বিদেশি খুন কীসের আলামত!:মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার

    0
    284

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৭অক্টোবর,মুহাম্মদ ফয়সাল শরীফ:  দেশে হঠাৎ করে নতুন ধরণের টার্গেট নিয়ে জঙ্গি হামলা শুরু হয়ে গেল। মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে খুন করা হলো দুই বিদেশীকে। প্রথমজন ইটালির আর দ্বিতীয় জন জাপানের নাগরিক। গতকাল পত্রিকায় দেখলাম পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যানকে গত সোমবার সন্ধ্যায় আল্লামা ফারুকি স্টাইলে খুুন করা হয়েছে তাঁরই বাসার নিজস্ব খানকাহ শরীফে। নিহত খানকাপন্থী এ সাবেক কর্মকর্তা হলেন জনাব খিজির খান।

    পাবনার ঈশ্বরদিতে কোন এক খৃস্টান পাদরিকেও হামলা করা হয়েছে গত সোমবার। তবে তিনি বেঁচে গেছেন সৌভাগ্যক্রমে। এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এতোগুলো ঘটনা প্রমাণ করে যে, দেশ এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে সবকিছু নষ্টদের হাতে চলে যেতে পারে। আল্লাহ্ রক্ষা করুন মুসলমানদের এ স্বাধীন বাংলাদেশকে।

    পত্রিকান্তরে দেখা যায়, ইতোমধ্যে বিদেশী হত্যাকান্ডের জের ধরে আমাদের বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ তাদের বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছে, কেউ কেউ আবার নিরাপত্তার অজুহাতে তাদের অর্ডারও বাতিল করেছে। সুতরাং হঠাৎ চাঙ্গা হওয়া এ নতুন ষড়যন্ত্র নিয়ে অনেক কিছু ভাবার আছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে, এক সময়ে সোনালী আঁশ নামে বিপুলভাবে সমাদৃত পাট শিল্প হাতিয়ে নেবার পর এখন অপর নির্ভরতার উপায় গার্মেন্টস শিল্পের দিকে নজর পড়েছে প্রতিবেশি প্রতিদ্বন্ধি দেশের। এ বিষয়টিকেও মাথায় রাখতে হবে তদন্তে।

    এদিকে বিদেশি হত্যার দায় স্বীকারকারী আইএস দমনে বাংলাদেশের পাশে আছে আমেরিকা। এমন খবর শুনালো রাস্ট্রদূত বার্নিকাট। এ খবরটা সুসংবাদ নাকি দুঃসংবাদ তা দেশের নিরাপত্তা গবেষকরা ভাববেন এবং সরকারকে পরামর্শ দেবেন আশা করি। কারণ, আন্তর্জাতিক চক্রান্ত না বুঝে কাজ করলে ক্ষতির দিকেই দেশ এগিয়ে যেতে থাকবে। যারা চোরকে বলে চুরি করো আর গৃহস্তকে বলে সজাগ থাকো তারাও আমেরিকার চেয়ে তুলনামুলক নিরাপদ। কারণ, ওদের কারণে হয়তো অপরাধী ধরা পড়তে পারে, কিন্তু এরাতো সে রকম না। এরা অপরাধী উপযুক্ত ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করে টার্গেট অনুসারে নিয়োগ করে মুসলিম দেশগুলোতে। তাদের পৃষ্টপোষকতায় চলে জঙ্গি হামলা। হামলার পর বলে, যে কোন মূল্যে এদের প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে বাধ্য করে তাদের সাথে রেখে এদের দমন করতে, যাতে তাদের এজেন্টরা বরাবরই টিকে থাকে এবং আরো বেশি শক্তিধর হয়ে ওঠতে পারে। আর এ পদ্ধতি নিশ্চিত করা গেলে নিজেদের সৈন্য-সামন্তদেরও মুসলমানদের দেশে নিয়ে আসা আইনানুগভাবে হয়ে যায়।

    তারপর ইরাক, আফগান, লিবিয়া, সিরিয়ার মতো কিছু করার রাস্তা সহজ হয়।

    জানিনা, দেশের ভাগ্যে কী আছে বা নাই। তবে, এমন বিপদজনক ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যমত পৃথিবীর অন্যদেশে রয়েছে, তা দুর্ভাগ্যবশত এখানে অনুপস্থিত। যা চলমান জঙ্গিহামলার চেয়ে বেশি বিপদজনক বলে মনে হয়।

    কারণ, জাতীয় ঐক্য ছাড়া সঠিক সিদ্ধান্ত সুদুর পরাহত। সঠিক সিদ্ধান্ত আর প্রকৃত অপরাধী খুজে নেওয়া এবং গ্রহণযোগ্য তদন্ত না হলে সময় আরো বেশি বিপদের দিকেই এগিয়ে যেতে থাকবে, যা হয়তো কোন এক সময় জাতীয় ঐক্য দিয়েও আর ঠেকানো যাবেনা। কিন্ত কে শোনে কার কথা। আর শুনবেইবা কেন, তারা কি কম বুঝে কারও চেয়ে। নিশ্চয়ই না। তারা পুরানো জেদাজেদি ছাড়বেনা।

    পরস্পর দোষারোপের বস্তাপঁচা আক্রমন, প্রতি আক্রমন শুরু করেছে, আবারো যাদের হাতে জনগণ বারবার হাওলা করেছে তাদের নিজেদের, এবং দেশের জিম্মাদারী। তারাও হয়তো বুঝে নিয়েছে যে, তাদের বাদ দিয়ে আমরা একদম অচল, যদিও আমরা বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছি সে কথা যে, আমাদের অবজ্ঞা করলে তোমরা যাবে ডাস্টবিনে। আসুন, নতুন করে ভাবি দেশ নিয়ে। আল্লাহ্ তৌফিক দিন। লেখকঃ এডভোকেট মুহাম্মদ মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, চট্টগ্রাম