসণে সমাজের সকল ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে মাধ্যমে বিদ্যমান কু-সংস্কার, লিঙ্গ বৈষম্য ও তাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে সহায়ক হবে। গ্লোবাল ফান্ডের (জিএফএটিএম) অর্থায়নে আরসিসি প্রকল্পের অধীনে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় এমএসএম, এমএসডাবি ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে তাদেরকে প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে।

    হিজ্বড়াদের (ট্রানজেন্ডার) ফাইল ছবি
    হিজ্বড়াদের (ট্রানজেন্ডার) ফাইল ছবি

    উল্লেখ্য, হিজড়া মুলতঃ নারীও নয় আবার পুরুষও নয়- এধরনের একটি শ্রেণীকে আমরা প্রায়ই রাস্তাঘাটে কিংবা দোকানপাটে বিভিন্নরকম অঙ্গভঙ্গি করে চাঁদা তুলতে দেখি। আমরা যারা সভ্যসমাজের মানুষ, তারা এই অবহেলিত শ্রেণীটিকে ‘হিজড়া’ বলে ডাকি। হিজড়া নারী আর পুরুষের মত নয়, হিজড়াদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হিজড়া শব্দকে তারা অভিশাপ বা গালি হিসেবে মনে করেন। আসলে তারা হচ্ছেন, ট্রানজেন্ডার। প্রকৃতির নিয়তিতেই এরা স্বাভাবিক মানুষের পরিবর্তে হিজড়ায় রূপান্তরিত হয়। ঠিক যেমনটি ঘটে থাকে একজন প্রতিবন্ধীর ক্ষেত্রে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, প্রতিবন্ধীদের জন্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে এবং তাদেরকে সমাজের মূলস্রোতের অন্তর্ভূক্ত করতে নানারকম সরকারি-বেসরকারি আন্দোলন ও পদক্ষেপ দৃষ্টিগোচর হলেও হিজড়াদের কল্যাণে এরকম কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ে না আমাদের দেশে। সভ্যসমাজ থেকে একপ্রকার নির্বাসিত এই শ্রেণীটি তাই বিকৃত মানসিকতা নিয়ে গড়ে ওঠে। পেটের তাগিদে জড়িয়ে পড়ে নানারকম অপরাধমূলক কার্যক্রমে। অথচ ‘মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এসব হিজড়াদের সামাজিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে পারলে তারাও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
    ‘কোথা কবে রই ঘর জন ছেড়ে ঘুরি পথ পানে। খুঁজে ফিরি ধুঁকে ধুঁকে জীবনের মানে। তোমাদের মত আমরা যদিও নই, তবুও মানুষ। এই কথাগুলো হিজড়াদের মুখের ভাষা।’
    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৃথিবীতে দুই ধরনের হিজড়া রয়েছে। পুরুষের মতো শারীরিক গঠন আর মানসিকভাবে নারীর স্বভাব, তাদেরকে অকুয়া বলা হয়। এছাড়া, অন্য প্রকৃতির যারা তাদেরকে জেনেনা বলা হয়। অকুয়া ও জেনেনা জাতির হিজড়া হচ্ছে প্রকৃতির সৃষ্টি।

    চিকিৎসকরা জানান, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ডিম্বাণূু ও শুক্রাণু এক্স-এক্স প্যাট্ার্নে কণ্যা শিশু আর এক্স-ওয়াই প্যাটার্নে পুত্র শিশুর জন্ম গ্রহণ করে। জরায়ূতে ভ্রুনের বিকাশ হওয়ার সময় মায়েদের বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানুষিক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এক্স- এক্স- ওয়াই, আবার এক্স-ওয়াই-ওয়াই এর প্যার্টার্নে ছেলে বা মেয়ে হয়ে থাকে। এরপর জেনেটিক পরির্বতনের কারণে হিজড়ায় পরিণত হয়।আপডেট