বিদেশি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে হবে

    0
    194

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬অক্টোবরঃ দু’জন বিদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সরকারের পক্ষ থেকে এ আশ্বাস দিয়ে জানান,  তদন্তের মধ্য দিয়ে খুনিদের বিচারের আওতায় আনা যাবে।রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে মাহমুদ আলী বলেন, ‘সম্ভাব্য হুমকির ব্যাপারে বিদেশিরা যে তথ্য পেয়েছিল সেটি তারা সরকারকে জানিয়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীরা যখন অপকর্ম ও অপরাধ ঘটায়, তখন তো তারা এক জায়গায় থাকে না। জায়গা বদল করে।’

    বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের ভ্রমণবিষয়ক যে সতর্কবার্তা দিচ্ছে এটি প্রত্যাহারের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মাহমুদ আলী বলেন, ‘তারা তো এটি জারি করেছেন বেশ কয়েক দিন হলো, আগামী কয়েক দিন পর আশা করি সেটি প্রত্যাহার হবে।’

    তবে বাংলাদেশে হঠাৎ করেই এক সপ্তাহের মধ্যে ইতালি ও জাপানের দুই নাগরিক খুনের ঘটনায় বিদেশিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই চুপিসারে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ক্রিকেট কোচ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মী অনেকেই চলে যাচ্ছেন।

    স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠান আইসোলাক্স কোরসান বাংলাদেশ থেকে তাদের বিদেশী কর্মী সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবরে প্রকাশ, ‘স্পেন ও অন্যান্য দেশের ২০ জন আইসোলাক্স কর্মী রোববার ঢাকা ছেড়েছে। আরও ৩০ জন কর্মী দ্রুতই বাংলাদেশ ছেড়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

    তবে, বাংলাদেশে বিদেশি দুই নাগরিক হত্যায় আইএস জঙ্গিরা জড়িত নয় বলে মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। বরং এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।তারা মনে করছেন, মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে অভিযুক্ত দলটির শীর্ষ নেতাদের ‘সঠিক’ বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জামায়াত এ কাজ করতে পারে।
    আজ মঙ্গলবার ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

    অপরদিকে,  আরব নিউজ পত্রিকা বাংলাদেশে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যায় ক্রমবর্ধমান জঙ্গি তৎপরতার বিপদের কথা তুলে ধরেছে।এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এতে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতির ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। এটা বাংলাদেশের জন্য অশুভ ইঙ্গিত। অনলাইন আরব নিউজে প্রকাশিত এক মন্তব্য প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

    এ দিকে,  বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, এমনিতে বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির মুখে। এর মধ্যে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই বিদেশিকে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে।

    তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে এবং পড়বে। অনেক বিদেশি ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছে। তারা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এসব কিছু আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে।’

    এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, “এধরনের হত্যাকাণ্ড আগে আমাদের দেশে ছিল না। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই হচ্ছে বলে আামার কাছে পরিষ্কার। তবে এই রাজনীতিটা দু ধরনের। একটা হচ্ছে জঙ্গিবাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। আরেকটি হচ্ছে দেশের ভেতরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন। এখন এটি কোন ধরনের রাজনীতি সেটাই বোঝার বিষয়।”ইরনা