ভারতে দাম বৃদ্ধি:বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ

    0
    245

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫আগস্ট,এম ওসমান: বাজার নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে ভারতে পেঁয়াজের রফতানি মূল্য তিন দফা বাড়িয়ে প্রতি মেট্রিক টন ৭শ’ ৫ ডলার করা হয়েছে। এতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করতে খরচ পড়ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। হঠাৎ করে দাম বাড়ায় মঙ্গলবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।

    এ সুযোগে সিন্ডিকেট করে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিকেল পর্যন্ত বেনাপোল বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

    মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকালে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি চিঠি ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পায়। তবে, বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিকেল পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পায়নি বলে সূত্র জানায়।

    ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ‘আর এল বিশ্বাস অ্যান্ড কোম্পানি’র সত্তাধিকারী শংকর বিশ্বাস জানান,  অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন ঊর্ধ্বগতিতে। এ কারণে রফতানি নিরুৎসাহিত করতে ভারত সরকার মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন পেঁয়াজ দেশের বাইরে রফতানি করতে চাইলে ৭শ’ ৫ ডলার মূল্যে রফতানি করতে হবে।

    বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, ভারতের কৃষিজাত পণ্যের দাম নির্ধারণী সংস্থা (ন্যাফেড) থেকে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৪২৫ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৭০৫ মার্কিন ডলার করার বিষয়টি ভারতীয় ব্যবসায়ীরা তাদের জানিয়েছে। হঠাৎ করে এই মূল্য বৃদ্ধি ঘোষণায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। কোনো আলোচনা ছাড়াই এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অনেক এলসি ওপারে আটকা পড়বে। এতে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়বে।

    আমদানি বন্ধ থাকলে পেঁয়াজের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এনিয়ে ভারত সরকার চলতি বছরে তৃতীয় দফা পেঁয়াজের মূল্য বাড়ালো বলে জানান তিনি।

    বেনাপোল কাস্টমস হাউজের (পচনশীল পণ্য শাখা) রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ জানান, ব্যবসায়ীদের মুখে মুখে মূল্য বৃদ্ধির কথা তিনি শুনেছেন। অফিসিয়াল কোনো চিঠি এখনো তারা হাতে পাননি। মঙ্গলবার সারাদিন পেঁয়াজের কোনো ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আসেনি। তবে, নির্ধারিত মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি হলে খালাস দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

    কাস্টমস ও  সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, ৪২৫ ডলার মূল্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলে আনুসাঙ্গিক সব খরচ ধরে ওই পিয়াজ আমদানিকারকের ঘরে পৌঁছাতে প্রতি কেজিতে ৩৪ টাকা ৮২ পয়সা পড়বে। আর বর্তমান মূল্য ৭০৫ ডলারে আমদানি করলে তা প্রতি কেজি ৫৮ টাকা পড়বে।

    এদিকে, পেঁয়াজের আমদানি মূল্য হিসাব অনুযায়ী এ রকম হলেও আমদানি কারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পাল্লা দিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে তা বাজারে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রে আমদানি কারকরা কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন।

    বেনাপোল বাজারে ভারতীয় আমদানি হওয়া পেঁয়াজের খুচরা বাজারে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ ।

    এ ব্যাপারে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম জানান, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি টন ৪২৫ ডলার মূল্য নির্ধারণ করা হলেও ওই মূল্যে ভারতীয় বাজারে তারা পেঁয়াজ কিনতে পারেন না। অনেক সময় নির্ধারিত মূল্যের বেশি, আবার কোনো সময় কমও থাকে।

    এছাড়া, পচনশীল পণ্যের হিসাব একটু অন্য ধরনের। এ কারণে মূল্যের তারতম্য হয়। ২৩ আগস্ট পর্যন্ত তাদের হিসাব মতে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি খরচ ছিল ৫৮ টাকা। পাইকারি বাজারে তারা বিক্রি করেছেন ৬০ টাকায়। এখন ৭০৫ ডলারে আমদানি করা পেঁয়াজের খরচ পাড়বে ৬০ টাকা, পাইকারি বাজারে তা বিক্রি করা হবে ৬৫ টাকায় বলে জানান তিনি। #