বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আ’লীগের১১৭ জাপার৫:মোট ১২৮জন নির্বাচিত

    0
    206

    আমারসিলেট24ডটকম,১৪ডিসেম্বরঃ আসন্ন ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে এ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ১২৮টি আসনে একজন করে প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে ৩০০ আসনে রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত তালিকা কমিশনে এসে পৌঁছেছে। ইসি সচিবালয় সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মোট ১২৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১৭ এবং জাতীয় পার্টির ৫ জন। ৩০০ আসনের সংসদে সরকার গঠন করতে আওয়ামী লীগের আর দরকার মাত্র ৩৪ আসন। আওয়ামী লীগ, জাপা, জাতীয় পার্টি-জেপিসহ এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১৬টি দল। এদিকে ইসির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ২০৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সংখ্যাই শতাধিক।

    ইসির তালিকা অনুযায়ী যেসব আসনে একমাত্র বৈধ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন- ঠাঁকুরগাঁও-২ আসনের আওয়ামী লীগের আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম, দিনাজপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, লালমনিরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের নূরুজ্জামান আহমেদ, রংপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী, রংপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের টিপু মুন্সি, রংপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের এইচ এন আশিকুর রহমান, গাইবান্ধা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি মিয়া, বগুড়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান, বগুড়া-২ আসনে জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া-৩ আসনে জাতীয় পার্টি (জেপি) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম তালুকদার, বগুড়া-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হাবিবর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আবদুল অদুদ, নওগাঁ-৬ আসনে আসনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ ইসরাফিল আলম, রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের এনামুল হক, নাটোর-১ আসনে মোহাম্মদ আবুল কালাম, নাটোর-২ আসনে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটো-৪ আসনে মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে মোহাম্মদ নাসিম, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে মোহাম্মদ হাবিবে মিল্লাত, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে মোহাম্মদ ইসহাক হোসেন তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে তানভীর ইমাম, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান স্বপন, যশোর-১ আসনে শেখ আফিলউদ্দিন, বাগেরহাট-১ আসনে শেখ হেলালউদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনে মীর শওকাত আলী বাদশা, বাগেরহাট-৩ আসনে তালুকদার আবদুল খালেক, ভোলা-১ আসনে তোফায়েল আহমেদ, ভোলা-৪ আসনে আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, বরিশাল-১ আসনে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, বরিশাল-৬ আসনে আবদুল হাফিজ মল্লিক, ঝালকাঠি-২ আসনে আমির হোসেন আমু, পিরোজপুর-১ আসনে এ কে এম এ আউয়াল, পিরোজপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টি (জেপি) আনোয়ার হোসেন।
    আরো যেসব আসনে একমাত্র বৈধ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন- টাঙ্গাইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের মো. আবদুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-৩ আসনে আমানুর রহমান খান রানা, টাঙ্গাইল-৪ আসনে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল-৭ আসনে মোহাম্মদ একাব্বর হোসেন, টাঙ্গাইল-৮ আসনে শওকত মোমেন শাহজাহান, ময়মনসিংহ-১ আসনে প্রমোদ মানকিন, ময়মনসিংহ-২ আসনে শরিফ আহমেদ, ময়মনসিংহ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সালাহউদ্দিন আহমেদ (মুক্তি), ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগের আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে মোহাম্ম সোহরাব উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে নাজমুল হাসান, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে জাহিদ মালেক, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে মৃণাল কান্তি দাশ, ঢাকা-২ আসনে মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, ঢাকা-৩ আসনে নসরুল হামিদ, ঢাকা-১৯ আসনে ডাক্তার মোহাম্মদ এনামুর রহমান, ঢাকা-২০ আসনে এম এ মালেক, গাজীপুর-১ আসনে আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ আসনে মোহাম্মদ জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর-৩ আসনে আলহাজ্ব এডভোকেট মো. রহমত আলী, গাজীপুর-৫ আসনে মেহের আফরোজ, নরসিংদী-৪ আসনে নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, নরসিংদী-৫ আসনে রাজিউদ্দিন আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান, রাজবাড়ী-১ আসনে কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী-২ আসনে মোহাম্মদ জিল্লুল হাকিম, ফরিদপুর-১ আসনে মোহাম্মদ আবদুর রহমান, ফরিদপুর-২ আসনে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ফরিদপুর-৩ আসনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মাদারীপুর-১ আসনে নূর-ই আলম চৌধুরী, মাদারীপুর-২ আসনে শাজাহান খান, মাদারীপুর-৩ আসনে আ ফ ম বাহাউদ্দিন (নাছিম), শরিয়তপুর-১ আসনে বি এম মোজাম্মেল হক, শরিয়তপুর-২ আসনে শওকত আলী, শরিয়তপুর-৩ আসনে নাহিম রাজ্জাক, সিলেট-১ আসনে আবুল মাল আবদুল মুহিত, মৌলভীবাজার-৩ আসনে সৈয়দ মহসীন আলী, মৌলভীবাজার-৪ আসনে মোহাম্মদ  আবদুস শহীদ।
    ইসি সূত্র জানায়, আরো যারা একমাত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন কুমিল্লা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আশরাফ, কুমিল্লা-১০ আসনে আ হ ম মোস্তফা কামাল, চাঁদপুর-১ আসনে ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, চাঁদপুর-২ আসনে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, চাঁদপুর-৩ আসনে ডা. দীপু মনি, চাঁদপুর-৪ আসনে ড. মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া, চাঁদপুর-৫ আসনে মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীরউত্তম), ফেনী-২ আসনে নিজামউদ্দিন হাজারী, নোয়াখালী-২ আসনে মোর্শেদ আলম, নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদের, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে এ কে এম শাহজাহান কামাল, চট্টগ্রাম-৭ আসনে মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, কক্সবাজার-২ আসনে আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ আসনে সাইমুম সরওয়ার কমল।
    প্রসঙ্গত, আগামী ৫ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে গত ২৫ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর ছিলো রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর ছিলো মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন। তফসিল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।
    ইসি সূত্রে জানা যায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা গত নয়টি সংসদ নির্বাচনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের আগেই সর্বোচ্চ ৪৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ১১ জন, জিয়াউর রহমানের সময় ১৯৭৯ সালে ১১ জন, এরশাদের সময় ১৯৮৮ সালে ১৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর ২০০৭ সালের বাতিল হয়ে যাওয়া নির্বাচনে মাত্র ১৮আসনে ছিল একক প্রার্থী।