মৌলভীবাজারে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভা

    0
    344

    ন্যায্য মজুরি, উৎসব বোনাস প্রদান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবি

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৭অক্টোবরঃ বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাার জেলা কমিটির নিয়মিত সভায় বর্তমান বাজার দরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা, আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজায় হিন্দু শ্রমিকদের উৎসব বোনাস প্রদান এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে দাম কমানোর  দাবি জানানো হয়। গতকাল সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনা এলাকার কার্যালয়ে অনুষ্টিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন।

    সভার শুরুতে সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস কেন্দ্রীয় কমিটির সার্কুলার ও জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট পাঠ করেন। পরে কেন্দ্রীয় সার্কুলার ও রিপোর্টের উপর আলোচনা করেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি আবদুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মীর মোঃ জসিমউদ্দিন, দর্জি শ্রমিক সংঘের সভাপতি ইসলাম উদ্দিন মাস্টার, রিকশা শ্রমিক সংঘের সভাপতি সোহেল আহমেদ, স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি আরজান আলী, চা-শ্রমিক সংঘের নেতা শিশুলাল লোহার, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, দপ্তর সম্পাদক তারেশ বিশ্বাস সুমন, সদস্য মোঃ জসিম উদ্দিন, কিসমত মিয়া ও মোস্তাক মিয়া প্রমূখ।

    এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন ধ্রবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক ও বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক ডা. অবনী শর্ম্মা।

    সভায় বক্তারা বলেন শ্রমিকের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে সৃষ্ট মুনাফায় মালিকরা মহাধুমধামে উৎসব উৎযাপন করলেও শ্রমিকদের সামান্যতম উৎসব বোনাস প্রদান করেন না, এমন কি অনেক শ্রমিককে বকেয়া বেতনও পরিশোধ করা হয় না। সম্প্রতি ঘোষিত শ্রম আইনের বিধিমালায় প্রত্যেক শ্রমিককে উৎসব বোনাস প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বক্তারা আরও বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির এই সময়ে সরকারের গ্যাস-বিদ্যুৎ-সিএনজি’র মূল্যবৃদ্ধি শ্রমজীবী জনগণের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়াসহ সর্বক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়েছে।

    অন্যদিকে সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ বেতনে ব্যাপক বৈষম্যের সৃস্টির সাথে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির ফলশ্রুতিতে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি ঘটবে। অথচ সরকার শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কোন উদ্যোগ নেননি। ন্যায্য মজুরি থেকে বি ত চা-শ্রমিকরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির এই সময়ে অনাহার-অর্ধাহারে জীবন নির্বাহ করছেন। তার উপর চা-শ্রমিকদের ছুটির দিনের মজুরি ও উৎসব বোনাস নিয়ে চলছে নানারকম ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত। এমতবস্থায় চা-শ্রমিকসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।

    সভা থেকে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন প্রণয়ন, ৮ ঘন্টা কাজ, পরিচয় পত্র, নিয়োগপত্র, সার্বিসবুক প্রদানসহ শ্রম আইন কার্যকর, সমকাজে সমমজুরি, চা-শ্রমিকদের দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিসহ সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মজুরি প্রদান, হোটেল ও স’মিলসহ বিভিন্ন সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম কার্যকর, মহাসড়কে বিকল্প লেন না করা পর্যন্ত তিন চাকার পরিবহণ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবি করা হয়।