বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ অফুরন্ত পর্যটন সম্ভাবনার দেশ

    0
    230

    ২০১৬ সালকে বাংলাদেশে পর্যটন বর্ষ হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭অক্টোবরঃ বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে নতুন পর্যটন গন্তব্য গড়তে সরকার কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুদ্ধিষ্ট পর্যটন সার্কিট উন্নয়ন বিষয়ক দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান। বুদ্ধিস্ট সংস্কৃতি ও এতিহ্যভিত্তিক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর্যটন শিল্পের জন্য বাংলাদেশ অনেক বড় সম্ভাবনাময় খাত। এ শিল্পের উন্নয়নে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৬ সালকে বাংলাদেশে পর্যটন বর্ষ হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ, অফুরন্ত পর্যটন সম্ভাবনার এক দেশ। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা, হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়। বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন পর্যটন গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের উপদানই রয়েছে।
    তিনি বলেন, এদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষ্টি, সভ্যতা, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের মানুষের অতিথিপরায়ণতা বিশ্বের যেকোনো পর্যটককে আকৃষ্ট করে। আমার কাছে গোটা দেশই যেন এক বিশাল পর্যটন ভূমি। ষড়ঋতুর সম্ভারে নানারকম বৈচিত্র্য, সমতল ভূমি, হাওর-বাওড়, পাহাড়, টিলা আর ছায়া সুনিবিড় গ্রামগুলি নান্দনিক উৎকর্ষে যে কারো হৃদয়  কাড়ে। বাংলাদেশের এই বৈচিত্র্যময় পর্যটন আকর্ষণে আদিকাল থেকেই ইবনে বতুতার মতো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকদের আগমন ঘটেছে।
    শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে পর্যটনকে ঘিরে আমাদের অর্থনীতি যে বিকশিত হতে পারে তা প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর পরই ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন গঠন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় ‘বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

    তিনি বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রাচীন কালের নান্দনিক স্থাপত্য কলা বাংলাদেশের সমৃদ্ধ পর্যটনের ইতিহাসের এক বিশেষ অধ্যায়। এ ইতিহাস আড়াই হাজার বছরব্যাপী বিস্তৃত। জনশ্রুতি রয়েছে, খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে গৌতম বুদ্ধ এদেশে আগমন করেন। তিনি প্রায় তিন মাস অবস্থান ও ধর্মপ্রচার করেন।

    প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলায় বৌদ্ধবিহার ও স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শনও ঐতিহ্যবাহী। কুমিল্লার শালবন বিহার, আনন্দ বিহার, নওগাঁর পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার, দিনাজপুর জেলার জগদ্দল মহাবিহার, মুন্সিগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনীর বিক্রমশীল মহাবিহার, ঢাকা জেলার ধামরাই, চট্টগ্রামের পণ্ডিত বিহার, পটিয়ার চক্রশালা, রামুর রামকোট বিহার, অধুনা আবিস্কৃত নরসিংদী জেলার উয়ারী-বটেশ্বর ইতিহাস প্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং বৌদ্ধ শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র। নওগাঁ জেলায় সোমপুর বিহারটি হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত সর্বোত্তম বিহার হিসেবে পরিচিত।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌ পর্যটনে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মোটর বেহিকেল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে আন্তঃরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮২ কিমি পর্যটন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পর্যটনের বিষয়টি নতুন করে তুলে ধরা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনা হচ্ছে।

    অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ পর্যটন সংস্থার মহাসচিব মি. তালিব রিফাই, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।ইরনা থেকে