মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

    0
    403
    "বক্তব্য
    মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

    ঢাকা ১৭ এপ্রিল : আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। এ উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসাবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা।

    প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ,  স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা আওয়ামী লীগ, ওলামা লীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। এ ছাড়া আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল। এর আগে ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন এবং দেশের সব জেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। 

     

    মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম বাগানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। এরপর থেকেই বৈদ্যনাথ তলা মুজিবনগর দিবস হিসাবে পরিচিত। পালন করা হয় মুজিবনগর দিবস হিসেবে। অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্বে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। এরপর ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয় সেই ঘোষণাপত্রে। ঘোষণাপত্রে দেশের সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া তাজউদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে প্রচার করা হয়। তাজউদ্দিনের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে শপথগ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরদিন এ খবর দেশ বিদেশের পত্র পত্রিকা এবং সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়।

    অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্মরণ করে বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। ইতিমধ্যে স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর অতিক্রান্ত হলেও আমরা আজও সে লক্ষ পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে দেশের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জেনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে গঠনমূলক কাজে এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।

    প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, জাতির চরম দুর্দিনেও যে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা ঊর্ধ্বে তুলে এগিয়ে চলা যায়, ১৭ই এপ্রিল জাতীয় ইতিহাসে তারই এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত এবং সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি ধ্বংস করতে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তৎপর উল্লেখ করে তাদের প্রতিহত করতে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঢাকা ও মুজিবনগরে দুদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সকালে বনানী কবরস্থান ও রাজশাহীতে শহীদ জাতীয় নেতাদের সমাধিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ ছাড়াও মুজিবনগরের জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।

    শ্রীমঙ্গলে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের পটভূমি তাপর্যের উপর আলোচনা

    মকবুলহাসানইমরান

    শ্রীমঙ্গলে প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা অডিটরিয়ামে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের পটভূমি ও তাৎপর্যের উপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  শ্রীমঙ্গল নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাকুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরপদার, মুক্তিযোদ্ধা ফোরকান উদ্দিন বীর প্রতিক, ১ নং মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া প্রমূখ।

    বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাকুল হক চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া প্রমূখ। ------- মকবুল হাসান ইমরান
    বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাকুল হক চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া প্রমূখ।
    ——- মকবুল হাসান ইমরান