ভিভিআইপিরা চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছুটতে হবে কেন ?

    0
    228

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,ডিসেম্বরঃ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর কি যে কোন অসুস্থতার চিকিৎসার জন্যই বিদেশে ছুটতে হবে ? দেশে কেন তাদের চিকিৎসা করার মতো উচ্চমানের হাসপাতাল তৈরি করা যাবে না? ঢাকার একটি নাগরিক সংগঠন বৃহস্পতিবার এক মানববন্ধন করে এই প্রশ্নই তুলেছে।

    তাদের বক্তব্য- শুধু ভিভিআইপিরা নন, বাংলাদেশের যাদেরই আর্থিক সামর্থ্য আছে তারাই রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে গুরুতর রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছোটেন। এই প্রবণতা বন্ধের জন্য দেশেই উচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছেন তারা।

    সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট নামের এই সংগঠনটির প্রধান মফিজুর রহমান সরকার বলেন , “আমাদের হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যসেবার মান না বাড়িয়ে এরা বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করে রাজনৈতিক নেতাদের বিদেশে চিকিৎসা করানোর কোন অধিকার নেই।”

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগনির্ণয় ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। সেজন্যই বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রবণতা বাড়ছে।

    তবে সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট বলছে চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের বিদেশমুখো হবার কারণেই দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ছেনা।

    এই বক্তব্যের সাথে একমত গবেষক এবং চিকিৎসক ডা. রুবাইয়ুল মোর্শেদ। তিনি বাংলাদেশের নামকরা বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজ করেছেন।

    মি. মোর্শেদ বলেন অনেক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার মান ভালো নয়।

    তিনি বলেন, “ চকচক করলেই সোনা হয়না। হাসপাতাল যদি দেখতে সুন্দর হয়, মার্কেটিং ভালো হয় – ভিতরে কী হচ্ছে তা আমরা জানছি না । যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে তারা কিন্তু খুব সাবধানী হয়।”

    বাংলাদেশে থেকে প্রতিবছর ঠিক কত মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। কারণ অনেকই ভ্রমণ ভিসা নিয়ে চিকিৎসা করাতে যায়। বিদেশগামী রোগীদের ৭০ শতাংশই ভারতে যায়। অন্যদের গন্তব্য থাইল্যান্ড, সিংগাপুর এবং মালয়েশিয়া।

    ডাক্তাররা মনে করেন অনেকে যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। বিষয়টি অনেকটা ‘ফ্যাশনে’ পরিণত হয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান খান বলেন চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আস্থাহীনতার যে কথা বলা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়।

    মি. খান বলেন, “ আমাদের হাসপাতালে আজও রেলমন্ত্রী মহোদয় ভর্তি আছেন। এছাড়া আমাদের অনেক সম্মানিত ব্যক্তি এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন।”

    গবেষক রুবাইয়ুল মোর্শেদ মনে করেন সরকারি-বেসরকারি উভয়ক্ষেত্রে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক। ফলে এর প্রভাব পড়ছে চিকিৎসার উপর। হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে পারলে চিকিৎসা সেবার মান বাড়বে বলে মি. মোর্শেদ মনে করেন।সুত্রঃবিবিসি