মৌলভীবাজারের আদালেবু রপ্তানি হচ্ছে যুক্তরাজ্যসহ মধ্যপ্রাচ্যে

    0
    290

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১২জানুয়ারী,জহিরুল ইসলামঃ সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার অ লের একটি বিশেষ ফল হচ্ছে আদালেবু। দেখতে সাধারণ লেবুর মতো, তবে কাজ করে সাতকরার বিকল্প হিসেবে। তেতো স্বাদের কারণে সাতকরার মতোই এর রসালো অংশ খাওয়া যায় না। তবে বহুগুণে সমৃদ্ধ ফলটি।

    টক আর অনন্য ঘ্রাণের সাইট্রাস জাতীয় এ ফলটির জন্ম ভারতের আসামে। সিলেট অ লের শ্রীমঙ্গলে যেমন চায়ের জন্য বিখ্যাত তেমনি বিভিন্ন জাতের লেবু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। বর্তমানে চাষ হচ্ছে ভারতের মেঘালয় ও সিলেটের কিছু এলাকায়ও। তরকারির স্বাদ বাড়াতে, মাছ-মাংস রান্নায়, আচার তৈরি, এমনকি ওষুধ তৈরিতেও এর জুড়ি নেই।

    মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার বকাছড়া, লাঠিছড়া, জুড়িছড়া, উত্তরকুচাইতল, পশ্চিম কুচুর গুল, শুকনা ছড়া, হায়া ছড়া, ডুমার বাড়ীসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এখন আদালেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ করে এ ফলের চাষ করে প্রায় পাঁচশ পরিবারে ফিরে এসেছে সচ্ছলতা। এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশ-পাশে পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আদালেবু চাষ করা না হলেও মালিকানাধীন ভূমিতে কাগজি লেবুর পাশা-পাশি বাগান ও বাড়ীতে আদালেবু চাষ করা হচ্ছে ।

    শ্রীমঙ্গল বাসা-বাড়ীতে সাতকরার পরিবর্তে এখন আদালেবু মাছ-মাংসের সাথে রান্না করে খাচ্ছেন। আগে এর ফলন কম ছিল এবং পরিচিতি ছিলনা। জুড়ি লাঠিছড়া এলাকার আদালেবু চাষী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি জানান, আগে কমলা চাষ করতাম।

    হঠাৎ করে কমলা গাছ গুলো মরে যাওয়ার কারণে এখন কমলা চাষে আগ্রহ হারিয়েছে। আর কমলা চাষে খরচ বেশি। আর এখন আদালেবু চাষ করি। প্রায় ৪৫ শতাংশ জমির মধ্যে আদালেবু চাষ করে অনেক লাভবান হইছি।

    এক সময় কৃষি অফিসের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদারকি করতো এখন তাদেরকে খুজেও পাওয়া যায় না । যার ফলে আমরা আদালেবু চাষে মনোযোগি হয়েছি। খরচ কম লাভ বেশি আর গাছ সহজে মরে না।

    আরেক আদালেবু চাষী সোহেল জানান ,তিন হাজার পাঁচশত আদালেবুর গাছ ১২ মাস পরিচর্যা করি। বছর একলক্ষ টাকার আদালেবু বিক্রি করেছি। এবছর আশা করি দুই লক্ষ টাকার লেবু বিক্রি করতে পারছি।

    আর একই কথা জানালেন, বাবুল মিয়া ও জয়নাল আবেদিন। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন বলেন, ফলটি মূখরোচক সেজন্য দেশে বিদেশে চাহিদা রয়েছে।

    যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে ও এর চাহিদা বেড়েছে। সরকারীভাবে প্রকল্প কিংবা পাইলট কর্মসূচীর মাধ্যমে সহযোগীতা করলে ভবিষ্যতে কৃষকরা আদালেবু চাষে আরো উৎসাহিত হবে ।