আমারসিলেট24ডটকম,১৭মার্চঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মসজিদে নামাজ পড়তে না দেওয়ায় বিষ পানে আত্মহত্যা করেছেন কাজী আবুল হোসেন (৬৫) নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। তিনি উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের খুরুইল গ্রামের মৃত কাজী ইব্রাহিম খলিলের ছেলে। রবিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লায় পাঠিয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শনিবার মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল হোসেন নিজ বাড়ির পাশে খুরুইল উত্তর পাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটি জোর করে মাটি কেটে নিয়ে গেলে তিনি তাতে বাঁধা দেন। তাঁর বাধা উপেক্ষা করে মাটি কেটে নিয়ে মাদ্রাসায় ফেলা হয়। ওই দিনই তিনি মুরাদনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনারস্থলে এসে মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়।
এরপর রবিবার বিকেলে আবুল হোসেন আসরের নামাজ পড়তে মসজিদ গেলে কমিটির মনির হোসেন, মহসিন, নোমান ও মনির মিয়া তাঁকে নামাজ পড়তে না দিয়ে অপমান করে মসজিদ থেকে বের করে দেন। তাদের এ অপমান সহ্য করতে না পেরে বিকেলে তিনি বিষ পান করেন। তাঁকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুরে একটি বিষ নিরাময় কেন্দ্রে ও পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।নিহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার মাসে স্বাধীন দেশে রাজাকারদের ছেলেরা আমাদের জায়গায় মাটি কাটায় বাঁধা দেওয়ায় বাবাকে নামাজ পড়তে না দিয়ে অপমান করে মসজিদ থেকে বের করে দেয়। বাড়িতে এসে মায়ের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বাবা বলেন, স্বাধীন দেশে এখন রাজাকারদের ছেলেরা আমাকে এভাবে অপমান করে আল্লাহর ঘর মসজিদ থেকে বের করে দিল! আমার এ জীবন থেকে লাভ কি?” এর পরই সন্ধ্যায় মাকে না জানিয়ে বাবা বিষ পানে আত্মহত্যা করেন।
মুরাদনগর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন থানায় অভিযোগ করার সাথে সাথে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়। মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিবে বলে রাজি হন আবুল হোসেন। পরে মসজিদ কমিটির ৪/৫ জন লোক তাঁকে অপমান করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হবে। যারা তাঁকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করেছে তাদেরকে ধরার জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।কালের কণ্ঠ,