বেনাপোল কাস্টমে ১১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় কম

    0
    268

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১অক্টোবর,এম ওসমান, বেনাপোল :  চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৩ মাসে বেনাপোল কাস্টম হাউসে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১শ’ ১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৭শ’ ৫৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৬৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

    বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। কলকাতা থেকে মাত্র আড়াই ঘন্টায় মাল আনা যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। আর সে কারণে আমদানিকারকরা এ পথে আমদানি করতে চাইলেও কাস্টমস ও বন্দরে হয়রানী, শুল্ক ফাঁকি, চোরাচালানরোধসহ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনা দুর করতে পারলে রাজস্ব আদায়ের পরিমান কয়েকগুন বেশি হবে বলে মনে করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। দেশের চাহিদার অধিকাংশ পণ্যই এই স্থলপথে আমদানি-রফতানি হয়ে থাকে। কিন্তুু সম্প্রতি বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমতে শুরু করেছে। আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া। তার ওপর শুল্ক ও জরিমানা আদায় করা, প্রতিটি কেমিকেল পণ্য টেস্টে পাঠানো, দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখা, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।

    কাস্টম সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২শ’ ৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১শ’ ৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগস্টে ২শ’ ৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২শ’ ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এবং সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২শ’ ৬৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ২শ’ ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

    কাস্টমস সূত্র আরো জানান, শূণ্য শুল্কহারের মালামাল বেশি আমদানি হওয়া, উচ্চ শুল্কের হারের পণ্য কম আমদানি হওয়ায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। ঈদসহ অন্যান্য ছুটির কারণে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আগামীতে এই ঘাটতি থাকবেনা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

    বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, কতিপয় কাস্টমস কর্তাদের অহেতুক হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এছাড়া সপ্তাহে দুই একদিন অনলাইন সিস্টেম বিকল, শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করানোর কারণেও ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজস্ব আদায় চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। হয়রানি, বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাবিকৃত ক্লিয়ারিং হাউস চালু হলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কয়েকগুন বাড়বে।

    তিনি আরো বলেন, রাসায়নিক পরীক্ষা ও আমদানিকৃত পণ্যের ওপর কাস্টম কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত লোড না চাপালে রাজস্ব আদায় বাড়বে কয়েকগুন। সবার আন্তরিকতা থাকলে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।

    বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান জানান, এ বন্দর দিয়ে কাঁচা ফলমুল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ, বেনাপোল স্থলবন্দরের নানা বিড়ম্বনা, অনৈতিক সুযোগ গ্রহণ, ইক্যুইপমেন্ট সমস্যা, চুরিরোধসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়লে আমদানি-রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়বে রাজস্ব আদায়ও।

    এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের একাধিক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মতামত ছাড়া রাজস্ব আদায় সম্পর্কে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।