বিরল রোগে আক্রান্ত মৌলভীবাজারের শিশুকন্যা বাবলি

    0
    252

    বিক্রমজিত বর্ধন,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার ছতিয়া গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় খাতুন বেগমের কন্যা বাবলি আক্তার (৭) দুই বছর বয়স থেকে বিরল এই রোগে আক্রান্ত হয়। দীর্ঘ ৫ বছর যাবত শিশুটি এই ভয়ংকর রোগের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।

    আর্থিক অস্বচ্ছলতা ও অজ্ঞতার কারণে অসহায় খাতুন বেগম (৩৫) কোনো সুচিকিৎসা করাতে পারছেননা শিশুটির। ভাল কোনো ডাক্তারও দেখাতে পারেননি। একদিকে রোগের যন্ত্রনা অন্যদিকে সংসারের অনটনে চিকিৎসার অভাবে যেন মেয়েটি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা পায়নি এই অসহায় পরিবার । চোখের সামনে মেয়ের এমন অবস্থা দেখে শিশুটির মা খাতুন বেগম তাকে গ্রাম্য কবিরাজের কাছে নিয়ে যান। অন্ধবিশ্বাসের কারনে ক্রমাগত রোগটি বাড়তে থাকে। প্রথমে তার ডানে পায়ে একটি ক্ষতচিহ্ন ছিল। পরে আক্রান্ত স্থান স্ফীত হয়ে ডান পা’টি অস্বাভাবিক বড় হয়ে যায়। তখন স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তারা রোগটি সনাক্ত করতে পারেনি। ততক্ষনে শিশুর আক্রান্ত স্থান বড় হয়ে মারাত্মক আকার ধারন করে।

    স্থানীয়দের পরার্মশে পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে কিছুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ডাক্তাররা রোগ সনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে আক্রান্ত স্থানের কিছু অংশ(নমুনা) কেটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হয় রোগ সনাক্ত করার জন্য। কবে আসবে ফলাফল ডাক্তাররা জানেন না বিধায় রোগাক্রান্ত শিশুকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন মা খাতুন বেগম।

    এ বিষয়ে শিশুর মা কে জিজ্ঞেস করলে তিনি অসহায়ের মত কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জানান, তিনি পাহাড়ে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করে তা বাজারে নিয়ে বিক্রি করে যা পান তা দিয়ে কোনমতে অনাহারে-অর্ধাহারে চলে তার জীবন। মেয়ের চিকিৎসার প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক বাধা।

    নিজের চোঁখের সামনে মেয়ের চিৎকার আর্তনাদ এখন দেখে যাওয়া ছাড়া তার আর কিছু করার নেই। তিনি সরকারের কাছে তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য আকুল আবেদন জানান। সরকার বা সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে এসে যদি এই অসহায় শিশুটির চিকিৎসার ভার নেন তাহলে হয়তো নতুন জীবন ফিরে পেতে পারে শিশু বাবলী।