ভূমিখেকোদের থেকে সম্পত্তি উদ্ধারে নবীগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন

    0
    577

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১অক্টোবর,নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার লন্ডন প্রবাসী মৃত আব্দুল সবুরের পুত্র শাহীন আহমেদ তার পৈতিক সম্পত্তি ফিরে পেতে ও স্বার্থন্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

    মঙ্গলবার বিকেলে বিভিন্ন মিডিয়ার সাবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাহীন আহমেদ তার সৎ মা আছিয়া মোক্তারী, দলিল লেখক যুবরাজ ঘোপ, ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আমিনুর রহমান, মিনহাজপুরের জাহাঙ্গীর, দৈওতলের মোঃ নুরুজ্জামান ও গোপলারবাজার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জুলসহ একদল সংঘবদ্ধ ভূমিখেকো চক্র তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন।

    সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্যে শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমার পিতা ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোলডোবা গ্রামের আব্দুল সবুর মিয়া তিনি ১৯৬৩ সালে লন্ডনে যান। এবং দীর্ঘদিন তিনি লন্ডন প্রবাসে ছিলেন। তিনি আয়- উপার্জন করে ওই উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নস্থ আউশকান্দি (হীরাগঞ্জ) বাজারে ৯ শতাংশ ভুমি ক্রয় করে তাতে ৩ তলা ভবণ নির্মান করেন। এমনকি আমার পিতা উনার নিজ নামে “সবুর ম্যানশন” নির্মান করেন।

    শাহীন বলেন, ‘আমার পিতা দুটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী আমার সৎ মায়ের ঔরষে ৩ পুত্র ও ৪ কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। এবং আমার পিতার দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে আমি শাহীন জন্ম গ্রহন করি। আমার পিতা সৎ মা ও সৎ ভাই বোনদের লন্ডনে নিয়ে যান।

    সেই সময়ে আমাকে যাতে লন্ডন না নিতে পারেন, কোন ভূমি যেন আমার নামে না দিতে পারেন জন্য আমার পিতার উপর দীর্ঘদিন নির্যাতন চালান আমার সৎ মা আছিয়া মোক্তারী। সর্বশেষ অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে নিজ বাসা আউশকান্দি সবুর ম্যানশনে। ওই দিনই আমার পিতা আব্দুল সবুর জীবনের শেষ মুহুর্তের অন্তিম সময়ে আমার সৎ মা আছিয়া মোক্তারীকে হবিগঞ্জ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে মাধ্যমে তালাক প্রদান করে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন। ওই সময় তালাক নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকাও খবর ছাপিয়েছিল।

    ওই সময় আমার পিতাকে নির্যাতনের ঘটনা ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য আছিয়া মোক্তারী আমাকে যিনি লালন পালন করতেন আমার বড় চাচাকে আসামী করে হবিগঞ্জ আদালতে (৩৮/০৭) একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে আরো একাধীক মামলা দায়ের করেন যা এখনো বিচারাধীন আছে।

    শাহীন আহমেদ তার বক্তব্যে আরো বলেন, ২২ মার্চ ২০১৬ তারিখে আমার পিতার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আছিয়া মোক্তারী ভূমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমার প্রকৃত অবস্থা গোপন রেখে দলিল লেখক যুবরাজ গোপ ও সার্ভেয়ার আমিনুরের সাথে মিলে ত্যাজ্যবিত্তে স্বামীর উত্তরাধীকার হইয়া ভূল তথ্য দিয়ে নামজারি বাতিল করে একই তারিখে ৪৫৭৯/৮৮ নং দলিল হইতে চেয়ারম্যান কতৃক উত্তরাধীকারী সনদ ব্যাতীত ফুলন জামান ও মিজানুর রহমান বরাবরে ২০ শতক ১২২৩/১৬ নম্বর দলিলে বিক্রি করেন। অন্যটি ৩৯৭৬/০৩ নম্বর দলিল হইতে ফুলন জামান বরাবরে ৩ শতক ১২২৪/১৬ নং দলিলে রেজিষ্ট্রি  করে দেন।

    এখানে ত্যাজ্যবিত্তে ও ক্রয়মূলে মালিক দাবী করে বিক্রি করেন। সবুর ম্যানশনটি দানপত্রে মালিক হয়ে জাহাঙ্গির মিয়ার নিকট বিক্রি করেন। ত্যাজ্যবিত্তে  তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী কখনো ভূমির মালিক হতে পারেন না। শুধু মাত্র আমাকে আমার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বি ত করতে মাষ্টারপ্লান করে বিক্রি করা হয়েছে।

    শাহীন আরো বলেন, দলিল তৈরীর পরপরই দলিল লেখক যুবরাজ গোপ আমাকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে বলে আমার পিতার তৈরী বসতঘর থেকে আমি দখল ছেড়ে চলে যেতে। এতে আমী রাজি না হওয়ায় উচ্ছেদের জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। একপর্যায়ে দেওতৈল গ্রামের নুরুজ্জামান দলিল লেখক ও সার্ভেয়ারকে নিয়ে ভূমিতে ক্রয়সূত্রে মালিক মর্মে কয়েকটি সাইনবোর্ড বানিয়ে দেয়। পরে আমার বিরুদ্ধে চুরির মামলা দিয়ে বসত ঘর থেকে মারপিট করে বের করে দেওয়া হয়।

    শাহীন আরো বলেন, আইশকান্দি মৌজার ১৫৫ দাগে ৩৮ শতক, মিঠাপুর মৌজার ১৭৫ দাগে ৯ শতক ভূমির উপর চেয়ারম্যান কতৃক সনদ অনুসারে দীর্ঘদিন ধরৈ নামজারীর দাবী জানিয়ে আসছি। সে মোতাবেক ১৫ শতক ভূমি আমাদের নামে ভূমি কর্মকর্তা নামজারী দেন। যা সঠিক হয়নি। আমি পূণরায় আবেদন জানালে ২৫/০৯/১৬ইং তারিখে এক শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। ওই আমাকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে সম্পূর্ণ বি ত করা হয়।

    শাহীন তার বক্তব্যে সাংবাদিকদের আরো বলেন, তার সৎ মা আছিয়া তাকে পিতার সম্পত্তি থেকে বি ত করতে ভূয়া দলিল তৈরি করে জাল স্বাক্ষর করে নামজারি করেছেন। শাহীন আরো  বলেন- আমার পিতা মারা যান বিগত ২০০৮ সালের ১৪ ই আগষ্ট। কিন্তু ১৯ শে জুন ২০১৬ সালে আমার পিতাকে উপস্থিত হবার জন্য সহকারী কমিশনার (ভুমি) নবীগঞ্জ থেকে একটি নামজারি সংক্রান্ত নোটিশ তার নামে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই তারিখে আমার পিতাকে উপস্থিত দেখিয়ে তার স্বাক্ষর দেয়া হয়।

    কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমার মৃত পিতা কিভাবে স্বাক্ষর দিলেন? আইন প্রয়াগকারী সংস্থা আমার পিতার সম্পত্তি থেকে বি তর অভিযোগটি সঠিক তদন্ত করে আমার বিচার নিশ্চিত করলে আমার পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ফিরে পাবো। নতুবা পিতার সম্পত্তি থেকে চির দিনের জন্য বি ত থাকবো।