বিক্ষোভের ভয়ে নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত অসম সফর বাতিল

    0
    295

    ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে চলা বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্ধারিত অসম সফর বাতিল হয়েছে। তাঁর আগামী শুক্রবার গুয়াহাটিতে ‘খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস ২০২০’-র উদ্বোধন করার কথা ছিল। এই মুহূর্তে অসমের পরিস্থিতি ঠিক নয়, বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো। এর ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রধানমন্ত্রীর সফর বাতিল করা হয়েছে বলে খবর।

    ‘খেলো ইন্ডিয়া গেমস’-এর নির্বাহী কর্মকর্তা অবিনাশ যোশি বুধবার বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে জানানো হয়নি তিনি আসছেন কিনা। তবে আমাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে, তিনি আসবেন না।’

    এর আগে অসমের ছাত্র সংগঠন ‘আসু’র পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অসম সফরে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভ দেখানো হবে বলে জানানো হয়েছিল। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংসদে পাশ হওয়ার পর এই প্রথম অসম সফরে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। কিন্তু সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’ পাস হওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে ব্যাপক গণআন্দোলনে নেমেছে ‘আসু’-সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।

    নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে অসমে এরইমধ্যে ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেখানে সহিংসতায় কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসু-সহ অসমের বিক্ষোভকারীদের  অভিযোগ ‘সিএএ’-এর জেরে ১৯৮৫ সালের ‘অসম চুক্তি’র বিরোধিতা করা হচ্ছে। তাদের দাবি, অসম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ছিল।

    কিন্তু ‘সিএএ’তে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের বড় অংশ এদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে অসমের মানুষদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, অধিকার রক্ষিত হবে না বলেও আন্দোলনকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

    ‘সিএএ’ নিয়ে বিক্ষোভের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগের সৃষ্টি করায় কিছুদিন আগে ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকাসহ একাধিক দেশ পর্যটকদের অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা জারি করেছে।

    এর আগে অসমে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের প্রস্তাবিত সফরও স্থগিত হয়ে যায়। গত ডিসেম্বরে অসমের গুয়াহাটিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী তুমুল বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি ও  জাপানের প্ৰধানমন্ত্ৰী শিনজো আবের বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়।

    প্রস্তাবিত ওই বৈঠকে দুই রাষ্ট্ৰ প্ৰধানের মিলিত হওয়ার কথা ছিল। ১৫ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।