বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শ্রমিকের মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গার্মেন্টস মালিকসহ দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ২ মে হরতাল ডাকছে বাম দলগুলো

    0
    394

    ঢাকা, ২৬ এপ্রিল : সাভারে রানা প্লাজা ধসে বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শ্রমিকের মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গার্মেন্টস মালিকসহ দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার ২ মে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও বামমোর্চা।
    শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে হরতালের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ।
    তিনি বলেন, “বিগত সময়ে স্পেকট্রাম গার্মেন্টস কারখানা ধসে এবং তাজরীন ফ্যাশনে আগুনে পুড়ে অগণিত শ্রমিকের মৃত্যু হলেও এ পর্যন্ত দায়ীদের কোনো প্রকার শাস্তি হয়নি। এমনকি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। দেখা গেছে, সরকার বা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতায় দায়ী ব্যক্তিরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আর প্রায় প্রতি বছরই শত-শত শ্রমিক নির্মম মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন।”
    তিনি আরো বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, স্পেকট্রাম ধস, তাজরীণ গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ড এবং রানা প্লাজা ধ্বস, এর কোনোটাই দুর্ঘটনা নয়। সাদা চোখে এগুলোকে দুর্ঘটনা মনে হলেও আসলে এগুলো হচ্ছে সচেতন অবহেলায় সংগঠিত ‘হত্যাকাণ্ড’। এখন অনেক রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপিরাও একে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলছেন।”
    হরতাল আহ্বান প্রসঙ্গে সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ আরো জানান, এখন পর্যন্ত সিপিবি-বাসদ হরতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে গার্মেন্টস টিইউসিসহ অন্যান্য গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে হরতাল সফল করার ব্যপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এছাড়াও গণতান্ত্রিক বামমোর্চা এবং মবিনুল হায়দার চৌধুরী এবং শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর নেতৃত্বে নবগঠিত বাসদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
    এদিকে বামমোর্চার প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিপিবি-বাসদের সঙ্গে যুগপৎভাবে তারাও একই দিনে হরতাল আহ্বান করবেন। এ বিষয়ে বামমোর্চাভূক্ত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
    জানা গেছে, শুধু রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতেই নয়, এর সঙ্গে স্পেকট্রাম গার্মেন্টসে ভবন ধস, তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী গার্মেন্টস মালিক, ভবন মালিক ও দায়িত্বে অবহেলাকারী সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতার, নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শ্রমমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকার দাবিতে এ হরতাল আহ্বান করা হবে।