বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হলেন আবদুল হামিদ

    0
    441

    ঢাকা, ২২এপ্রিল : জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং বর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এডভোকেট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবদুল হামিদের নাম ঘোষণা করেন।
    গতকাল রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আবদুল হামিদকে প্রার্থী মনোনীত করা হয়। এর পরপরই নির্বাচন কমিশন থেকে আবদুল হামিদের নামে চারটি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। পরে তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে কমিশনে আব্দুল হামিদের পক্ষে তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়। অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন জমা না পড়ায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হয়নি। ২৯ এপিল জাতীয় সংসদে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। গত ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান মারা যান। এরপর গত ৯ এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।

    আবদুল হামিদের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত

    বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হলেন আবদুল হামিদ
    বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হলেন আবদুল হামিদ

    : আবদুল হামিদ এডভোকেট ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা- মরহুম হাজি মো. তায়েব উদ্দিন এবং মা- মরহুমা তমিজা বেগম। পরিবারের পাঁচ ভাই চার বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তিনি গুরুদয়াল কলেজ থেকে মানবিকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক ডিগ্রি নেন। এরপর ঢাকার সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করার পর কিশোরগঞ্জ বারে আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাঁচবার কিশোরগঞ্জ জেলা বার সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
    ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য সির্বাচিত হন। সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ এর ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসাবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ। আর নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন।
    এছাড়া আবদুল হামিদ অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় উপনেতা ছিলেন এবং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করলে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার নির্বাচিত হন। আর সম্প্রতি দেশের উনিশতম রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
    ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬১ সালে কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়। গুরুদয়াল কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সহসভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ১৯৬৪ সালে কিশোরগঞ্জ সাবডিভিশনের ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
    আবদুল হামিদ ১৯৬৬-৬৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৬৯ সালে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে শুরু হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে চলতি বছর তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।