বাংলাদেশের দিকে এগুচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন

    0
    253

    ঢাকা, ১৪ মে : ধীরে ধীরে সামান্য উত্তর দিকে সরে বাংলাদেশের দিকে আরো এগিয়ে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ঘূর্ণিঝড় মহাসেন বাংলাদেশে আঘাত হানবে কি না- তা আগামীকাল বুধবার বোঝা যাবে। তবে আঘাত হানলে তা মোকাবিলায় সরকারের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় দেশের উপকূল সমুহেও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসেনের করণে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সকল অধিদপ্তর, বিভাগসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
    ঘূর্ণিঝড় মহাসেননেক সামনে নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে সবিচালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির এক সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় উপকূলের ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলে স্থাপিত ডপলার রাডারের মাধ্যমে জানা যাবে কোথায়-কখন-কিভাবে আঘাত হানবে। আগামীকাল বুধবার রাতে এ বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
    দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, উপকূলীয় ১৩টি জেলার সাতটি অঞ্চলের ৩৭টি উপজেলার ৩২২টি ইউনিয়নে সর্বাত্মক প্রস্তুতির ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এসব এলাকায় সাইক্লোন প্রস্ততি কর্মসূচির ৪৯ হাজার ৩৬৫ জন প্রশিক্ষিত সেচ্ছাসেবক আগাম সতর্ক বার্তা প্রদানে কাজ করছে।
    মন্ত্রী বলেন, মহাসেন আঘাত হানলে দুর্গতদের আশ্রয়ে তিন হাজার ৭৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র কার্যকর রয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে স্কুলগুলো ছুটি দেয়া হবে। ত্রাণ তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপকূলীয় ১২টি জেলার প্রত্যেকটিতে অতিরিক্ত তিন লাখ করে টাকা ও একশ’ মেট্রিক টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
    পক্ষান্তরে আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইস্যু করা এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মহাসেন সামান্য উত্তর দিকে সরে গিয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম এবং মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল অর্থাৎ ১৪.০ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.২ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।