মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবেঃড.মিজান

    0
    195

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২ফেব্রুয়ারী: চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা শতক ছাড়িয়ে যাওয়াকে জাতির জন্য লজ্জা ও বেদনার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তার মতে, সহিংসতা আর নাশকতার নামে যা চলছে সেটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।

    তিনি বলেন, “আপনারা জানেন আজকে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা শতক ছাড়াল। এমন শতক আমরা কখনও চাই না। এমন শতক আমাদের ছোট করে। এটি জাতির জন্য বেদনার, লজ্জার।”
    রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান এ কথা বলেন। ‘জ্বালাও পোড়াও অবরোধ হরতাল এবং নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিবাদে’ এই সভার আয়োজন করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন বিশ্ব প্রবাসী বাংলাদেশি। অনুষ্ঠানে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করা হয়।

    অনুষ্ঠানে মিজানুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি নিয়ে আমরা সারা বিশ্বে গর্ব করতে পারি। কিন্তু আজকে বাসে-ট্রাকে-রেলে আগুন দিয়ে, মানুষ হত্যা করে সব অগ্রগতি ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।?”

    মিজানুর রহমান আরও বলেন, “রাজনীতির নামে দেশে যা চলছে সেটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। অথচ জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব বান কি মুন এবং সাবেক মহাসচিব কফি আনান বলেছেন আপনার দাবি যদি নায্যও হয় তবুও সেটি আদায়ে কখনও সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। যারা আজকে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছেন তাদের কী দেশের জন্য কোনো ভালোবাসা নেই। তারা কী বার্ন ইউনিটের নারী-শিশু-সাধারণ মানুষের আতর্নাদ শুনতে পান না?”

    মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “যারা জ্বালাও পোড়াও করছেন তারা মনে রাখবেন মানুষের ধৈর্য্যচুতি ঘটলে আপনারা ধ্বংস হয়ে যাবেন। আর রাষ্ট্রকে বলছি রাষ্ট্রের কাজ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া। যেকোনো উপায়েই সহিংসতা বন্ধ করে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে।”

    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে মিজানুর রহমান বলেন, ‘“কারও খাবার পৌঁছানো বন্ধ করার মধ্যে কৃতিত্বের কিছু নেই। বরং যারা পেট্টোলবোমা হামলা চালাচ্ছেন তাদেরকে চিহ্নিত করুন। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনুন। সেটিই আপনাদের দায়িত্ব। সেটি করতে পারলেই মানুষ আপনাদের বাহবা দেবে। তবে সেটি করতে গিয়ে কোনোভাবেই যেন নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। গ্রেপ্তার বাণিজ্য যেন না হয়। কারণ সেটি হলে এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া যাবে না।”

    অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হল্যান্ড প্রবাসী শামীম হক। আরও বক্তব্য দেন, ইতালি প্রবাসী শাজাহান মোবারক, মালয়েশিয়া প্রবাসী রেজাউল করিম, নরওয়ে প্রবাসী আসগর আলী, চীন প্রবাসী এমডি জনি, সৌদি প্রবাসী আইয়ুব আলী, জার্মান প্রবাসী গোলাম কিবরিয়া, কোরিয়া প্রবাসী জাকির হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আতাউর রহমান শামীম, বেলজিয়াম প্রবাসী নুরুল হাসান, ইতালি প্রবাসী আবু সাঈদ, জার্মানি প্রবাসী বশিরুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। সভাটি পরিচালনা করেন তুরস্ক প্রবাসী এম এ ফারুক।

    আয়োজকেরা জানান, অনুষ্ঠানে ৪৩টি দেশের কয়েকশ প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন। এ সকল প্রবাসীরা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এক কোটি প্রবাসী উদ্বিগ্ন। তারা সবসময় স্বজনদের নিয়ে দুশ্চিত্মায় থাকেন। আর এই সহিংসতা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ছোট করছে। চলমান এই সহিংসতা বন্ধের জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান প্রবাসীরা। একইসঙ্গে সহিংসতা বন্ধে কঠোর হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন।