ব্যাংক ঋণ নিচ্ছে না সরকার

    0
    222

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম ১১ ফেব্রুয়ারি ম আহমদ :সরকারের ব্যাংক ঋণের সুদহার অনেক কমেছে। ঋণ দিতে আগ্রহও বেড়েছে ব্যাংকের। এর পরও সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে না। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির ধীরগতি কিছুটা কাটলেও ব্যাংকের কাছে এখনও বিপুল পরিমাণ অলস অর্থ পড়ে আছে। এ টাকা কাজে খাটাতে বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বল্প সুদে টাকা রাখার যে পদ্ধতি (রিভার্স রেপো) রয়েছে, সেখানেও টাকা রাখতে এসে ফিরে যাচ্ছে ব্যাংক। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ ৩,৫৭৭ কোটি টাকা কমে এক লাখ ১,৯০৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। মূলত সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে বেশি অর্থ পাওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার চাহিদা অনেক কম। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ১৩,৩০৬ কোটি টাকা পেয়েছে সরকার। বিক্রির এ পরিমাণ চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৪%। ব্যাংককাররা বলছেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ধীরগতি রয়েছে। আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে প্রচুর অর্থ পাচ্ছে সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার না চাইলেও বিক্রির অর্থ অনেকটা বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হচ্ছে। এ কারণে ব্যাংক ঋণের সুদহার কমলেও সরকার আপাতত এ খাত থেকে তেমন ঋণ নিচ্ছে না। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১শে জানুয়ারি ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৯১ দিন মেয়াদি ৫০০ কোটি টাকার ঋণের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাকা নিলামে ৩১টি ব্যাংক অংশ নিয়ে চাহিদার প্রায় পাঁচগুণ বেশি তথা ২,৪৯৫ কোটি টাকার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব দেয় । ব্যাংকভেদে ২.২৯% থেকে ৪.৭৫% সুদে ঋণ প্রস্তাব আসে। শেষ পর্যন্ত ২.৪৯% সুদে ৫০০ কোটি টাকা নেয় সরকার। সাধারণভাবে বাণিজ্যিক ঋণের তুলনায় সরকারি ঋণের সুদ অনেক কম। এক সময় সরকারকে ঋণ দিতে আগ্রহই দেখাত না ব্যাংক। ৫০০ কোটি টাকা ঋণের জন্য নিলাম ডেকে ৫০ কোটি টাকার বিড দাখিলের ঘটনাও ঘটেছে। একই দিনে রিভার্স রেপোতে ২,৫৬০ কোটি টাকা রাখার জন্য আসে তিনটি ব্যাংক। তবে এক টাকাও না রেখে ব্যাংকগুলোকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তার আগের রোববার কয়েকটি ব্যাংক রিভার্স রেপোতে ৩,৬৩৩ কোটি টাকা রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এমন পরিস্থিতি সাময়িক নয়, বেশ কিছুদিন ধরে রিভার্স রেপোতে টাকা খাটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো। এর আগে ব্যাংকগুলো টাকা রাখার যে চাহিদা দিত তার অন্তত একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেয়া হতো। তবে গত অক্টোবরের পর থেকে রিভার্স রেপোতে আর কোন টাকা খাটানোর সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি মাসে গড়ে ২.৯১% সুদে ৯১ দিন মেয়াদি ঋণ নিয়েছে সরকার। গত ডিসেম্বরেও এ ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল ২.৯৪%। আর আগের বছরের জানুয়ারিতে ছিল ৭.৬২%। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে সরকারকে দেয়া স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদহার প্রায় দ্বিগুণ কমেছে। অন্য মেয়াদের ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহারও কমতির দিকে রয়েছে। আর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে জানুয়ারিতে গড় সুদহার কমে ৩.৯৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের বছরের একই মাসে যা ৮.৫৭% ছিল। ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক সুদহারও রয়েছে কমতির দিকে।