বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর দেখে আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    0
    218

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮মেঃ জাপানের জাতীয় প্রেসক্লাবে (জেএনপিসি) বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের স্বাক্ষর দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা। জানা যায়, ১৯৭৩ সালের ২৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু জাপান সফরকালে জেএনপিসিপরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি ক্লাবের দর্শনার্থী বইতে স্বাক্ষরকরেন। সে সময় জেএনপিসির পরিদর্শক বইতে বঙ্গবন্ধু বাংলা ও ইংরেজিতে নিজেরনাম (শেখ মুজিবুর রহমান) লিখে শুধুমাত্র স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষরের নিচেতারিখ দেন ২৯-১০-৭৩। তবে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
    দীর্ঘ ৪০ বছর পরবঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানে তার ৪ দিনের সরকারি সফরেরশেষ দিনে আজ বুধবার জাপানের জাতীয় প্রেসক্লাব পরিদর্শন করেন। স্থানীয় সময়সকাল ১০টায় তিনি ক্লাবে যান এবং প্রথমেই দর্শনার্থী বই দেখেন; যেখানে ৪০বছর আগে বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষর করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর দেখে শেখ হাসিনাখুবই আবেগাপ্লুত হন। প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে জাপানের স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে আবেগাপ্লুত হওয়ার কথা তিনি জানান।
    প্রধানমন্ত্রীবলেন, এ স্বাক্ষর দেখে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। ঐতিহাসিক এ স্বাক্ষরসংরক্ষণ করায় আমি ক্লাব কর্তপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। পরে তিনিও দর্শনার্থীবইতে স্বাক্ষর করেন। সেখানে তিনি বাংলায় মন্তব্য করেন “আমার আন্তরিকশুভেচ্ছা রইলো”। পরিদর্শনকালে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীকে কিছুউপহার দেন। তিনিও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত একটি পেইন্টিং তাদেরউপহার দেন।
    এ সময় অন্যান্যের মধ্যে এম্বাসেডর এট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মুখ্য সচিব আব্দুসসোবহান সিকদার, ইআরডি সচিব মোঃ মেছবাহউদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল ও ডেপুটি প্রেস সচিব বিজনলাল দেব উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জেএনপিসির সেক্রেটারি জেনারেল সুচি ইতাবুসূচনা বক্তব্য রাখেন।

    অপরদিকে আজ বুধবার সকালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের নতুন সরকারের সঙ্গেও বাংলাদেশের সুসম্পর্ক থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।জাপানের টোকিওতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।
    শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত তাদের নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতির ওপরভিত্তি করে চলে। পার্শবর্তী দুই দেশের সম্পর্ক সবসময় পারস্পরিক আলোচনারভিত্তিতে, বন্ধত্বপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের পাঁচটিসরকারের সঙ্গে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রেখেছে।সেক্ষেত্রে নতুন সরকারের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতে মতোই অটুটথাকবে।”

    সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষেদে জাপানের পক্ষে বাংলাদেশ সমর্থন দেবে কি না তা উভয় দেশের উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক করা হবে।”

    এদিকে,  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শীর্ষ বৈঠকে দুই বন্ধু প্রতিম দেশের সম্পর্ক ও যোগাযোগ সহযোগিতার পর্যায় থেকে অংশীদারিত্বে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সোমবার টোকিওতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই নেতার শীর্ষ বৈঠকের পর মঙ্গলবার ঢাকা ও টোকিও থেকে যৌথ ইশতেহার প্রকাশিত হয়।

    শেখ হাসিনা ও শিনজো আবে স্বাক্ষরিত এই ইশতেহারে বিশ্ব শান্তি ওস্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আঞ্চলিক সমৃদ্ধি অর্জনএবং সাংস্কৃতিক ও জনগণের মধ্যকার যোগাযোগ বৃদ্ধিতে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

    এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে অনায়াসে ব্যবসা করার জন্য জাপানি বিনিয়োগ কারীদের জন্য একটি কার্যকর টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণাদিয়েছেন। মঙ্গলবার জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো)’র সদরদফতরে আয়োজিত বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা বিষয়ক এক সেমিনারে ভাষণকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।

    ৪দিনের সফর শেষে বুধবার জাপান সময় রাত ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সুত্রঃ ইন্টারনেট।