মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সম্মেলন না হওয়ায় ঢাকার দিকে প্রার্থীদের দৌড়-ঝাপ

    0
    196

     

     আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২জুন,আলী হোসেন রাজনঃ মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি থেকে সম্প্রতি এক প্রেস বিঞ্গপ্তির মাধ্যমে ২০ জুন জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলের সময় জানানো হয়। কিন্তু সেই অনুযায়ী সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা তৎপর থাকলেও বিগত দিনের মত ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগের সম্মেলনকে ঘিরে মাঠে পর্যায়ে নেতাকর্মিদের মধ্যে ছিলো না কোন প্রানচা ল্য। শহরে নেই পোষ্টার ,ব্যানার, মিছিল,কিংবা সভা সমাবেশ। বর্তমান তিন সদস্য বিশিষ্ঠ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির মধ্যে সম্মেলন নিয়ে মতভেদ থাকায় আয়োজন ছিলোনা বলে অভিযোগ তৃনমূল কর্মিদের। শেষ পর্যন্ত অনিবার্য কারন বসত: সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মাঠ পর্যায়ে ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে যারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা হতাশ হয়েছেন। সভাপতি-সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যেও বিরাজ করছে হতাশা। তবে নতুন জেলা কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি-সাধারন সম্পাদক পদে আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্ত কেন্দ্র কমিটির কাছে জমা দিতে আহবান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।  এ খবর পেয়ে সভাপতি-সাধারন সম্পাদক প্রার্থীরা সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমর্থন আদায়ে দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন ।

    জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে জটিলতার অবসানের লক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১০ সালে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি মোহাম্মদ জাকারিয়াকে সভাপতি, হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক ও যোবায়ের আহমদ তপুকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয়।  তখন বি তরা এ কমিটি মেনে না নিয়ে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরপর থেকে একাধিকবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ মৌলভীবাজারে আসলেও বিভক্ত ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে এক টেবিলে বসিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়। আগামী জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে ২০ জুন জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলের সময়সূচী ঘোষণা করে কেন্দ্র কমিটি। এরপর থেকে  তদবির,গ্রুপিং,লবিংয়ে ব্যস্ত প্রত্যাশী সভাপতি-সাধারন সম্পাদক প্রার্থীরা ।

    জেলা ছাত্রলীগের একটি সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ দুই ধারায় বিভক্ত । আর এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে সহযোগী সংগঠনের উপর। আওয়ামীলীগ বা সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং-লবিং আরো জোড়দাড় হয়ে উঠে। আওয়ামীলীগের দুই ধারার মধ্যে একদিকে রয়েছেন বর্তমান সমাজকল্যানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী এমপি । অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান । সেই সাথে সাবেক চীফ হুইপ ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি,  সরকার দলীয় হুইপ শাহাবউদ্দিন আহমদ এমপি এবং জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নেছার আহমদ। বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া সমাজকল্যান মন্ত্রী বলয়ের আর সাধারন সম্পাদক হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বলয়ের বলে জেলায় পরিচিত। এবারও নতুন  জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই ধারার প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।  সভাপতি-সাধারন সম্পাদক প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের বাড়ী বাড়ী গিয়ে দোয়া ও আর্শিবাদ নিচ্ছেন। এদিকে সাবেক ছাত্রনেতা ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ নিজেদের পছন্দের প্রাথীদের পক্ষে জোড় তদবির করছেন বলে শুনা যাচ্ছে ।

    এদিকে  জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে তৃনমূল কর্মিদের কাছ থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে । তারা হলেন, আরিফ নেওয়াজ রফি, গৌউস উদ্দিন নিকসন, সৌদ আল সুফিয়ান সাগর, জাকির আহমদ অপু, রাজীব আহমদ, হাসান আহমেদ তারেক, আসাদুজ্জামান রনি, সাইফুল ইসলাম। তবে এবারের কমিটিতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুসারে বয়স ও ছাত্রত্বের উপর গুরুত ¡দেওয়া হবে বলে জানান অনেক কর্মিরা।

    প্রার্থীরা জানান, ২০ জুন ছাত্রলীগের সম্মেলন না হলেও কিছু দিনের মধ্যে নতুন কমিটি হবে শুনা যাচ্ছে। কেউ কৌশল করে সম্মেলন অনুষ্ঠান আয়োজন আটকে রাখতে পারবে না। দলের মেধাবী,ত্যাগী-পরিশ্রমী এবং ছাত্রলীগের গতিশীলতা আনা যাদের দ্বারা সম্ভব তাদের সমন্বয়ে ছাত্রলীগের একটি কমিটি গঠন হবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। তা কাউন্সিলরদের ভোটেই হউক আর কেন্দ্রের মনোনীত হউক তাতে আপত্তি নেই।

    সম্মেলন নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে আলাপ করলে তিনি জানান, প্রবিত্র রমজান মাস থাকায় সম্মেলনের আয়োজন করা যায়নি । তবে শ্রীঘ্রই কেন্দ্র থেকে নতুন জেলা কমিটি ঘোষনা করা হতে পারে।

    এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকতক জানান, কেন্দ্র নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন না হওয়ায় ২৩ জুন কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে একটি টিম মৌলভীবাজারে আসবে। জেলায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীরা সেই টিমের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিবেন।  সম্ভবত ১০-১৫ দিনের মধ্যে ত্যাগী ও প্রকৃত ছাত্রদের সমন্বয়ে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হতে পারে।