মৃত্যুর প্রহর গুনছে তামাবিল আপঃঘটতে পারে প্রাণহানি

    0
    508

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০জুলাই,রেজওয়ান করিম সাব্বির: সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক যেন এক মরন পুরির নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহর নামে যাত্রা করে যাত্রীবাহি সকল পরিবহন। রাস্তার দূর্ভোগের জন্য পর্যটন শিল্পে নেমেছে ধস। উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপের প্রত্যাশা সকল ব্যবসায়ী, পরিবহন মালিক ও পর্যটক ও যাত্রী সাধারনের। syl 2
    সরেজমিনে পর্যটন এলাকা তামাবিল ও জাফলং ঘুরে দেখা যায় সিলেট-তামাবিল মহ সড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার চাঙ্গীল, রাংপানি, আসামপাড়া, শ্রীপুর, আলুবাগান, নলজুরী, সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র, তামাবিল পোর্ট, তামাবিল আপ, মোহাম্মদপুরন বল্লাঘাট রাস্তার ভয়বাহ চিত্র। জৈন্তাপুর থেকে প্রায় ২০কিলো রাস্তা এখন মরনপুরি হিসাবে মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে।

    এছাড়া ২০কিলো রাস্তায় অন্তত ছোট বড় প্রায় ২হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২শত পুকুর আকৃতির গর্ত রয়েছে। সিলেট সহ সারাদেশের তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা এক নজর পর্যটন এলাকা প্রকৃতিকন্যা খ্যাত জাফলং ঘুরতে আসেন। এছাড়া পর্যটনকে কেন্দ্র করে বেসরকারি সংস্থার সাথে পাল্লা দিয়ে সরকারি ভাবে এখানে গড়ে উঠেছে কয়েকটি পর্যটন মোর্টাল।syl 3

    তার মধ্যে অন্যতম তামাবিল সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্র, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পর্যটন মোটাল, সিলেট বন বিভাগের গ্রীণপার্ক, নলজুরীস্থ জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, জাফলং পিকনিক রেষ্টুরেন্ট, বেসরকারি ভাবে সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম কামরানের মালিকানাধিন নাজিমগড় রির্সোট সেন্টার, বাবরুল হোসেন বাবুল এর মালিকানাধিন জৈন্তিয়া হিল রির্সোট।

    এছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে সিলেটের সর্ববৃহত প্রভাবশালী শিক্ষানুরাগী, দানবীর বাংলাদেশ পূবালী ব্যাংক এর পরিচালক হাফিজ আহমদ মজুমদারের মালিকানাধিন জাফলং ভ্যালী স্কুল এছাড়া রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহত পাথর খনি জাফলং পাথার কোয়ারী, তামাবিল আন্তজার্তিক স্থল বন্দর।syl 5

    সরকার এসকল প্রতিষ্ঠান হতে বৎসরে কয়েক শত কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। তাছাড়া এই মহা সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে লক্ষ লক্ষ যাত্রী ও পর্যটক। ২০০০সনে সিলেট তামাবিল মহাসড়কটি জাতীয় সড়কে তৎকালীন মহান জাতীয় সংসদের প্রয়াত স্পীকার  হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী ও প্রায়ত জননেতা আব্দুস ছামাদ আজাদ জৈন্তাপুরস্থ সওজের ডাক বাংলো সম্মুখে এশিয়ান হাইওয়ে মহাসড়কের ভিত্তি প্রস্তরের মধ্যে দিয়ে সড়কটির এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক হিসাবে রুপান্তরিত করেন।

    হাইওয়ে সড়ক নির্মানের পর থেকে সড়কটি সংস্কার কাজের উদ্যোগ গ্রহন করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাঝে মধ্যে কিছুটা সংস্কার করা হলে তাতে চলে ব্যাপক কারচুপি। আর সড়ক সংস্কারের নামে চলে লুটতরাজ। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হন কিছু সংখ্যাক নেতারা।

    বর্তমানে ঢাকা-শিলং রুটে আর্ন্তজার্তিক মানের বাস সার্ভিস চালু হলেও রাস্তার কারনে তাও বন্ধ হয়ে পড়েছে। কাগজে কলমে বাস চালু থাকলে বাস্তবে তামাবিল রোড দিয়ে বাস চলাচল করছে না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান। এদিকে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা আসা যাওয়া কিংবা স্থানীয় সংসদ সদস্য হোটেল ও মোটালের মালিকরা আসা যাওয়া করছেন কালো চশমা পড়ে থাকেন। তারা জৈন্তাপুর হতে জাফলং পর্যন্ত প্রায় ২০কিলো রাস্তার এমন বেহাল দশা চোখে পড়ছে না।syl 6

    ২০কিলো রাস্তার মধ্যে তামাবিল আপ যেন মৃত্যু প্রহর গুনছে। গত ১৯জুলাই সাড়ে ১২টায় সিলেট-ব-৬০১৯ যাত্রীসেবা নামক মিনিবাস ছোট বড় প্রায় ৭০জন যাত্রী নিয়ে জাফলং যাওয়ার প্রক্কালে দূর্ঘটনার সম্মুখিন হয়। চালকের অসাধারণ দক্ষতার কারনে প্রাণহানির মত দূর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পায় যাত্রী সাধারণ।
    বিষয়ে সিলেট-তামাবিল মহা সড়কের বাস চালক শ্রমিক ও সিলেট জেলা ট্রাক চালক শ্রমিকরা জানান- আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে গাড়ী চালাচল করি। ট্যাক্স না দিলে গাড়ীর ফিটনেস না থাকলে সরকারের পুলিশ আমাদের নানা ভাবে হয়রানি করে। আর দূর্ঘটনা ঘটলে আর উপায় নেই। আমরা পুকুরের পর পুকুর পাড়ি দিয়ে যাত্রীদের কাঁদে নিয়ে মানবসেবা কিভাবে করব।
    এবিষয়ে তামাবিল চুনাপাথর, পাথর কয়লা আমদানী কারক গ্র“প সভাপতি গোলাম নবী ভূইয়া এবং যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু জানান- রাস্তার এমন চিত্রের কারনে মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। কারন হিসাবে উল্লেখ করেন- রাস্তার গর্তে পড়ে গাড়ী গুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়ছে ফলে পরিবহন মালিকরা কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়।

    অপরদিকে পর্যটকরা এখন জাফলং আসতে চায় না। ফলে পর্যটন শিল্প, পাথর শিল্প, আমদানি ও রপ্তানি শিল্প এখন হুমকির মুখে। আমাদের দাবী সরকারের উচ্চ মহল বিষয়টি দ্রুত আমলে নিয়ে রাস্তা সংস্কার করে শিল্প গুলোকে রক্ষার দাবী জানান।