মুক্তিযুদ্ধের গবেষণামূলক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস

    0
    278

    তৃণমূল পর্যায় থেকে তথ্যভিত্তিক সঠিক ঘটনা তুলে এনে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণামূলক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে বাংলা একাডেমি।মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯টি জেলাকে ভিত্তি ধরে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী লেখা হচ্ছে এ ইতিহাস।বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রাম যে শুধু মুক্তিযুদ্ধ নামে পরিচিত ছিল তা নয় । এটা যে একটি জনযুদ্ধও ছিল তা জেলা ভিত্তিক ১৯ খণ্ডে রচিত ইতিহাসে উঠে আসবে বলে একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান জানান।

    তিনি বলেন, একটি কর্মসূচীর আওতায় একাডেমি এ কাজ করছে। ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন ময়মনসিংহ জেলার ইতিহাস গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার জনযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হবে। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের মধ্যে ১৯ জেলার ১৯ খন্ডই গ্রন্থাকারে বাজারে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেন।কর্মসূচীটি সম্পন্ন হলে মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি গবেষণামূলক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে বলেও তার বিশ্বাস।

    কর্মসূচীর সমন্বয়ক ও একাডেমির পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জী বাসস’কে বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার ইতিহাস গ্রন্থাকারে প্রকাশের জন্য এখন ছাপার কাজ চলছে। খুলনা জেলার পান্ডুলিপির এডিটিং শেষ হয়ে গেছে। সেটিও শিগগিরই ছাপাখানায় চলে যাবে।

    তিনি বলেন, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তিযুদ্ধের গবেষণামূলক এই ইতিহাস সংগ্রহ ও পান্ডুলিপি তৈরির কাজ করেছেন ড. আমিনুর রহমান সুলতান। কুষ্টিয়া জেলা নিয়ে কাজ করেছেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।এছাড়া ছাপাখানায় আরো যে ক’টি জেলার পান্ডলিপি রয়েছে তার মধ্যে ফরিদপুর জেলার ইতিহাস তৈরির কাজটি করেছেন ড. তপন বাগচী, কুমিল্লা জেলারটি সান্তনু কায়সার, নোয়াখালী জেলারটি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও খুলনা জেলার তথ্য সংগ্রহ ও পান্ডুলিপি তৈরির কাজটি করেছেন স্বরচীষ সরকার।

    তিনি বলেন, অবশিষ্ট ১৩টি জেলার মধ্যে ১১টির পান্ডুলিপি একাডেমীর এডিটিং বিভাগে রয়েছে। বাকি দুটি জেলার পান্ডুলিপিও শিগগিরই জমা পড়বে। এসব জেলা থেকেও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে ও গবেষণামূলক এসব গ্রন্থের পান্ডলিপি তৈরির কাজ করছেন দেশের প্রতিথযশা বুদ্ধিজীবী ও ইতিহাসবিদগণ।তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিকৃতি রোধে বর্তমান সরকার উদ্যোগী হলে বাংলা একাডেমি গত বছরের (২০১২) মার্চে জনযুদ্ধ তথা মুক্তিযুদ্ধের অবিকৃত ইতিহাস তৈরির এ কর্মসূচীটি গ্রহণ করে।

    একাডেমি এতে যোগ্যতাসম্পন্ন যেসব ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়েছে, তারা সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে মাঠ পর্যায়ের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এবং তা যাচাই করেই তৈরি করেছেন পান্ডুলিপি।এতে দেখা গেছে, এসব পান্ডুলিপিতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এমন অনেক ঘটনাপ্রবাহ উঠে এসেছে, যা আগে অনেকেরই জানা ছিল না। ১৯ খণ্ডের এ ইতিহাসে এমনও ব্যক্তির নাম পাওয়া যাবে, যার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নেই, অথচ এই জনযুদ্ধে তার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।

    তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪২ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে আনতে এটাই হবে গবেষণামূলক সবচেয়ে বড় কাজ। আর বাংলা একাডেমী জনযুদ্ধ হিসাবে গুরুত্ব দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরির এ কাজটি করছে।দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তথ্যভিত্তিক সঠিক ঘটনা তুলে এনে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণামূলক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে বাংলা একাডেমি।