বাঁশের সাকোই এখন ভরসা ছাতক-দোয়ারা সড়কে বেইলী ব্রিজ

    0
    244

    ভেঙ্গে পড়ায় ৯দিন থেকে সড়কযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২১মে,চান মিয়া: ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের কাড়ইলগাঁও গ্রামের পার্শ্ববর্তী চৌধুরী খালের বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ায় ৯দিন ধরে দু’উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ১৪মে’রাত ১টার দিকে ছাতক থেকে দোয়ারাগামী একটি পাথর বোঝাই ট্রাক (নং-ঢাকা মেট্রো-ট ১৬-৭২৪৫) পারাপারের সময় ব্রিজ ভেঙ্গে ট্রাক পানিতে পড়ে যায়। এরপর থেকে ছাতকসহ সারা দেশের সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এঘটনায় ১৫মে ট্রাক চালক ও মালিক রফিকুল ইসলাম ফেনুর বিরুদ্ধে ছাতক থানায় ১০লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা নং-১২, দায়ের করেছেন সড়ক ও জনপথ ছাতকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রমজান আলী। ১৭মে’থেকে ভেঙ্গে পড়া বেইলী ব্রিজের পাটাতনগুলো স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদ্যোগে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ১৮মে’ দূর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি চৌধুরী খাল থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে এ ট্রাকটি পুরিশের জিম্মায় রয়েছে।

    বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছেন। খালের দু’পারে বসানো হয়েছে অস্থায়ী দু’টি সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ড। ফলে ছাতক থেকে দোয়ারা যাওয়া-আসার পথে যাত্রীরা এখানে গাড়ি বদল করে যাতায়াত করছে। খালের উপর দেয়া হয়েছে একটি বাঁশের সাকো। এ সাকো দিয়ে জীবনের ঝূাঁকি নিয়ে নারী-পুরুষ, শিশু, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন যাতায়াত করছে। বাঁশের সাকো স্থাপনের আগে একটি নৌকায় ২টাকা দিয়ে খাল পারাপার হতো যাত্রীরা। ঘটনার দু’দিন পর অতিরিক্ত যাত্রী উঠায় নৌকাটি ভেঙ্গে যায়। পরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাকো স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রত্যহ অসংখ্য মানুষের পদচারণায় এখন সাকোটিও ভেঙ্গে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

    বুধবার সরেজমিন কাড়ইলগাঁও ভেঙ্গে পড়া বেইলী ব্রিজ এলাকা ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, প্রায় ২৫বছর আগে তৎকালীন এরশাদ সরকারের আমলে ১শ’ফুট দৈর্ঘ্য বেইলী ব্রিজটি কাড়ইলগাঁও চৌধুরী খালের উপর স্থাপিত হয়। প্রায় ১০বছর আগে একটি রোলার পারাপারের সময় ব্রিজের একটি অংশ ভেঙ্গে পড়লে জোড়াতালি দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু করে। ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় গাড়ি চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষ ব্রিজটি পূনঃনির্মানের কোন উদ্যোগ নেয়নি। দীর্ঘদিন এ ঝূঁকিপূর্ন ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় অবশেষে রফিকুল ইসলাম ফেনুর মালিকানাধীন ট্রাক ৪শ’ফুট পাথর নিয়ে পারাপারের সময় ট্রাকসহ এটি ভেঙ্গে পড়ে। জানাগেছে, এ সড়কে লাফার্জ-সুরমা সিমেন্ট ফ্যাক্টরী সংলগ্ন ঠেঙ্গারগাঁও-সাহেবখাল, নৈনগাঁও-নিয়াজেরখাল ও লক্ষীবাউরখালের উপর মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ন আরো ৩টি বেইলী ব্রিজ রয়েছে। এরমধ্যে নিয়াজেরখাল দোয়ারা উপজেলায় ও সাহেবখাল, লক্ষীবাউর ও চৌধুরীখালের অবস্থান ছাতক উপজেলায় অবস্থিত।

    ঝুঁকিপূর্ন ব্রিজগুলোর আরসিসির আওতায় এনে পূনঃ নির্মানের দাবি এলাকাবাসীর। ভেঙ্গে পড়া ব্রিজের নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আবদুস শহীদ জানান, ব্রিজের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। ব্রিজটি সম্পন্ন করতে আরো ১৫দিন সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের আহসানমারা ব্রিজের পাটাতনগুলো দিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে। মালামাল ইতোমধ্যে ছাতক শহরে পৌছে গেছে। আগের ১শ’ফুট থেকে এখন ব্রিজের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১শ’২০ফুট।

    এটি পূনঃ নির্মাণ করতে ১০থেকে ১২লক্ষ টাকা ব্যয় হবে বলে তিনি ধারণা করছেন। নোয়ারাই সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডের ম্যানেজার বাবুল মিয়া তালুকদার ও দোয়ারা ষ্ট্যান্ডের সভাপতি মাসুক মিয়া জানান, ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ হচ্ছে। ছাতক উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সওজ) মোহাম্মদ রমজান আলী জানিয়েছেন, বেইলী ব্রিজটি নির্মাণ করতে আরো ৮/১০দিন সময় লাগবে। দূর্ঘনা ঘটানো সেই পাথর বোঝাই ট্রাকের অজ্ঞাত চালক ও মালিক রফিকুল ইসলাম ফেনুর বিরুদ্ধে ছাতক থানায় ১০লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করা হয়েছে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মালামালসহ বেপরোয়া ও দ্রুত গতিতে ট্রাক চলাচল করে সরকারী বেইলী ব্রিজ ভাঙার কারণে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সড়কে মোট ৮টি বেইলী ব্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ব্রিজের টেন্ডার পক্রিয়াধিন। এ গুলো গার্ডার দ্বারা তৈরী হবে। ঝুঁকিপূর্ন রয়েছে টেংগারগাঁও এবং অতি ঝুঁকিপূর্ন নৈনগাঁও সংলগ্ন ব্রিজ।